দল বদলালেন কেন, বোঝাতে গেল সময়

দুই প্রাক্তন বিধায়ক আগের দল ছাড়লেন কেন, জনতাকে বোঝাতেই সময় গেল তাঁদের এখনকার দলের লোকেদের। এক জন কুমারগ্রামের দশরথ তিরকে, অন্য জন ময়নাগুড়ির অনন্তদেব অধিকারী। রাজ্যসভা ভোটে দু’জনেই তৃণমূল প্রার্থীকে ভোট দেন। দলবিরোধী কাজে বহিষ্কৃত হওয়ার আগেই বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন। যান তৃণমূল-শিবিরে। ওই দুই আসনে উপনির্বাচনের প্রচারে নেমে প্রাক্তন বিধায়কদের দল ছাড়ার নানা প্রশ্নের জবাব তৃণমূল নেতা-কর্মীদের।

Advertisement

অনির্বাণ রায় ও নিলয় দাস

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৪৬
Share:

দুই প্রাক্তন বিধায়ক আগের দল ছাড়লেন কেন, জনতাকে বোঝাতেই সময় গেল তাঁদের এখনকার দলের লোকেদের। এক জন কুমারগ্রামের দশরথ তিরকে, অন্য জন ময়নাগুড়ির অনন্তদেব অধিকারী। রাজ্যসভা ভোটে দু’জনেই তৃণমূল প্রার্থীকে ভোট দেন। দলবিরোধী কাজে বহিষ্কৃত হওয়ার আগেই বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন। যান তৃণমূল-শিবিরে। ওই দুই আসনে উপনির্বাচনের প্রচারে নেমে প্রাক্তন বিধায়কদের দল ছাড়ার নানা প্রশ্নের জবাব তৃণমূল নেতা-কর্মীদের।

Advertisement

প্রাক্তন বিধায়ক অনন্তদেববাবু এ বার ময়নাগুড়ি উপ-নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী। দশরথবাবু প্রার্থী আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে। তাঁর দলবদল এবং ইস্তফায় যে কুমারগ্রাম বিধানসসভায় উপ-নির্বাচন হচ্ছে, সেখানে তৃণমূলের প্রার্থী জোয়াকিম বাক্সলা, যিনি একদা ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে বিধানসভা উপ-নির্বাচনেও যেন দশরথবাবুকে লড়তে হচ্ছে। দল সূত্রের খবর, কুমারগ্রামে তৃণমূলের প্রার্থী না জিতলে দায় আসতে পারে তাঁর ঘাড়ে। সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোটে সাফল্যের পরেও ময়নাগুড়িতে ‘অঘটন’ ঘটলে প্রশ্ন উঠবে অনন্তদেববাবুর সাংগঠনিক দক্ষতা নিয়ে। এই মুহূর্তে তাঁরা যে রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণে, ঘনিষ্ঠ মহলে তা স্বীকার করেছেন দুই বিধায়কই।

অনন্তদেববাবু বলেছেন, “দলের কর্মী-নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করছি। উন্নয়নে দিদির দলে যোগ দিয়েছি। তাই আমরাই জিতব।” দশরথবাবুও বলেন, “অনেকে জানতে চাইছেন, কেন তৃণমূলে এলাম। দলে থেকে উন্নয়ন কাজ করতে পারছিলাম না।”

Advertisement

কুমারগ্রাম বিধানসভার ১৯টির মধ্যে ছ’টি পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে। চা বাগানেও দলীয় সংগঠন শক্তিশালী হয়েছে দাবি করে উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী জোয়াকিম বাক্সলার প্রত্যয়, “কোনও চিন্তা নেই।” উল্টো ব্যাখ্যাও অবশ্য আছে। প্রাক্তন বাম-বিধায়কের ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ তাঁর জেতার রাস্তা সহজ করবে বলে বিশ্বাস আরএসপি প্রার্থী মনোজকুমার ওরাওঁয়ের। তিনি বলেন, “গত বারের থেকে ব্যবধান কত বাড়ানো যায়, সেটাই ভাবছি।” তাঁর যুক্তি, “জোয়াকিম আগে এই আসনে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার ভোটে হেরেছেন। তা ছাড়া উনি এখানকার বাসিন্দাও নন।” কুমারগ্রামে কংগ্রেস প্রার্থী ক্লেমেন্ট ডুংডুং এবং বিজেপি প্রার্থী বিনোদ মিনজ আবার নিজ-নিজ যুক্তিতে আত্মবিশ্বাসী।

কুমারগ্রাম বিধানসভার ১২টি চা বাগানে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এবং আদিবাসী বিকাশ পরিষদের প্রভাবও রয়েছে। লোকসভা ভোটে মোর্চা সমর্থন করছে বিজেপিকে এবং পরিষদ তৃণমূলকে। তাই ভোট ভাগাভাগিতে, কার ঘরে কত ভোট ঢুকবে তা নিয়ে এখন চলছে আলোচনা।

তথ্য পরিসংখ্যান নিয়ে বিশ্লেষণ ময়নাগুড়িতেও। গত ভোটে অধিকাংশ পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে, পঞ্চায়েত সমিতিও দখল করেছে রাজ্যের শাসক দল। তবে এই বারের উপ নির্বাচনে কামতাপুর পিপলস পার্টির (কেপিপি) প্রার্থীকে সমর্থন করেছে বিজেপি। কেপিপি-বিজেপি জোটের দাবি, তারা ময়নাগুড়িতে ভোটের হিসেব ওলট পালট করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।

সহ প্রতিবেদন: রাজু সাহা, নারায়ণ দে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন