আত্মীয় স্বজনে জমজমাট ছিল বিয়েবাড়ি। দুপুর দুপুর বরযাত্রীদের নিয়ে কনের বাড়িতে হাজির পাত্র। চারদিকে হইচই। খাওয়া-দাওয়া শেষ হলেই শুরু হবে বিয়ের অনুষ্ঠান। কিন্তু মাঝপথেই ছন্দপতন। বিয়েবাড়িতে পুলিশ নিয়ে হাজির হন প্রশাসনের কর্তারা। পুলিশ দেখে প্রথমে থমকে যান বিয়েবাড়ির লোক। তারপর পুলিশ আসার কারণ জানতে পেরে বিয়েবাড়ি থেকে নিমেষে হাওয়া খোদ পাত্র। মাঝপথে খাওয়া ছেড়ে যে যার মতো ছুটে পালালেন শখানেক বরযাত্রীও। শেষ অবধি বন্ধ হয়ে গেল নাবালিকা পাত্রীর বিয়ে।
সোমবার দুপুরে নবম শ্রেণির পড়ুয়া ফাতেমা খাতুনের বিয়ের আসর বসেছিল মালদহের চাঁচল রামকৃষ্ণপুরে। চাঁচল ২-এর জয়েন্ট বিডিও প্রসূন প্রামাণিকের কাছে নাবালিকার বিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে খবর পৌঁছয়। দেরি না করে পুলিশ নিয়ে বিয়েবাড়িতে হাজির হয়ে যান প্রশাসনের কর্তারা। আইন না জেনে মেয়ের বিয়ে দিচ্ছিলেন বলে পুলিশকে মুচলেকা দিয়ে ছাড় পান বালিকার বাবা আজিজুর রহমান। চাঁচলের আইসি তুলসীদাস ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, নাবালিকার বাবা বিষয়টি জানতেন না বলে মুচলেকা দেওয়ায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিয়ে না হওয়ায় পাত্রপক্ষের বিরুদ্ধেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আজিজুর রহমানের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। মুদিখানার দোকানদার আজিজুরের বড় মেয়ে ফাতেমা খাতুনের বিয়ে ঠিক হয়েছিল চাঁচলের হজরতপুর এলাকায়। ফাতেমা স্থানীয় গার্লস স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে। পাত্র সামাউল হক ব্যবসায়ী। তার সার ও কীটনাশকের দোকান আছে। এদিন দুপুরে বরযাত্রী নিয়ে বিয়ে করতে আসেন পাত্র। বিকালের মধ্যে বিয়ের অনুষ্ঠান সেরে রাতেই তাদের ফিরে যাওয়ার কথা। ঘটনার পর সামাউল জানান, মেয়েদের বিয়ের বয়স যে ১৮, তা নাকি তার জানা ছিল না। তাই এই বিপত্তি। পাত্রী সাবালিকা হওয়া পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করবেন বলে পাত্রীর বাড়ির লোককে জানিয়েছে সামাউল। চাঁচলের মহকুমা শাসক সঞ্জীব দে বলেন, “নাবালিকা বিয়ে রুখতে এমন অভিযান চলবে।”