রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় মালদহে আসলেও রতুয়ায় ফুলহারের উপরে সেতু তৈরির কাজের শিলান্যাস না হওয়ায় হতাশ রতুয়া-সহ চাঁচল মহকুমার বাসিন্দারা। শুক্রবার মালদহে গনিখান চৌধুরীর নামাঙ্কিত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের উদ্বোধনে এসে একই সঙ্গে ওই সেতুর শিলান্যাস করবেন বলে এলাকায় প্রচার করেছিলেন রতুয়ার বিধায়ক। কিন্তু বছর ঘুরলেও সেতু-সহ জাতীয় সড়ক তৈরির কাজ শুরু দূরের কথা, শিলান্যাসও না হওয়ায় একই সঙ্গে ক্ষুব্ধ ও হতাশ ফুলহার সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা।
দেশের অর্থমন্ত্রী থাকার সময় রতুয়ার নাককাট্টি ঘাটে ফুলহারে সেতু সহ ১৩১-এ জাতীয় সড়কের জন্য ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সেতু ও সড়ক তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দের ওই খবর পৌঁছতেই উৎসবে মেতে উঠেছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। কিন্তু বছর ঘুরলেও সেতু বা জাতীয় সড়ক তৈরির কাজ শুরু হয়নি।
বাসিন্দাদের দাবি, রাষ্ট্রপতির এ দিন মালদহে আসার দিনক্ষণ চূড়ান্ত হওয়ার পর রতুয়ার কংগ্রেস বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় এলাকার বাসিন্দাদের পাশাপাশি দলীয় কর্মীদের কাছে ফুলহারে সেতুর শিলান্যাস হবে বলে প্রচার করেছিলেন। শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রপতি আগে ফুলহারে সেতুর শিলান্যাস সেরে তারপর মালদহের নারায়ণপুরে যাবেন বলেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু রাষ্ট্রপতি মালদহ থেকেই অনুষ্ঠান শেষ করে ফিরে যান। রতুয়ার বিধায়ক এ দিন অবশ্য বলেন, “শিলান্যাস হবে কী ভাবে? ওখানে রাস্তার জন্য এখনও জমি অধিগ্রহণের কাজ হয়নি। তাই শিলান্যাস হল না।”
এ দিন সমরবাবু বলেন, “২০০৯ সালে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়কে প্রথম আবেদন জানিয়েছিলাম। আমি এলাকার মানুষ। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে এলাকার মানুষের কথা ভেবে ওই সেতু তৈরির জন্য দরবার চালিয়ে গিয়েছি। আশা করছি, সব সমস্যা মিটে যাবে।” এ দিন জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র রায় বলেন, “রাষ্ট্রপতি সেতুর শিলান্যাস করবেন বলে বিধায়ক আমাকেও বলেছিলেন। খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু হল কই।”
প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, ফুলহারে সেতু-সহ সেতুর এ পারে মালদহের মাদিয়াঘাট থেকে ওপারে কাটাহা দিয়ারা এলাকা দিয়ে কাটিহার পর্যন্ত সড়কটি জাতীয় সড়ক হবে। সেতু হলে শুধু ফুলহারের ওপারে মহানন্দটোলা বা বিলাইমারি পঞ্চায়েত এলাকার ৫০ হাজার বাসিন্দারাই নন। উপকৃত হবেন লাগোয়া বিহারের আমদাবাদ, রসনা, পরাণপুর, মণিহারি এলাকার বাসিন্দারাও। একবছর আগে সেতু ও রাস্তা তৈরির কথা জানতে পেরে রতুয়ার সঙ্গে উৎসবে মেতে উঠেছিলেন বিহারের বাসিন্দারাও।
রতুয়া-১ ব্লকের বিডিও নীলাঞ্জন তরফদার বলেন, “ওই সেতু, রাস্তা হলে ফুলহারের ওপারের বাসিন্দাদের জীবনধারাটাই পাল্টে যাবে। দুই রাজ্যের মধ্যে যোগাযোগকারী একটা বিকল্প রাস্তাও বাড়তি পাওনা হবে।”