বেধড়ক মারে রক্তবমি, হাসপাতালে ভর্তি প্রৌঢ়া

ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ প্রত্যাহার করতে না চাওয়ায় মঙ্গলবার সকালে এক প্রৌঢ়াকে বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে কয়েক জন তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুরের কলসি গ্রামের বাসিন্দা সেই প্রৌঢ়া বুধবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। শুরু হয় রক্তবমি। তাঁকে হরিরামপুর গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৫ ০২:৪০
Share:

ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ প্রত্যাহার করতে না চাওয়ায় মঙ্গলবার সকালে এক প্রৌঢ়াকে বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে কয়েক জন তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুরের কলসি গ্রামের বাসিন্দা সেই প্রৌঢ়া বুধবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। শুরু হয় রক্তবমি। তাঁকে হরিরামপুর গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

Advertisement

ওই প্রৌঢ়ার মেয়ে এ দিন ২১ জনের বিরুদ্ধে তাঁর মা-কে বিবস্ত্র করে মারধর ও নিগ্রহের অভিযোগ করেছেন পুলিশের কাছে। অভিযুক্তেরা সকলেই তৃণমূলের হরিরামপুর ব্লক সভাপতি তাজমুল হকের আত্মীয় স্বজন বলে দাবি। মঙ্গলবার ওই প্রৌঢ়া তাজমুল ও তাঁর ঘনিষ্ঠ দুই নেতার বিরুদ্ধেই তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ করেছিলেন তাদের মধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাজমুল তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের ঘনিষ্ঠ অনুগামী বলে পরিচিত। অভিযোগ, বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা সোনা পালের প্ররোচনাতেই তিনি ওই অভিযোগ করেছেন বলে মুচলেকা লিখে দেওয়ার দাবিতে মারধর করা হয় প্রৌঢ়াকে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, মহিলা মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত পেয়েছেন। হরিরামপুরের হাসপাতালে মাথার সিটি স্ক্যানের ব্যবস্থা না থাকায় তাঁকে মালদহে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

প্রশ্ন উঠছে, তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হয়েও দলের জেলা সভাপতি তথা আইন পরিষদীয় সচিব বিপ্লববাবু কী করে অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়ে সওয়াল করছেন? বিপ্লববাবুর জবাব, “এ ক্ষেত্রে একেবারেই মিথ্যা একটি অভিযোগ তোলা হয়েছে তৃণমূলের এক ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে। তাই পাশে দাঁড়িয়েছি।” বিপ্লববাবুর ব্যাখ্যা, ওই প্রৌঢ়া মিথ্যা অভিযোগ করায় তাঁর পাড়ারই মহিলারা ও লোকজন তা মেনে নিতে পারেননি। তিনি বলেন, “তাই গ্রামের বাসিন্দারাই মহিলাকে ধরে ধাক্কাধাক্কি করেন, চুল ধরেও টানেন। সে সময় শাড়ি ছিঁড়ে যেতে পারে। কিন্তু তাঁকে বিবস্ত্র করা হয়নি।”

Advertisement

এ দিনই সোনাবাবুর ছোট ভাইকে একটি পুরনো মামলায় পুলিশ গ্রেফতার করেছে। হরিরামপুরের ব্লক তৃণমূল কমিটির নেতা বিভুবাবুকে তাঁর দাদা সোনাবাবুর সঙ্গেই দলবিরোধী কাজের অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার করেছিলেন বিপ্লববাবু। সোনাবাবুর দাবি, “তাজমুলদের বিরুদ্ধে মহিলা নিগ্রহের অভিযোগ উঠতেই পুলিশ সক্রিয় হয়ে উঠে বিভুকে গ্রেফতার করল। এটা প্রতিহিংসা।” সোনাবাবুর অভিযোগ, “বিপ্লববাবু ক্ষমতার রাশ নিজের হাতে রাখতে এতটাই মরিয়া যে, যাঁদের তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না তাঁদের বহিষ্কার করেন। আর যাঁরা তাঁর অনুগত, তাঁরা ভুল করলেও তাঁদের পাশে দাঁড়ান।” বিপ্লববাবুর প্রতিক্রিয়া, “আদালতের নির্দেশেই এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। প্রতিহিংসার প্রশ্ন উঠছে কেন? আমি সর্বদা সত্যের সঙ্গে থাকি।”

ওই প্রৌঢ়ার মেয়ের অভিযোগ, “পুলিশ মূল অভিযুক্তদের আড়াল করতে মাকে দিয়ে নিজেদের মতো করে চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করিয়েছে। মায়ের উপর অত্যাচারে আরও অনেকে জড়িত ছিল।” জেলার পুলিশ সুপার শীশরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “ধৃতদের বিরুদ্ধে মহিলার শ্লীলতাহানি, হামলা, মারধর, বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের আড়াল করার অভিযোগ ঠিক নয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন