প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান ঘিরে দ্বন্দ্ব তৃণমূলে

প্রতিষ্ঠা দিবসে এলাকায় কর্তৃত্ব কায়েম নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে ৫ পুলিশকর্মী-সহ ১১ জন জখম হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ মাথাভাঙার নয়ারহাটে এই ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠি চালায়। দু’পক্ষের ৮ তৃণমূলকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:০১
Share:

প্রতিষ্ঠা দিবসে এলাকায় কর্তৃত্ব কায়েম নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে ৫ পুলিশকর্মী-সহ ১১ জন জখম হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ মাথাভাঙার নয়ারহাটে এই ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠি চালায়। দু’পক্ষের ৮ তৃণমূলকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

Advertisement

গত অক্টোবরে ওই এলাকাতেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে তৃণমূলের এক কর্মীকে খুনের অভিযোগ ওঠে। এদিন তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী সেখানে কম্বল বিতরণের অনুষ্ঠান করে। কম্বল নিতে বেশ কিছু বৃদ্ধ-বৃদ্ধা হাজির হন। সেখানে গণ্ডগোলের জেরে চুড়ান্ত নাজেহাল হতে হয় তাঁদের। তৃণমূলের জেলা স্তরের নেতারা অবশ্য বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না। মাস দু’য়েক আগে মাথাভাঙার নয়ারহাটে তৃণমূলকর্মী খুন নিয়ে দুই গোষ্ঠীর বিরোধ চরমে ওঠে। তৃণমূলের বেশ কয়েকজন নেতার নামে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার পরে ওই ঘটনায় কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে।

কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে গণ্ডগোল চলছিল। পুলিশের উপরেও হামলা হয়। পুলিশের উপরে হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।

Advertisement

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই কোচবিহারে বিভিন্ন জায়গায় গোষ্ঠী সংঘর্ষ শুরু হয়। মাথাভাঙার প্রদীপ বর্মন নামে এক তৃণমূলকর্মী খুন হলে নেতা জেলা পরিষদের সদস্য নজরুল হকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। আর কয়েক দিন পর পুরসভা নির্বাচন। তার আগে গোষ্ঠী সংঘর্ষ মিটিয়ে নেওয়ার বার্তা নিয়ে ৬ জানুয়ারি কোচবিহারে কর্মিসভা করবেন তৃণমূলের নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং সুব্রত বক্সি। কোচবিহারে রাজবাড়ি সংলগ্ন ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সভা করবেন তাঁরা। তার আগে ওই গণ্ডগোলে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা নেতৃত্ব।

দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “ঠিক কী হয়েছে জানি না, খোঁজ নেব।” দলের আরেক নেতা প্রাক্তন মন্ত্রী বিধায়ক হিতেন বর্মন কিছু বলতে চাননি।

দলীয় সূত্রের খবর, মাথাভাঙায় নজরুল হক জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। আরেক নেতা মাথাভাঙা ১ নম্বর ব্লকের সভাপতি মজিরুল হোসেন বিধায়ক হিতেন বর্মনের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় কর্তৃত্ব কায়েম করা নিয়ে গণ্ডগোল চলছে। গত অক্টোবর মাসে দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে একজন খুন হয়। এদিন দুই পক্ষের তরফেই আলাদা আলাদা ভাবে প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের পর মিছিল করছিল মজিরুলের লোকজন। সেই সময় আচমকা নজরুলের লোকজন হামলা চালায় বলে অভিযোগ। মজিরুল বলেন, “শান্তিপূর্ণ ভাবে আমরা অনুষ্ঠান করছিলাম। বিরোধী গোষ্ঠীর লোকজন হামলা চালায়।” পুলিশ আগে থেকেই গণ্ডগোলের আঁচ করে সেখানে ছিল। পুলিশ দুই পক্ষকে তাড়া করলে পুলিশকে লক্ষ করে ঢিল ছোড়ে তৃণমূল সমর্থকদের একাংশ। তাতে ৫ জন পুলিশকর্মী জখম হন। নজরুল হক অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তিনি বলেন, “মিটিঙে আছি। পরে কথা বলব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন