উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ দুধ প্যাকেটজাত করার সংস্থা হিমুলের অচলাবস্থা চলছেই। সংস্থা সূত্রে খবর, শনিবার বিহার থেকে নতুন করে ১৫ হাজার লিটার দুধ আনা হলেও দুধ দূষণমুক্ত করার যন্ত্রটি খারাপ থাকায় তা এখনও সরবরাহের ব্যবস্থা করা যায়নি। তবে হিমুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের আশা, ১-২ দিনের মধ্যে ওই দুধ প্যাকেটজাত করা যাবে। নতুন করে আরও এক ট্যাঙ্কার দুধ আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও তা দিয়ে দিন চারেক দুইবেলা বা দিন ছয়েক একবেলা দুধ সরবরাহ হবে বলে ওই আধিকারিকেরা জানিয়েছেন। হিমুলের কর্মীদের বেতন কবে হবে তা নিয়ে অনিশ্চিয়তা এখনও কাটেনি। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, রবিবার রাজ্যের প্রাণী সম্পদ বিকাশ মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ হিমুলের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা নিয়ে এক দফায় আধিকারিকদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন। কাল, মঙ্গলবার কলকাতায় তাঁর হিমুল নিয়ে বৈঠক করার কথা রয়েছে। তবে লোকসভা ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে যাওয়ায় এদিন মন্ত্রী স্বপনবাবু শুধু বলেন, “বিষয়টি দেখা হচ্ছে। আধিকারিকেরা যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবেন।” কার্যত একই কথা বলেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবও। অবস্থার কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে বলেও সরকারি সূত্রের খবর। সরকারি সূত্রের খবর, আপাতত কোনও বরাদ্দ ঘোষণা করে কর্মীদের বেতন-সহ চলতি মাসে হিমূলের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা যায় কী না তা দেখা হচ্ছে। পাহাড়, সমতল এবং বিহারের দুধের প্রায় ২ কোটি টাকা বকেয়া থাকায় তাঁরাও পুরো টাকা না পেলে কতদিন দুধ দেবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। শনিবার যে দুধ আনা হয়েছে, তা হিমূলের গোখাদ্য তৈরির কারখানার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা নিয়ে আনা হয়েছে। হিমূলের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক পেম্বা শিরিং শেরপা বলেছেন, “আমরা চেষ্টা করছি। তবে কর্মীদের বেতন দেওয়ার মত হাতে টাকা নেই। বরাদ্দ না পেলে কী করব!” এই অবস্থায় বামেরা রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের মাধ্যমে বিষয়গুলি মুখ্যমন্ত্রীকে জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “আগামী ১২ মার্চ সূর্যকান্তবাবু শিলিগুড়ি আসছেন। ওঁকে সব জানানো হবে। সেই সঙ্গে হিমূলের পুনরুজ্জীবন নিয়ে তিনি যাতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন তার অনুরোধ করা হবে। আমরা সভা, সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছি।” তবে রাজ্য সরকারের হিমূলকে চাঙ্গা করার সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অশোকবাবু।