বানারহাটে কলেজে স্থানীয়দের কাজ দেওয়ার দাবি তৃণমূলের

হিন্দি কলেজ উদ্বোধন করার চার দিনের মাথায় অস্থায়ী পদে স্থানীয় কর্মপ্রার্থীদের নিয়োগের দাবি তুলে সরব হয়েছে তৃণমূলের একটি অংশ। তৃণমূলের বিন্নাগুড়ি অঞ্চল কমিটির নাম করে কলেজের সামনে এই ধরনের ব্যানার টাঙানোর ঘটনা নিয়ে কার্যত অস্বস্তিতে পড়েছেন জেলা নেতৃত্ব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বানারহাট শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৫ ০২:৩০
Share:

বানারহাট কলেজে তৃণমূলের পোস্টার

হিন্দি কলেজ উদ্বোধন করার চার দিনের মাথায় অস্থায়ী পদে স্থানীয় কর্মপ্রার্থীদের নিয়োগের দাবি তুলে সরব হয়েছে তৃণমূলের একটি অংশ।

Advertisement

তৃণমূলের বিন্নাগুড়ি অঞ্চল কমিটির নাম করে কলেজের সামনে এই ধরনের ব্যানার টাঙানোর ঘটনা নিয়ে কার্যত অস্বস্তিতে পড়েছেন জেলা নেতৃত্ব। কে বা কারা এই ধরনের কাজ করল তা খুঁজে বের করতে পুলিশের সাহায্য নেবার পথে যাচ্ছেন স্থানীয় নেতৃত্ব।

বিষয়টি জানার পর অস্বস্তিতে পড়ে যান জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দলের কোনও লোক এই ধরনের কাজ করলে দল প্রশ্রয় দেবে না। যারা এই কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদের খুঁজে বের করে আমরা দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।’’

Advertisement

বিষয়টি জানার পর বানারহাটের নেতাদের কাছে বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর নিতে শুরু করেন সৌরভবাবু।

উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের কথায়, ‘‘আমার দফতর থেকে কলেজ ভবন তৈরি করা হয়েছে। এখন সেটি উচ্চ শিক্ষা দফতরের আওতায়। নিয়োগের বিষয়টি তাদের হাতে দেখবেন। কাজ পেলে স্থানীয়া পাবে সে তো আগে বলে দেওয়া হয়েছে সেখানে। এ ধরনের পোস্টার বা ব্যানার টাঙানোর কোন মানে হয় না।’’

দুই বছর ধরে বীরপাড়াতে সরকারি পরিত্যক্ত ঘরে ক্লাস চলার পর বানারহাট হিন্দি কলেজের উদ্বোধন হয় গত শনিবার। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব কলেজের উদ্বোধন করলেও বীরপাড়া থেকে বানারহাটে কলেজ স্থানান্তরিত হতে আরও মাস খানেক সময় প্রয়োজন বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। বীরপাড়াতে কয়েকজন অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। নতুন ভবন চালু হবার পর তাঁরা ফের এই কলেজে কাজ পেলে মেনে নেওয়া হবে না বলে স্থানীয় নেতাদের কয়েক দিন ধরে হুমকি দিয়ে আসছেন কর্মীরা। তৃণমূলের বিন্নাগুড়ি অঞ্চল সভাপতি স্বপন রায়ের কথায়, ‘‘প্রতিনিয়ত কর্মীরা এসে আমাদের ঘিরে ধরছে। বীরপাড়ার কর্মীরা এখানে যাতে যোগ দিতে না পারে এমনকি, অস্থায়ী কর্মী হিসাবে যাতে ওই স্থানে স্থানীয়দের নেওয়া হয় তা নিয়ে নিয়মিত হুমকি দিচ্ছে অনেকে। বিষয়টি নিয়ে ব্লক নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরাও নিয়োগের বিষয়টি বলতে পারছেন না।’’

তবে বিন্নাগুড়ি অঞ্চল কমিটির নামে হলেও ব্যানার কারা ঝুলিয়েছে সে বিষয়টি তিনি কিছু জানেন না বলে স্বপনবাবু বলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ভবিষ্যতে নিয়োগ নিয়ে ঝামেলা করতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়ে এই ব্যানার টাঙিয়েছে। ব্লক নেতৃত্বের নির্দেশে কারা এই ঘটনার পেছনে রয়েছে, তাদের খুঁজে বের করতে পুলিশের সাহায্য নিচ্ছি। দ্রুত ব্যানার খোলার ব্যবস্থা করা হবে।’’

বানারহাট ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি রাজু গুরুঙ্গ বলেছেন, ‘‘দলের নামে এই ধরনের ব্যানার কারা টাঙালো তাদের খুঁজে বের করা হবে। আমাদের দলের কেউ এই ঘটনা ঘটাতে পারে না।’’

আদিবাসী বিকাশ পরিষদের রাজ্য কমিটির সহ সভাপতি তেজ কুমার টোপ্পো বলেছেন, ‘‘স্থানীয় লোকজন বলে নয়, এলাকার বিভিন্ন বাগানের আদিবাসী যুবক যুবতীদের কর্মী হিসাবে নিয়োগ করা না হলে আমরা বড় ধরনের আন্দোলনে নামব।’’

বানারহাটের এক তৃণমূল কর্মীর কথায়, ‘‘কিছু নেতা নিজেদের ঘনিষ্ঠদের চাকরি পাইয়ে দেবার ছক কষছে। এর আগে ফালাকাটার বিধায়ক নিজের ছেলে এবং অপর এক নেতার ভাগ্নে কে ঘুর পথে সেখানকার নতুন কলেজে চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন। এই কলেজে যদি তা ঘটনা হবে বলে আমরা আঁচ পেয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন