প্রজাতন্ত্র দিবসে ছিটমহলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।—নিজস্ব চিত্র।
প্রজাতন্ত্র দিবসে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলে ভারতের জাতীয় পতাকা উড়ল। সোমবার ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে ওই সব ছিটমহলে প্রজাতন্ত্র দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে দিনভর নানা অনুষ্ঠানের কর্মসূচি নেওয়া হয়। কমিটি সূত্রের খবর, মশালডাঙায় ১৯টি, সন্ন্যাসীরহাটের ৫টি, বাকালিরছড়ার ৩টি, মৃগীপুর, বাত্রিগছ ও করলায় ২টি, নলগ্রামের ৩টি ছিটমহলে কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠান হয়েছে। এ ছাড়াও পোয়াতেরকুঠি, শিবপ্রসাদমুস্তাফিতে বাকি ছিটমহলের বাসিন্দাদের নিয়ে কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠান হয়। ছিটমহল বিনিময় নিয়ে রাজ্য সরকারের সম্মতি ও সংসদে স্থল সীমান্ত চুক্তি বিল পেশ হওয়ায় দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে আশার আলো তৈরি হওয়ায় এ বার প্রজাতন্ত্র দিবস পালন ঘিরে বাড়তি উত্সাহ দেখান বাসিন্দারা। তার জেরেই জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনভর দিনটি উদ্যাপনের উদ্যোগী হন।
ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সহকারি সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “ভারত ভূখণ্ড ঘেরা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলের জনসংখ্যা ১৪,২১৫ জন। তাঁরা অনেক আগেই মনে প্রাণে ভারতীয় হয়ে গিয়েছেন। এবার ছিটমহল বিনিময়ের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় ঘটা করে ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস পালনের দাবি উঠেছিল। সব ক’টি ছিটে অনুষ্ঠান হয়েছে।”
ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, এ বারের প্রজাতন্ত্র দিবসকে স্মরণীয় করে রাখতে ৬টি ছিটমহলে বিশেষ কর্মসূচি নেওয়া হয়। তালিকায় রয়েছে পোয়াতেরকুঠিতে আবাসিক তথ্য কেন্দ্রের শিলান্যাস, করলায় বয়স্ক শিক্ষা শিবির, মশালডাঙায় ক্রীড়া প্রশিক্ষণ, বাকালিরছড়ায় আভ্যন্তরীণ সুরক্ষা সমন্বয় কমিটির প্রশিক্ষণ শিবির, শিবপ্রসাদ মুস্তাফিতে প্লাস্টিকবর্জিত স্বচ্ছ ছিট অভিযান ও বাত্রিগছে হস্তশিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এক যোগে ওই দিন সব ক’টি কর্মসূচির সূচনা করা হয়।
এ ছাড়াও ছিল ক্রীড়ানুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক উত্সব কমিটির কর্তারা জানান, আবাসিক তথ্য কেন্দ্রের নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্মারকি’। ছিটমহল সংক্রান্ত তথ্যাদি ছাড়াও নানা সামগ্রী সেখানে রাখা হবে। আগ্রহীরা রাত্রিবাসের সুযোগও পাবেন। খেলাধূলো, শিক্ষার প্রসারের পাশাপাশি ও প্লাস্টিক ব্যবহারের ক্ষতি নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে তিনটি ছিটমহলে কর্মসূচি নেওয়া হয়। বাসিন্দাদের আর্থিক স্বনির্ভরতার কথা ভেবে হস্তশিল্প প্রশিক্ষণ ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে আভ্যন্তরীণ সুরক্ষা সমন্বয় কমিটি তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সবগুলি কর্মসূচি বাস্তবায়নে এক বছরের সময়সীমার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।