গাড়ি আটকে হুমকি দিয়ে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের ‘যুব ধিক্কার র্যালিতে’ যোগ দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কলেজ সংসদ নির্বাচনে সন্ত্রাসের প্রতিবাদে শুক্রবার ময়নাগুড়ি দেবীনগর পাড়ার বেসিক স্কুল ময়দানে ওই র্যালির আয়োজন করেছিল ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা। সংগঠনের নেতৃত্বের অভিযোগ, বিভিন্ন জায়গায় র্যালিতে যোগ দিতে আসা কর্মীদের গাড়ি আটকায় তৃণমূলের সমর্থকরা। হুমকি দিয়ে তাঁদের বাড়িতে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করে। পরিস্থিতির জেরে বেলা ১২টায় সভা শুরু করার কথা থাকলেও তা শুরু হতে বেলা গড়ায়। যদিও তৃণমূলের পক্ষ থেকে যুব মোর্চার ওই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
যুব মোর্চার দাবি, কলেজ সংসদ নির্বাচন ঘিরে ময়নাগুড়িতেই সবথেকে বেশিবার আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের কর্মী সমর্থকরা। মোর্চা এবং বিদ্যার্থী পরিষদের চারজন কর্মী মারাত্মক ভাবে জখম হন। সংগঠনের জলপাইগুড়ি জেলার সভাপতি জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, “হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার বেলা ১২টায় ময়নাগুড়িতে যুব ধিক্কার র্যালির আয়োজন করা হয়েছিল। এই র্যালি ভেস্তে দিতে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই সন্ত্রাস শুরু করে তৃণমূল। শুক্রবার সকালে বিভিন্ন গ্রামে ১১টি গাড়ি আটকে দেওয়া হয়। অনেক কর্মীকে হুমকি দিয়ে বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়।” তৃণমূলের ময়নাগুড়ি ব্লক সভাপতি মনোজ রায় অবশ্য যুব মোর্চার অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, “ওঁদের সভার গাড়ি কেন আমরা আটকাতে যাব। সাংগঠনিক শক্তি না থাকলে এসব কথা বলবেই।”
এদিনের যুব ধিক্কার র্যালিতে যোগ দেন যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি অমিতাভ রায়, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সৌরভ সিকদার। ঘোষিত সময়ে ময়দানে যথেষ্ট সংখ্যক কর্মী সমর্থক নেই খবর পেয়ে প্রদেশ নেতৃত্ব বিজেপি ব্লক কার্যালয়ে অপেক্ষা করেন। বেলা দেড়টা নাগাদ কয়েকটি ট্রাক পৌঁছায়। ইতিমধ্যে সাপটিবাড়ি, আমগুড়ি, ধর্মপুর এলাকার নেতা কর্মীরা বিজেপির ব্লক সভাপতি অনুপ পালকে মোবাইল ফোনে জানান, তাঁদের গাড়ি তৃণমূলের কর্মীরা আটকে রেখেছে। খবর পেয়ে অনুপবাবু মাঝ রাস্তায় আটকে থাকা যুব কর্মীদের গাড়ি থেকে নেমে অন্য কোনও উপায়ে সভায় যোগ দিতে অনুরোধ করেন। মিছিল শেষে বিকেল তিনটা নাগাদ সভা শুরু হলে বিচ্ছিন্ন ভাবে যুব কর্মীরা ময়দানে পৌঁছতে শুরু করেন।
যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি বলেন, “কলেজ ক্যাম্পাস গুণ্ডাগিরির আখড়া হয়েছে। সিপিএমের কায়দায় বহিরাগতদের এনে মারধর চলছে। প্রতিবাদে সভা করতে গেলে সেখানেও গাড়ি আটকে বাধা দেওয়া হচ্ছে।” সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সৌরভ সিকদার বলেন, “ছাত্র যুবরা বিদ্রোহের পথে পা বাড়ানোয় শাসক দল চিন্তিত। গুণ্ডা বাহিনী লেলিয়ে লাঠি দিয়ে বিদ্রোহ দমনের চেষ্টা করছে। তৃণমূল সরকারের পতনের কাউন্ট ডাউন শুরু হয়েছে। যুব মোর্চা নেতৃত্বের দাবি, বহিরাগতদের ঢুকিয়ে তৃণমূল, ছাত্রদের উপরে তাণ্ডব না চালালে রাজ্যের বেশিরভাগ কলেজ সংসদ নির্বাচনে মেখলিগঞ্জ কলেজের মতো ফলাফল হত।