বিএসএন পরিষেবা ব্যাহত থাকায় ভোগান্তি হল দুই দিনাজপুরের লক্ষাধিক গ্রাহকের।
গত সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার দুপুরে অবধি দুই দিনাজপুরের বিএসএনএল পরিষেবা বিপর্যস্ত ছিল। দক্ষিণ দিনাজপুরের সাধারণ গ্রাহকেরা নন, সমস্ত সরকারি দফতর, ব্যাঙ্ক, হাসপাতাল, থানায় কাজকর্মে সমস্যা দেখা দেয়। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে রেলের টিকিং বুকিং ব্যবস্থা। প্রায় ৩০ ঘন্টা মোবাইল, ল্যান্ডলাইন এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকায় বিএসএনএলের কাজকর্ম নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা। বাদ যাননি প্রশাসনিক কর্তারাও। উত্তর দিনাজপুরে অবশ্য শুধুমাত্র ইন্টারনেট পরিষেবায় গোলযোগ দেখা দেয়।
দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, “টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহাল অবস্থার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তাদের জানানো হয়েছে। বিএসএনএল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েও কাজ হচ্ছে না।” আর উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক স্মিতা পান্ডে বলেন, “জেলায় মাঝেমধ্যেই বিএসএনএলের সমস্ত পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। একাধিকবার বিএসএনএলের কর্তাদের জানিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করলেও পরিষেবা স্বাভাবিক হচ্ছে না।”
বিএসএনএলের দুই দিনাজপুরের ভারপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার সোমনাথ ঘোষ জানান, দক্ষিণ দিনাজপুরের একটি অংশে বিদ্যুতের খুঁটি বসানোর জন্য মাটি খোঁড়ার সময়ে মাটির নিচে থাকা বিএসএনএলের একটি কেবল কেটে যাওয়ায় উত্তর দিনাজপুরের একাংশের ইন্টারনেট পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দক্ষিণ দিনাজপুরেও পরিষেবায় সমস্যা দেখা যায়। সাধ্যমত চেষ্টা করে তা সারানো হয়েছে। রাস্তা খোঁড়াখুড়ির আগে আগাম জানানোর জন্য প্রশাসনকে বলা হয়েছে।
বালুরঘাটের বাসিন্দারা জানান, চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি সকাল ১১টা থেকে পরদিন বিকেল ৩টা পর্যন্ত টানা প্রায় ২৮ ঘন্টা ধরে জেলার টেলি পরিষেবা স্তব্ধ ছিল। মাঝে মোটামুটি চললেও সোমবার থেকে ফের ৩০ ঘন্টার ভোগান্তি হল। থানা, হাসপাতাল, ব্লক অফিস, ব্যাঙ্ক, এটিএম, ডাকঘর থেকে আর্থিক লেনদেন ও রেলের টিকিট বুকিং সহ সমস্ত প্রশাসনিক পরিষেবা ও কাজকর্ম বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় জেলার সাধারণ মানুষ চরম ক্ষতিগ্রস্ত হন।
একই অবস্থা ছিল উত্তর দিনাজপুরেরও। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকার কারণে রায়গঞ্জের পাঁচটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কে লিঙ্ক ছিল না। ফলে পুজোর মুখে দুই দিন বহু গ্রাহক বিভিন্ন ব্যাঙ্কে টাকা জমা ও তোলা সহ বিভিন্ন লেনদেন সংক্রান্ত কাজ করতে গিয়ে ব্যাপক সমস্যায় পড়েন। লিঙ্ক না থাকায় একাধিক এটিএমও বিকল হয়ে যায়। ইন্টারনেট পরিষেবা না থাকায় একাধিক সরকারি দফতরে প্রশাসনিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়। এ ছাড়া রেল টিকিং বুকিং ব্যবস্থাও মুখ থুবড়ে পড়ে।