ফের সালিশির অভিযোগ উঠল কোচবিহারে।
গত ১৬ জুলাই কোচবিহারের সিতাইয়ে প্রতিবন্ধী এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে প্রতিবেশী দুলাল মণ্ডলের বিরুদ্ধে। সে এখনও অধরা। মঙ্গলবার মেয়েটির বাবাও জানান, বিষয়টি জানার পরেই তিনি গ্রামের সকলকে তা জানান। গ্রামে সালিশি সভা ডাকা হয়। দুলাল সেখানে দোষ স্বীকারও করেন। মেয়েটির বাবার দাবি, এলাকায় তিনিই একমাত্র ফরওয়ার্ড ব্লক সদস্য। অন্যরা তৃণমূল সদস্য হওয়ায় দুলালের বিরুদ্ধে তখন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে থানায় যান তিনি। এ দিন দলের জেলা পার্টি অফিসে ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ দাবি করেন, শাসকদলের নেতাদের চাপেই পুলিশ তাদের ধরছে না। দল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী তথা তৃণমূল নেতা গৌতম দাস মামলা না করার জন্য চাপ দিচ্ছেন। যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন গৌতমবাবু।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই দিন বিকেলে বছর চোদ্দোর ওই কিশোরী প্রতিদিনের মতো মাঠে গরু আনতে গিয়েছিল। সেখানে একা পেয়ে দুলাল তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। কাউকে বিষয়টি জানালে নাবালিকাকে খুনের হুমকিও দেয় সে। এই ভাবে পর পর চারদিন একই ভাবে ওই নাবালিকাকে দুলাল ধর্ষণ করে। নাবালিকার বাবার অভিযোগ, “এর পরে মেয়ে আর মাঠে যেতে চায়নি। ওকে জিজ্ঞাসা করলে সব জানতে পারি। গ্রামের বাসিন্দাদের সমস্ত কথা জানাই। সালিশি সভায় দুলাল দোষ স্বীকার করে। তা সত্ত্বেও তার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে থানায় জানাই।”
উদয়নবাবু বলেন, “রাজ্য জুড়ে মহিলাদের উপর আক্রমণের ঘটনা, ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে চলেছে। প্রত্যন্ত গ্রাম সিতাইয়েও একই ঘটনা ঘটছে। সব জায়গার মতো এখানেও শাসক দলের চাপ রয়েছে।” তাঁর দাবি, অভিযুক্ত প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না। যদিও সিতাই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের ব্লক নেতা জগদীশ বসুনিয়া বলেন, “উদয়নবাবুরা মিথ্যে অভিযোগ করেছেন। ওই ঘটনায় অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত দুই পক্ষই ফরওয়ার্ড ব্লকের লোক। আমরাই পুলিশকে বলেছি ওই ঘটনার উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে।”
কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”