প্রতিবাদী খুনে অভিযুক্ত অধরাই, এলাকায় বনধ পালন ব্যবসায়ীদের

‘প্রতিবাদী’ ব্যবসায়ীকে খুনের দু’দিন পরেও অভিযুক্তদের কাউকে পুলিশ ধরতে না-পারায় জলপাইগুড়ির মালকানি এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। তাঁদের একাংশের সন্দেহ, শাসক দলের চাপে পুলিশ ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েছে। তা ছাড়া, সোমবার সকাল থেকে কয়েক ঘণ্টা তৃণমূল স্থানীয় মানিকগঞ্জ ফাঁড়ি ঘিরে পুলিশের কাজকর্ম বন্ধ রাখতে বাধ্য করায় সেই সন্দেহ আরও জোরদার হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৪০
Share:

নিহত স্বপন সরকারের শোকার্ত পরিবার। ছবি: সন্দীপ পাল

‘প্রতিবাদী’ ব্যবসায়ীকে খুনের দু’দিন পরেও অভিযুক্তদের কাউকে পুলিশ ধরতে না-পারায় জলপাইগুড়ির মালকানি এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। তাঁদের একাংশের সন্দেহ, শাসক দলের চাপে পুলিশ ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েছে।

Advertisement

তা ছাড়া, সোমবার সকাল থেকে কয়েক ঘণ্টা তৃণমূল স্থানীয় মানিকগঞ্জ ফাঁড়ি ঘিরে পুলিশের কাজকর্ম বন্ধ রাখতে বাধ্য করায় সেই সন্দেহ আরও জোরদার হয়েছে। নিহত ব্যবসায়ী স্বপন সরকারের কয়েক জন পড়শির অভিযোগ, শুক্রবার রাতে খুনের ঘটনার পরে শনিবার অভিযোগ করতে গেলেও প্রথমে কোতোয়ালি থানা নিতে চায়নি। পরে বিজেপির এক জেলা নেতা পদস্থ পুলিশ কর্তাদের কাছে অভিযোগ জানানোর পরে রবিবার থানা অভিযোগ নিতে বাধ্য হয়। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে এ দিন মালকানিতে ব্যবসা বন্ধ পালন করেন ব্যবসায়ীরা।

নিহতের কিছু আত্মীয় বলেন, “তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা যে ভাবে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ফাঁড়ি ঘিরে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানালেন, সেই সুযোগে দোষীরা আরও দূরে সরে যাওয়ার সুযোগ পেল।” পরিস্থিতি দেখে ক্রমশ আতঙ্ক বাড়ছে সরকার পরিবারেও। স্বপনবাবুর স্ত্রী বাসন্তীদেবী বলেন, “পুলিশ এখনও ওদের ধরতে পারছে না। কত কিছু শুনতে পাচ্ছি। খুব ভয়ে আছি।” যদিও অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার জেমস কুজুর বলেন, “ভয়ের কিছু নেই। তাড়াতাড়ি অভিযুক্তরা ধরা পড়বে।” কিন্তু, পুলিশকে ফাঁড়ি থেকেই তৃণমূল বার হতে না দিলে তল্লাশি হবে কী করে, সেই প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।

Advertisement

শুক্রবার রাতে মালকানির হাটে মদ-জুয়ার আসরের প্রতিবাদ করতে গিয়ে খুন হন বিজেপির যুব মোর্চার সদস্য স্বপনবাবু। বিজেপির নেতা-কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, ওই এলাকার এক তৃণমূল কর্মীর সঙ্গে পুলিশের যোগাযোগের সুবাদে জাঁকিয়ে বসেছিল জুয়া-চক্র। ওই রাতে স্বপনবাবু জুয়ার বোর্ড উল্টে দিয়ে প্রতিবাদ করায় তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। এমনকী, জবরদস্তি তাঁর মুখে মদও ঢেলে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। স্বপনবাবুর মৃত্যুর পরে দুষ্কৃতীরা এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দেওয়ার ছক কষে। বিজেপির অভিযোগ, সে কারণেই শনিবার অভিযোগ নিতে পুলিশ টালবাহানা করে। বিজেপির আরও অভিযোগ, অস্বস্তি এড়াতেই তৃণমূল এ দিন থেকে পাল্টা আন্দোলন শুরু করেছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর দাবি, “ওরা তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত নয়।” বিজেপির জেলা সম্পাদক বাপি গোস্বামীর অভিযোগ, “শাসক দলের ছাতার তলায় না থেকে কেউ জুয়ার আসর চালাচ্ছে, এ কথা বিশ্বাসযোগ্য নয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন