ফাঁড়ি ঘুরে গেলেন অভিযুক্ত নেতা

অভিযুক্ত থানায় এসে ঘুরে গেলেও পুলিশ তাঁকে গ্রেফতারের উদ্যোগ নিল না বলে অভিযোগ। রামগঞ্জ ফাঁড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনায় পুলিশের স্বতঃপ্রণোদিত এফআইআর-এ নাম থাকা তৃণমূল নেতা ইদ্রিশ আলম শনিবার দুপুর নাগাদ ইসলামপুর থানার রামগঞ্জ ফাঁড়িতে আসেন। প্রায় মিনিট দশেক তিনি ফাঁড়িতে ছিলেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে রামগঞ্জ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব ইন্সপেক্টর রেজাউল করিম অবশ্য কিছু জানাতে চাননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইসলামপুর শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৩২
Share:

অভিযুক্ত থানায় এসে ঘুরে গেলেও পুলিশ তাঁকে গ্রেফতারের উদ্যোগ নিল না বলে অভিযোগ। রামগঞ্জ ফাঁড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনায় পুলিশের স্বতঃপ্রণোদিত এফআইআর-এ নাম থাকা তৃণমূল নেতা ইদ্রিশ আলম শনিবার দুপুর নাগাদ ইসলামপুর থানার রামগঞ্জ ফাঁড়িতে আসেন। প্রায় মিনিট দশেক তিনি ফাঁড়িতে ছিলেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে রামগঞ্জ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব ইন্সপেক্টর রেজাউল করিম অবশ্য কিছু জানাতে চাননি। ইসলামপুরের এসডিপিও বৈভব তেওয়ারি বলেন, “এ ধরণের কোন বিষয় জানা নেই। রামগঞ্জ ফাঁড়ির ঘটনায় অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। অনেককে জিজ্ঞসাবাদের জন্য আনা হয়েছিল। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। এফআইআর নাম থাকার বিষয়টি ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষ বিষয়।” তদন্ত করেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে ইসলামপুরের এসডিপিও জানিয়েছেন।

Advertisement

তবে ফাঁড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনায় পুলিশের স্বতঃপ্রণোদিত এফআইআর-এ যাঁর নাম রয়েছে, সেই তৃণমূল নেতা ইদ্রিশ আলম থানায় গেলেও কেন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিপিএম ও কংগ্রেস। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ পুলিশ কর্মীদের একাংশও। এদিন দুপুরে ইসলামপুর থানার রামগঞ্জ ফাঁড়িতে গিয়েছিলেন, রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম। পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে কথাও বলেন। এমনকী, হামলার বিষয়টিও বিস্তারিত জানতে চান ওই থানায় কর্মরত ইসলামপুর থানার রামগঞ্জ ফাঁড়ির সাব ইন্সপেক্টরের কাছে।

এদিন রায়গঞ্জের সিপিএম সাংসদ বলেন, “রামগঞ্জ এলাকাতে বেশ কিছু দিন ধরেই গুন্ডা রাজ চলছে। ওই ঘটনা তারই প্রতিফলন। পুলিশ এলাকাতে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। আগে সিপিএমএর কর্মী ও সাধারণ মানুষেরা আক্রান্ত হতো। এখন পুলিশ প্রশাসনের উপর হামলার ঘটনা ঘটছে। থানায় এসে নথিপত্র পোড়ানো হল। তার নেতৃত্ব যিনি দিলেন তাকে পুলিশ ধরে থানা থেকে ছেড়ে দিলেন। এখন উনি ফাঁড়িতে ঘুরছেন। হচ্ছেটা কী?”.

Advertisement

ইসলামপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেস নেতা কানাইয়ালাল অগ্রবালের অভিযোগ, “আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। না হলে এফআইআর এ নাম থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কেন তাকে গ্রেফতার না করে ছেড়ে দিল। আর এখন ফাঁড়িতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি।”

বুধবার রাতে ইসলামপুর থানার রামগঞ্জ এলাকাতে লটারির দোকানে জুয়া খেলার অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। অভিযোগ দোকান মালিকদের পক্ষ নিয়ে ইদ্রিশ আলমের নেতৃত্বে এক দল লোক রামগঞ্জ ফাঁড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আসবাবপত্রে আগুন লাগিয়ে দেয় । খবর পেয়ে বিশাল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাঠিচার্জ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। সেই ঘটনায় পুলিশকে ধাক্কাধাক্কিও করারও অভিযোগ উঠেছে এলাকার তৃণমূল কর্মী সমর্থকের বিরুদ্ধে। রামগঞ্জ ফাঁড়ি পোড়ানোর ঘটনায় তৃণমূলের ইসলামপুর ব্লকের সাধারণ সম্পাদক সহ ১১ জনকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। কিন্তু পরদিন সকালেই ছেড়ে দেওয়া হয় তৃণমূলের ব্লক সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিশ আলমকে।

শনিবারও ইদ্রিশ আলম ফের দাবি করেন, এই ঘটনায় তিনি জড়িত নন। তাঁর কথায়,“ পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখেই আমাকে ছেড়েছে.। পরে এমনিই ফাঁড়িতে গিয়েছিলাম।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন