প্রশাসনের উপর ক্ষিপ্ত জখম ছাত্রীর অভিভাবকেরা

সাত সকালে হাসি মুখে মেয়ে গীতাঞ্জলিকে পরীক্ষা দিতে যেতে দেখেছিলেন উছলপুকুরি গ্রামের ভবানন্দ রায়। বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন আগেই। ছোট মেয়েকে যে ভাবেই হোক অনেক দূর পড়ানোর ইচ্ছে তাঁর। সে জন্য জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক শুরুর দিনে বাড়তি একটা উদ্দীপনা ছিল গোটা বাড়িতেই।

Advertisement

রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:০৮
Share:

সাত সকালে হাসি মুখে মেয়ে গীতাঞ্জলিকে পরীক্ষা দিতে যেতে দেখেছিলেন উছলপুকুরি গ্রামের ভবানন্দ রায়। বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন আগেই। ছোট মেয়েকে যে ভাবেই হোক অনেক দূর পড়ানোর ইচ্ছে তাঁর। সে জন্য জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক শুরুর দিনে বাড়তি একটা উদ্দীপনা ছিল গোটা বাড়িতেই। পরীক্ষা শেষে মেয়ে কখন ফিরবে সে জন্য প্রহর গুনছিলেন সকলে। কিন্তু সব কিছু ওলটপালট হয়ে যায় রায় পরিবারের। কারণ, বাস উল্টে পা ভেঙে অঞ্জলি তখন হাসপাতালে।

Advertisement

জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালে মেয়ের বিছানার পাশে বসে কখনও মাথায় হাত দিচ্ছিলেন ভবানন্দবাবু। পর মুহূর্তে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছিলেন। তাঁর কথায়, “বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। এই মেয়েকে শিক্ষিত করে তোলার ইচ্ছে রয়েছে। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষাতেই অঘটন। বাকি পরীক্ষা কী ভাবে দেবে? বেশি সংখ্যায় বাস দিলে এমন ঘটনা ঘটত না।”

যারা আহত হয়েছে তারা সকলেই কৃষিজীবী পরিবারের সদস্য। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অঞ্জলি বর্মনেরও পা ভেঙেছে। খারিজা জামালদা গ্রামের বাসিন্দা তার বাবা পেশায় কৃষক ব্রজেন বর্মন বলেন, “এই অবস্থায় কেউ পরীক্ষা দিতে পারে? এখন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আগে থাকতে ব্যবস্থা নিলে এই ঘটনা ঘটত না।” অবশ্য জামালদহ তুলসি দেবী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুনীল চন্দ্র দাসও মনে করেন, জখমদের যা অবস্থা তারা কেউই পরীক্ষা দেওয়ার পরিস্থিতিতে নেই। তিনি বলেন, “ওরা সুস্থ হলে আলাদা ভাবে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে।”

Advertisement

কোচবিহারের জেলাশাসক পি উলগানাথন জলপাইগুড়ি হাসপাতালে যান। তিনি বলেন,“যারা পরীক্ষা দিতে পারবে, তাদের পরীক্ষা নেওয়া হবে। যারা দিতে পারবে না, তাদের জন্য পরে আলাদাভাবে পরীক্ষা নেওয়া হবে।” জলপাইগুড়ির জেলাশাসক পৃথা সরকার বলেন, “জলপাইগুড়ি হাসপাতালে পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করে দেখা হবে।” হাসপাতাল সূত্রের খবর, এদিন হাসপাতালে আনা হয় ২৩ জনকে। তাদের মধ্যে ৩ জনকে গুরুতর আহতকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রাত ৯টার সময় দুর্ঘটনাগ্রস্ত ছাত্রছাত্রীদের পরিবারের আরও ৩ জন সদস্যকে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে আনা হয়। ছাত্রছাত্রীদের জখম হওয়ার কথা শুনে অভিভাবকদের কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement