সিঙ্ঘানিয়া

প্রাণনাশের হুমকিতে বন্ধ চা বাগান

প্রাণনাশের হুমকিতে সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিস দিয়ে বাগান ছাড়লেন বীরপাড়ার সিঙ্ঘানিয়া চা বাগান কর্তৃপক্ষ। রবিবার সন্ধের ওই ঘটনার পিছনে আরএসপি নেতৃত্বকে দায়ী করে ম্যানেজার রামপ্রমোদ ঠাকুর বলেন, “আরএসপি-র কিছু নেতার উস্কানিতে আমাকে ঘেরাও করে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। বাগানে থাকলে ওরা যে কোনও সময় আমায় মেরে ফেলতে পারত।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বীরপাড়া শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৫ ০১:৩৩
Share:

প্রাণনাশের হুমকিতে সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিস দিয়ে বাগান ছাড়লেন বীরপাড়ার সিঙ্ঘানিয়া চা বাগান কর্তৃপক্ষ। রবিবার সন্ধের ওই ঘটনার পিছনে আরএসপি নেতৃত্বকে দায়ী করে ম্যানেজার রামপ্রমোদ ঠাকুর বলেন, “আরএসপি-র কিছু নেতার উস্কানিতে আমাকে ঘেরাও করে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। বাগানে থাকলে ওরা যে কোনও সময় আমায় মেরে ফেলতে পারত।”

Advertisement

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত এক বছরে ডুয়ার্সের দু’টি চা বাগানের সহকারি ম্যানেজার এবং মালিককে শ্রমিকদের হাতে খুন হতে হয়েছে। এর পর থেকেই কর্তৃপক্ষের মধ্যে নিরাপত্তার অভাব দেখা দেয়। এর আগে রহিমাবাদ চা বাগানের মালিক ও ম্যানেজারকে বিভিন্ন দাবিতে হুমকি দেওয়ার পর বাগানটি প্রায় তিন মাস বন্ধ ছিল। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাগানটি সম্প্রতি চালু হয়। প্রায় তিন দশক আগে সিঙ্ঘানিয়া চা বাগানে শ্রমিকদের হাতে ম্যানেজার খুন হওয়ার ঘটনারও উদাহরণ রয়েছে। চা বাগান মালিক সংগঠন ইন্ডিয়ান টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের মুখ্য উপদেষ্টা অমিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, “যে ভাবে ম্যানেজারকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে তাতে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন কর্তৃপক্ষ।” এ দিন শ্রম দফতরের উত্তরবঙ্গের যুগ্ম শ্রম আধিকারিক মহম্মদ রিজওয়ান বলেন, “বাগান দ্রুত চালুর চেষ্টা হবে।” আলিপুরদুয়ারের মহকুমাশাসক সমীরণ মণ্ডল বলেন, “বাগান বন্ধের নোটিস পাইনি। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।”

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার কয়েক জন শ্রমিকের সঙ্গে ম্যানেজারের পানীয় জল নিয়ে বচসা হয়। ঘটনার পর কয়েক জন শ্রমিক সেচের জলের পাইপ ভেঙে ফেলেন বলে ম্যানেজারের অভিযোগ। বিষয়টি থানায় জানানোর পর পুলিশ ঘটনার তদন্তে আসে। পুলিশ ফিরে যাওয়ার পর আরএসপি-র নেতৃত্বে কয়েকশো শ্রমিক সন্ধে থেকে ম্যানেজারকে তাঁর অফিসে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বলে অভিযোগ। বাগানের ম্যানেজারের কথায়, “আমি থানায় অভিযোগ যাতে না করি, সে জন্য হুমকি দেন বাগানের আরএসপি নেতাদের একটি অংশ। পরবর্তীতে কিছু শ্রমিক আমায় মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আগে যে ভাবে কর্তৃপক্ষের লোকজনকে কুপিয়ে মারা হয়েছিল, তা ভেবে আতঙ্কে ছিলাম।”

Advertisement

তবে অভিযোগ মানতে নারাজ আরএসপি। দলের শ্রমিক নেতা গোপাল প্রধান বলেন, “বাগানের লোকজন পানীয় জল পাচ্ছেন না। অথচ বাগানের সেচের জন্য জল দিচ্ছে ম্যানেজার। এটা মানতে পারছিলেন না শ্রমিকরা। এ নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে ম্যানেজারের মনোমালিন্য হয়। আমাদের দলের কিছু লোক থাকলেও তাঁকে হত্যার কথা বলেনি।” গোপালবাবু জানান, বাগানের শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির পর কাজের চাপ বাড়াতে কর্তৃপক্ষ এইভাবে বাগান বন্ধ রেখে চাপ বাড়াতে চাইছে। এদিন রবিবার বাগানের ৬৭২ জন শ্রমিক ছুটি কাটাচ্ছিলেন। সন্ধ্যায় ম্যানেজার ও সহকারীরা বাগান ছাড়ায় বিপাকে পড়ে যান তাঁরা। যদিও ম্যানেজারের কথায়, “শ্রমিকদের একাংশ পাইপ ফুটো করে জল নিচ্ছেন।” শ্রমিকেরা অভিযোগ মানতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন