চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগী মৃ্ত্যুর অভিযোগ তুলে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখালেন রোগীর আত্মীয় পরিজনরা। কর্তব্যরত নার্সদের হেনস্থা করা হয় বলেও অভিযোগ। বৃহস্পতিবার ভোর রাত থেকে কয়েক দফায় বিক্ষোভের জেরে ব্যপক উত্তেজনা ছড়ায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কর্তব্যরত নার্সদের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতার পরিবারের সদস্যরা। এদিন দুপুরে হাসপাতালে যান রাজ্যের মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী ও জেলার পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকও করেন তাঁরা। রাজ্যের মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘তদন্তে গাফিলতি প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার সকালে পুকুরিয়া থানার মহারাজপুর গ্রামপঞ্চায়েতের রাজপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রসূতি রমেলা বিবিকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ওই দিনই সন্ধেবেলা অস্ত্রোপচার করা হয়। একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ওই মহিলা। জানা গিয়েছে, ওই মহিলার স্বামী আনসারুল হক নিজের জমিতে চাষবাস করেন। তাঁদের একটি দেড় বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে। অভিযোগ, রাত দেড়টা নাগাদ মহিলার ক্ষত স্থানে প্রচন্ড যন্ত্রণা শুরু হয়। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা কর্তব্যরত নার্সদের বিষয়টি জানান। কিন্তু অভিযোগ তাঁরা নিজেরাও আসেননি, ডাকেননি চিকিৎসকদেরও। এদিকে, ওই মহিলার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে শুরু করে। রাত দু’টো নাগাদ একজন চিকিৎসক এসে চিকিৎসা শুরু করার আগেই মৃত্যু হয় ওই মহিলার।
রমেলা বিবির মৃত্যুর পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হাসপাতাল চত্বর। শুরু হয় দফায় দফায় বিক্ষোভ। নার্সদের হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। মৃতার স্বামী আনসারুল হক বলেন, ‘‘রাতের দিকে আমার স্ত্রীর শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে গেলেও নার্সেরা কোন চিকিৎসা করেন নি। চিকিৎসকদেরও সময় মতো ডাকেন নি। যার ফলে বিনা চিকিৎসায় আমার স্ত্রীর মৃত্যু হল। আমরা ওই নার্সদের শাস্তি চাই।’’পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। তাঁদেরকে ছাড়ার দাবিতে ফের শুরু হয় বিক্ষোভ। হাসপাতালের ডেপুটি সুপার জ্যোতিষ চন্দ্র দাস বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’