ফের ভাঙল কেপিপি, বিবাদ অতুল-নিখিলে

ফের ভাঙনের মুখে কামতাপুর পিপলস পার্টি (কেপিপি)। রবিবার ময়নাগুড়িতে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ২৪ জন সদস্য বৈঠক করে দল বিরোধী কাজের জন্য সভাপতি অতুল রায়কে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। অন্য দিকে, অতুলবাবুর পাল্টা দাবি, শিলিগুড়ির লাগোয়া শিবমন্দিরে দলের বৈঠক হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৪ ০২:৫৪
Share:

ফের ভাঙনের মুখে কামতাপুর পিপলস পার্টি (কেপিপি)। রবিবার ময়নাগুড়িতে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ২৪ জন সদস্য বৈঠক করে দল বিরোধী কাজের জন্য সভাপতি অতুল রায়কে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। অন্য দিকে, অতুলবাবুর পাল্টা দাবি, শিলিগুড়ির লাগোয়া শিবমন্দিরে দলের বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে দল বিরোধী কাজের জন্য সম্পাদক নিখিল রায়কে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত লোকসভা ভোটের সময় বিজেপিকে সমর্থনের প্রশ্নেই এ বার দলে ভাঙন ধরতে চলেছে।

Advertisement

১৯৯৬ সালে দল তৈরির পরে ২০০৪ সালে কেপিপিতে প্রথম ভাঙন ধরে। দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা অতুল রায় অনুগামীদের নিয়ে কামতাপুর প্রোগ্রেসিভ পার্টি নামে নতুন দল গঠন করেন। গত বছর ৯ অগস্ট কেপিপির দুই শীর্ষ নেতা অতুল রায় এবং নিখিল রায় ফের হাত মেলান। অতুলবাবু অনুগামীদের নিয়ে পিপলস পার্টিতে ফিরে আসেন। সংযোজিত দলের বৈঠকে অতুলবাবু সভাপতি এবং নিখিলবাবু সম্পাদক নির্বাচিত হন।

কিন্তু গত লোকসভা ভোটের সময় থেকেই দলে গোষ্ঠী বিভাজন ফের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে বলে জানা যায়। অতুলবাবুরা বিজেপি-র প্রার্থীকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করে দিলেও, নিখিলবাবুর অনুগামীরা শাসক দল তৃণমূলের দিকেই ঝুঁকে ছিলেন। কেন্দ্রে এনডিএ সরকার গঠন হওয়ার পরে, কেপিপিকেও শরিক হিসেবে অর্ন্তভুক্ত করা হয় বলে জানানো হয়। এই ঘটনাকেও নিখিল-গোষ্ঠী মেনে নিতে পারেননি বলে জানা গিয়েছে। দলের অন্দরে প্রকাশ্যেই তারা ক্ষোভও উগরে দেন। রবিবার ময়নাগুড়ির মাধবডাঙায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক ডাকেন নিখিলবাবু। সে বৈঠকে অবশ্য অতুলবাবু বা তাঁর অনুগামীরা উপস্থিত ছিলেন না। বৈঠকে উপদলীয় ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অতুল রায়কে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দল সূত্রে জানানো হয়েছে। এ দিন কেপিপি-র নয়া সভাপতি হিসেবে সুভাষ বর্মনের নাম ঘোষণা করা হয়।

Advertisement

সম্পাদক নিখিলবাবু এ দিন বলেন, “অতুলবাবু দলের মধ্যে উপদলীয় চক্রান্তে লিপ্ত ছিলেন। গত লোকসভা নির্বাচনে দলকে পুরোপুরি অন্ধকারে রেখে বিজেপির সঙ্গে তিনি আঁতাত করেছেন। কামতাপুরি ভাষা ও রাজ্যের দাবি সরিয়ে রেখে তিনি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। ওই কারণে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে।” যদিও অতুলবাবু ওই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি শিলিগুড়ির বৈঠকের পরে এই দিন পাল্টা জানিয়েছেন, “নিখিলবাবুরাই দল বিরোধী কাজ করছেন। ওই কারণে আজকে তাঁদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যখন দেশ জুড়ে মোদী হাওয়া চলছিল তখন ওঁরা তৃণমূলের সঙ্গে যেতে চেয়েছিল। আমি দলের সভাপতি। তাই আমাকে বহিষ্কার করার এক্তিয়ার ওদের নেই।”

কামতাপুর পিপলস পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে ৩৫ জন সদস্য রয়েছেন। এ দিন ময়নাগুড়ির সভায় ২৪ জন উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি করা হয়। এ দিন দলের বৈঠকে কামতাপুরি ভাষার স্বীকৃতি ও পৃথক কামতাপুর রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনের একগুচ্ছ কর্মসূচি নেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীকে ওই দাবিতে চিঠি পাঠানো হবে বলে স্থির হয়েছে। তৃণমূল প্রসঙ্গে অবশ্য নিখিলবাবু কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, “ভাষা ও রাজ্যের স্বীকৃতিই আমাদের একমাত্র দাবি। সেই দাবিতেই আন্দোলন চলবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন