এখনই হবে না নিকাশি সংস্কার

পরিকল্পনা বাতিল উন্নয়ন দফতরের

শক্তিগড় এবং লাগোয়া এলাকার নিকাশির হাল ফেরাতে বছর দুয়েক আগে পরিকল্পনা নিয়েছিল উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। ১০ কোটি টাকা খরচে নিকাশি ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০১:৫৭
Share:

শক্তিগড় এবং লাগোয়া এলাকার নিকাশির হাল ফেরাতে বছর দুয়েক আগে পরিকল্পনা নিয়েছিল উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। ১০ কোটি টাকা খরচে নিকাশি ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। সেই কাজ তাঁরা করতে পারছেন না বলে জানিয়ে দিলেন। শিলিগুড়ি পুর কর্তৃপক্ষ সেই কাজ করার ইচ্ছে প্রকাশ করলেও আর্থিক বরাদ্দের সমস্যা না মেটায় তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই গিয়েছে। এ দিকে ফি বর্ষায় এলাকার অন্তত ১০ হাজার বাসিন্দাকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘ওই প্রকল্প করতে ১০ কোটি টাকা দরকার। এই মুহূর্তে আমাদের পক্ষে ওই টাকা খরচ করা সম্ভব নয়। তা ছাড়া ওই এলাকা পুরসভার মধ্যে পড়ে। পুর কর্তৃপক্ষের তরফেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’

Advertisement

ওই টাকা খরচ করে ওই এলাকার নিকাশির হাল ফেরানোর সামর্থ্য নেই একা পুরসভারও। তারা কেন্দ্রের প্রস্তাবিত ‘অম্রুত প্রকল্প’র অধীনে তা করাতে চান। কবে ওই প্রকল্প হবে, শিলিগুড়ি তার অন্তর্ভুক্ত হবে কি না তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী জানিয়েছেন, পুরসভা অম্রুত বা অন্য কোনও প্রকল্পে তা করাতে চাইলে তাদের আপত্তি নেই। মেয়র বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের তরফে পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তাঁরা করবেন কি না আমরা তাদের আরেক বার অনুরোধ করতে চাই। না হলে প্রস্তাবিত ‘অম্রুত প্রকল্প’-এর অধীনে তা করার ব্যবস্থা হবে।’’ স্মার্টসিটি প্রকল্প থেকে বাদ পরলেও রাজ্য এবং কেন্দ্রীর সরকারের তরফে শিলিগুড়িকে এই প্রকল্পের অধীনে আনা উচিত বলে তিনি মনে করেন।

উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের তরফে উদ্যোগী হলেও তা কেন করা হচ্ছে? মন্ত্রী বলেন, ‘‘পুরসভাকেও দায়িত্ব নিতে হবে। সব কিছু উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর করে দেবে এমন তো সম্ভব নয়।’’ ২০০৯ সালের কংগ্রেস-তৃণমূল জোট করে লড়লে পুর নির্বাচনে ৩১ নম্বর ওয়ার্ড-এ জয়ী হয় তৃণমূল প্রার্থী। কিন্তু দলের একাংশ তাঁকে কাজ করতে দিচ্ছেন না, নানা ভাবে হেনস্থার চেষ্টা করছে অভিযোগ তুলে ওই কাউন্সিলর ইস্তফা দিলে ওয়ার্ডে উপনির্বাচন হয়। সে সময়ই ওই ওয়ার্ডকে মডেল ওয়ার্ড করার কথা ঘোষণা করে তৃণমূল। তবে উপনির্বাচনে জয়ী হয় সিপিএম প্রার্থী। এ বার পুর নির্বাচনে ফের ওই প্রার্থীই ওয়ার্ড থেকে জিতেছেন। সে কারণেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর ওই কাজে আগ্রহ হারিয়েছে কি না সেই প্রশ্ন উঠেছে। তবে ওই এলাকা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর বিধানসভা ক্ষেত্রের মধ্যেই পড়ে। সে ক্ষেত্রে বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া দরকার বলে তৃণমূলের একাংশ মনে করছে।

Advertisement

পুরসভা এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, মডেল ওয়ার্ড ঘোষণা করার পরেই নিকাশির হাল ফেরাতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের তরফে ইঞ্জিনিয়রদের পাঠিয়ে পরিকল্পনা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল বছর দু’য়েক আগেই। অথচ সেই কাজ হয়নি। শিলিগুড়ির ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের শক্তিগর এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা যে তিমিরে ছিল সেখানেই রয়ে গিয়েছে। নিকাশি ঠিক না থাকায় ফি বর্ষায় ওই ওয়ার্ড এবং লাগোয়া ২৫, ৩২, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দিন কয়েক আগে, এলাকার নিকাশির সমস্যা মেটাতে কী করতে হবে পুরসভার তরফে বাস্তুকারদের পাঠিয়ে সমস্যা সমাধানের বিষয়টি খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান মেয়র।

একটু বেশি বৃষ্টি হলেই শক্তিগড়, অশোকনগর, নিউ মিলনপল্লি, মিলনপল্লি এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় জল জমে যায়। লাগোয়া এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে জল ঢুকে বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তা নিয়ে ক্ষোভের কথাও জানিয়েছেন বাসিন্দারাও। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতেও অনেক জায়গায় জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। নিকাশি নালাগুলি একাংশ কংক্রিটের ঢাকনা দিয়ে আটকে দেওয়ায় সমস্যা বেড়েছে বলে মনে করছেন পুরসভার বাস্তুকারেরা। সে কারণে জল বার হওয়ার সুষ্ঠু ব্যবস্থা করতে নিকাশির উপর কংক্রিটের ঢাকনাগুলি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন