পুলিশ লক-আপে বচসা-হাতাহাতি দুই বন্দির

শীতের রাত। লক-আপ পরীক্ষা করে সব গিয়েছেন পুলিশকর্মীরা। হঠাত্‌ সেখান থেকে ভেসে এল তুমুল চেঁচামেচি। শিলিগুড়ি থানার পুলিশকর্মীরা গিয়ে দেখলেন, রীতিমতো মারামারিতে জড়িয়ে পড়েছে দুই বন্দি। ঘটনাচক্রে তারা গ্রেফতার হয়েছে একই অভিযোগে। তাঁদের সামলাতে ফেব্রুয়ারির শীতেও ঘাম ছুটে গেল লক-আপের রক্ষীদের।

Advertisement

সংগ্রাম সিংহ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:০৯
Share:

শীতের রাত। লক-আপ পরীক্ষা করে সব গিয়েছেন পুলিশকর্মীরা। হঠাত্‌ সেখান থেকে ভেসে এল তুমুল চেঁচামেচি। শিলিগুড়ি থানার পুলিশকর্মীরা গিয়ে দেখলেন, রীতিমতো মারামারিতে জড়িয়ে পড়েছে দুই বন্দি। ঘটনাচক্রে তারা গ্রেফতার হয়েছে একই অভিযোগে। তাঁদের সামলাতে ফেব্রুয়ারির শীতেও ঘাম ছুটে গেল লক-আপের রক্ষীদের।

Advertisement

শুক্রবার রাতের ওই ঘটনার পরে মুখে কুলুপ এঁটেছে পুলিশ। মন্তব্য করতে চাননি শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহনও। ফেসবুকে তরুণীর নামে ভুয়ো প্রোফাইল খুলে আপত্তিকর কাজকর্ম করার অভিযোগে গ্রেফতার হয় ওই দুই অভিযুক্ত ছাত্র শাহবাজ আমল ও মহম্মদ ওয়াকার আলি। লকআপে মারপিটের ঘটনাটি ঘটেছে ঘটনায় দ্বিতীয় অভিযুক্ত ওয়াকার আলির গ্রেফতারের পরে। ওয়াকারের দাবি, পুলিশের কাছে মিথ্যা জবানবন্দি দিয়ে তাকে ফাঁসিয়েছে এক সময়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু শাহবাজ। থানা সূত্রের খবর, মারামারিতে জড়িয়ে পড়ার পরে বারবার ওয়াকার বলছিল, “পুলিশকে কেন মিথ্যা বললি?” শাহবাজ কী প্রত্যুত্তর দিয়েছে, তা জানা যায়নি। তবে দু’জনকে বাধা দিতে থানায় থাকা প্রায় সমস্ত কর্মীই ছুটে আসেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২০১৪-র এপ্রিল থেকে ওই ছাত্রীর মোবাইলে ফোন করে কটূক্তি করত অজ্ঞাতপরিচয় লোকজন। কিছুদিন আগে তিনি জানতে পারেন, ফেসবুকে তাঁর একটি প্রোফাইল তৈরি করে তাঁর ফোন নম্বর দিয়ে ফোন করতে বলা হয়। অ্যাকাউন্টটি তৈরি হয়েছে এপ্রিল মাসে। ঘটনা জানার পরেই তিনি প্রধাননগর থানায় ১৭ জানুয়ারি সমস্ত অভিযোগ লিখিতভাবে জানান। এরপরে গত সপ্তাহে শহরের সূর্যসেন কলেজের সামনে তাঁকে একা পেয়ে তাকে মারধর করে অভিযুক্ত শাহবাজ বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়ির পুলিশ গিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। পরে গ্রেফতার হয় ওয়াকার।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে দু’জনকে আরও কয়েকজন অভিযুক্তের সঙ্গে লক আপে রাখা হয়েছিল। সেই সময়েই দু’জনে প্রথমে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়ে। জানা গিয়েছে, মূলত ওয়াকারের বাড়িতে যাতায়াতের সুবাদেই তার কম্পিউটার ব্যবহার করত শাহবাজ। ওয়াকারের দাবি, তার অসতর্কতার সুযোগে এমএমএস তৈরি করে থাকতে পারে শাহবাজ। সে সম্পূর্ণ নির্দোষ। এই নিয়ে বাদানুবাদ থেকে হাতাহাতিতে পরিণত হয়। তবে ঘটনা বেশিদূর গড়ানোর আগেই অবশ্য তাদের আটকে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি হননি কোনও অফিসারই। তবে এক পদস্থ পুলিশ কর্তা বলেন, “ওয়াকার পুলিশের সামনেও জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেনি এই ঘটনায় জড়িত হয়ে পড়ায় আগে থেকেই ক্ষোভে ফঁুসছিল সে।” তবে হাতাহাতির খবর হয়ে থাকতে পারে বলে এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। এই মামলাটির তদন্ত করছে গোয়েন্দা বিভাগ। এসিপি (ডিডি) তপন আলো মিত্র বলেন, “এ বিষয়ে আমি কিছু বলব না।” দুই ছাত্রের বাদানুবাদের ঘটনা শুনে তিনি জানান, “ওয়াকার এমএমএস বানিয়েছে কিনা তা আমি জানি না। তবে ওয়াকার বিভিন্ন সময়ে শাহবাজের পক্ষ নিয়ে আমাকে হুমকি দিয়েছে।” তবে ওয়াকারের কম্পিউটার থেকেই সমস্ত তথ্য পাওয়া যাবে বলে পুলিশের ধারণা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন