পুলিশের তদন্তে ঢিলেমির অভিযোগ

চম্পাসারিতে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুন লেগে একই পরিবারের তিন জনের মৃত্যুর নয় দিন পরেও পুলিশের তদন্ত এগোয়নি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কয়েক দিন পরে যে সিলিন্ডার বাজেয়াপ্ত করেছে তা বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করানো হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৪ ০২:৫৬
Share:

চম্পাসারিতে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুন লেগে একই পরিবারের তিন জনের মৃত্যুর নয় দিন পরেও পুলিশের তদন্ত এগোয়নি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কয়েক দিন পরে যে সিলিন্ডার বাজেয়াপ্ত করেছে তা বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করানো হয়নি। জানা যায়, শিলিগুড়ির প্রধাননগরের একটি সংস্থা সিলিন্ডার সরবরাহ করেছিল। বিধি অনুযায়ী, সরবরাহ করার আগে সংস্থার কর্মীর সিলিন্ডার পরীক্ষা করে দেওয়ার কথা। ওই সিলিন্ডার সংস্থার কোন কর্মী সরবরাহ করেছিলেন, তিনি তা ‘লিক’ রয়েছে কি না সেটা পরীক্ষা করেছিলেন কি না সেই সব তথ্য পুলিশ সংগ্রহ করতে পারেনি। গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থার কর্ণধারের সঙ্গে পুলিশ কথাবার্তা বললেও কেন বিষয়টি নিয়ে উচ্চবাচ্য করা হচ্ছে না সেই প্রশ্ন তুলেছেন মৃতের আত্মীয়-স্বজনেরা। শুধু তা-ই নয়, তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই পুলিশের একাংশ যে ভাবে ‘গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থার দোষ নেই বলছেন’ তাতে অনেকেই বিস্মিত। পুলিশের এক পদস্থ অফিসার জানিয়েছেন, যাঁরা গ্যাস সিলিন্ডার নেন, সেই গ্রাহকদেরও তা পরীক্ষা করে নেওয়ার কথা। সব মিলিয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা সন্দেহ দানা বাঁধছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগ মোহন বলেন, “তদন্ত চলছে। গাফিলতির কথা ঠিক নয়। সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সকলের ভূমিকায় নজরে রাখা হয়েছে।”

Advertisement

২ মে চম্পাসারির ঢাকনিকাটায় যে সিলিন্ডার থেকে আগুন লাগে, তা প্রথমে পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেনি। জনমতের চাপে ক’দিন পরে পুলিশ তা বাজেয়াপ্ত করেছে। শনিবার পর্যন্ত সেই সিলিন্ডারের বিশেষজ্ঞ পরীক্ষা করা হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, সিলিন্ডার পরীক্ষার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মৃত উত্তম সাহার পরিবারের নিজস্ব কোনও গ্যাস সংযোগ না থাকলেও, তাঁদের পরিচিত এক ব্যক্তির থেকে নেওয়া সিলিন্ডার তাঁরা ব্যবহার করতেন বলে তদন্তে উঠে আসে। নর্মদা বাগানের বাসিন্দা সেই ব্যক্তির নামে গ্যাস সংযোগের নথিও সংগ্রহ করা হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। যদিও ওই ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে আন্দোলনে নামা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, এই পদক্ষেপগুলি সবই তদন্তের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। ওই ঘটনায় কারও গাফিলতি রয়েছে কিনা, থাকলে সে বিষয়ে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা পুলিশের তরফে জানা যায়নি বলে অভিযোগ।

পুলিশের তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করেছেন এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক গোপাল দেবনাথ। তিনি েই দিন বলেন, “তদন্তে এখনও কোনও অগ্রগতি হল না। ইতিমধ্যে এক সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে। যথাযথ ভাবে তদন্তের যাতে অগ্রগতি হয়, তার জন্য প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। প্রয়োজন হলে আমরা আদালতেরও দ্বারস্থ হব।”

Advertisement

শুক্রবার ওই গ্যাস সরবারহকারী সংস্থার গুদামের সামনে বিক্ষোভ দেখায় চম্পাসারি এলাকার বাসিন্দারা। আন্দোলনকারীদের কয়েক জন সেই সময়ে জানান, হয় পুলিশ জানিয়ে দিক ৩ জন নিজেদের দোষেই মারা গিয়েছেন। না হলে গ্যাস সিলিন্ডারে ত্রুটির কারণে মৃত্যু হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখে কড়া পদক্ষেপ করুক। প্রধাননগরের গ্যাস সরবারহকারী সংস্থার কর্ণধার বাপি দাস বলেন, “এ বিষয়ে যা জানানোর পুলিশকে সবই জানিয়েছি। আর কিছু বলার নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন