দিনরাত কনকনে ঠান্ডা। সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। সাত সকালে সূর্য উঠতেই কুয়াশার ফাঁকে দেখা মিলছে কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়ার। দেশ বিদেশের পর্যটকদের অগুণতি মাথায় ভরে থাকছে ম্যাল চৌরাস্তা থেকে ক্লাব সাইড রোড। এরমধ্যে নতুন বছরের শুরুতেই শৈলশহর, দার্জিলিঙে শুরু হতে চলেছে ‘উইন্টার ট্যুরিজম ফেস্টিবল’।
আগামী ৪ জানুয়ারি থেকে উত্সব শুরু হবে। আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যটন অনুষ্ঠান চলবে। সাংস্কৃতিক উত্সব থেকে খানাপিনা সবই থাকছে উত্সবে। ম্যাল চৌরাস্তায় হবে মূল অনুষ্ঠানগুলি। উদ্যোক্তা গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)। সঙ্গে থাকছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও। এলাকার পর্যটনের উন্নয়নের জন্য এই উত্সব করা হচ্ছে বলে জিটিএ-র তরফে জানানো হয়েছে। উত্সবের মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর তোপদেন লামা বলেন, “দার্জিলিঙের মূল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ম্যাল চৌরাস্তার মঞ্চেই অনুষ্ঠানগুলি হবে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় আকর্ষণ হিসাবে নেপালের শিল্পীরাও থাকবেন। দিনের বেলায় স্থানীয় শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করবেন।”
তোপদেন লামা জানান, প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হবে। দুপুরে ২টা থেকে মিউজিক্যাল প্রোগ্রাম শুরু হবে। রাজ্য সরকারের তরফে উত্সবের জন্য আর্থিক সাহায্য করা হচ্ছে। একইভভাবে জিটিএ কর্তৃপক্ষের তরফেও আর্থিক অনুদান দেওয়া হচ্ছে। তবে টাকার অঙ্কটি নিয়ে এখনই কোনওপক্ষ মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এই নিয়ে দ্বিতীয়বার এই উত্সব হচ্ছে দার্জিলিঙে। এবার জানুয়ারিতে মাসে উত্সব হলেও গত বছর অক্টোবর মাসে উইন্টার ফেস্টিবল হয়েছিল। তবে সেবার ক্যালচারাল এবং ট্যুরিজম ফেস্টিবল নাম দিয়ে উত্সব হয়। ৮ অক্টোবর থেকে ৮ নভেম্বর অবধি অনুষ্ঠান চলে। পর্ষটক ভরা পুজোর মরশুমে দুপুর থেকে অনুষ্ঠানস্থল ভিড়ে উপচে পড়ত। তবে কার্শিয়াং, কালিম্পং এবং দার্জিলিং মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তেও এই উত্সব হয়েছিল। এবার তা হচ্ছে শুধু দার্জিলিঙে।
এদিনই জিটিএ-র তরফে দার্জিলিং মহকুমার জামুনিতে কৃষিমেলার ঘোষণা করা হয়েছে। ১৩ জানুয়ারি থেকে ২১ জানুয়ারি অবধি মেল চলবে। কার্শিয়াং মহকুমার যোগীঘাটে ১৪ জানুয়ারি থেকে তিনদিন এবং কালিম্পং মহকুমার রেলিতে ১৫ জানুয়ারি থেকে তিনদিন কৃষিমেলা হবে। জিটিএ-র তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের সদস্য বিনয় তামাঙ্গ জানান, ২০১১ সাল থেকে পাহাড়ের কৃষকদের জন্য করা হচ্ছে। মেলায় কৃষি উপকরণ, কৃষিপণ্য, সরঞ্জাম ছাড়াও বিভিন্ন ধরণের ঐতিহ্যবাহী ঘরের নমুনাও রাখা হবে। কৃষি নিয়ে সেমিনার হচ্ছে। সেখানে বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত থাকবে। মূলত মাছ, হর্টিকালচার এবং ফ্লোরিকালচার নিয়ে আলোচনা করা হবে। বিভিন্ন সরঞ্জম, চারাও বিলিও হবে। অনুষ্ঠানগুলি থেকে দুঃস্থ মানুষদের জন্য জিটিএ-র ‘হামরো ঘর’ প্রকল্প শুরু হবে। জিটিএ-র প্রতিটি সভাসদের এলাকার ২০ জন প্রাথমিকভাবে সুবিধা পাচ্ছেন।