ধরলা নদী দখল নিয়ে ময়নাগুড়ি ব্লক প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট দিল ভূমি ও রাজস্ব দফতর সোমবার একই সঙ্গে স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতিকেও ওই রিপোর্ট দেওয়া হয়। ময়নাগুড়ি ব্লক ভূমি ও রাজস্ব দফতরের আধিকারিক অমিত দাস বলেন, “সব দিক খতিয়ে দেখে নদীর কোথায় কতটা জমি দখল হয়েছে সেটা ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতিকে জানানো হয়েছে।” স্থানীয় বিডিও সংহিতা তলাপাত্র জানান, ভোট পর্ব মিটে গেলে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুভাষ বসু জানিয়েছেন, এক জায়গায় প্রচুর জমি পাকাপাকি ভাবে দখল করা হয়েছে। তিনিও ভোট মিটে গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।
কংক্রিটের খুঁটি পুঁতে ধরলা নদী এলাকা দখলের অবিযোগ নিয়ে হইচই চলছেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। অবশেষে দখল হয়ে যাওয়া নদী উদ্ধারে উদ্যোগী হয় পঞ্চায়েত সমিতি। গত ২৯ এপ্রিল ভূমি ও রাজস্ব দফতরের কর্তাদের নিয়ে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নদী এলাকা ঘুরে দেখেন ভূমি ও রাজস্ব দফতরের আধিকারিকরা। পুরনো মানচিত্র ঘেঁটে জানতে পারেন ধরলা নদীর গতিপথ পরিবর্তন ও কিছু এলাকা দখলে জটিল সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে যেমন কয়েক হাজার বিঘা জমিতে সেচের জলের আকাল দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে শহরের বিস্তীর্ণ এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা বিপন্ন হওয়ার মুখে।
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জানান, বার্নিশ পঞ্চায়েতের উল্লাডাবরি গ্রাম থেকে পদমতি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বালাসন পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে নদী এখন নালার চেহারা নিয়েছে। ফলে একদিকে মৎস্যজীবীরা বিপন্ন হয়ে পেশা পাল্টে নিতে বাধ্য হয়েছে। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমির ফসল সেচের জল না পেয়ে ধুঁকছে। তিনি বলেন, “ওই বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট পাঠিয়ে নদী খননের অনুমতি চাওয়া হবে। নির্বাচনের পরে প্রয়োজনে কিছু পঞ্চায়েতকে দিয়ে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে সেটা করা হবে।”
পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে খুশি স্থানীয় চাষিরা। তাঁরা জানান, নদী দখল হয়ে যাওয়ার অভিযোগ কয়েক বছর থেকে জানিয়ে লাভ হয়নি। কয়েক বছর আগে ব্যবস্থা নেওয়া হলে ১২টি নদী থেকে সেচের জল উত্তোলন প্রকল্প (আরএলআই) বিকল হয়ে থাকত না। এলাকার জমিও ফাঁকা পড়ে থাকত না। কৃষক সভার জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সদস্য নির্মল চৌধুরী বলেন, “অনেক দিন থেকে ধরলা দখলের প্রতিবাদ করছি। কেউ গুরুত্ব দেয়নি।” ময়নাগুড়ি পঞ্চায়েত প্রধান কমল দাস অভিযোগ করেন, “শহরের মূল নিকাশি নালার সঙ্গে ধরলা নদী যুক্ত ছিল। মাটি ফেলে ওই খাল বন্ধ করা হয়েছে। ভোট পর্ব চুকলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।”