একই দিনে দু’টি পৃথক এলাকা থেকে নিখোঁজ তিন ব্যবসায়ীর হদিস করতে নেমে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। গত রবিবার ওই তিন জন নিখোঁজ হয়েছেন। একজন হলেন শিলিগুড়ির নকশালবাড়ির ওষুধ ব্যবসায়ী সঞ্জীব প্রসাদ ওরফে সঞ্জয়। বৃহস্পতিবার নকশালবাড়ি থানায় অভিযোগ করেছেন তাঁর বাবা রামাশিস প্রসাদ। সঞ্জয়বাবু বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের নকশালবাড়ি জোনাল কমিটির সম্পাদকও।
ওই দিনই শিলিগুড়ি থেকে ফেরার পথে নিখোঁজ হয়েছেন আরও দু’জন ব্যবসায়ী। একজনের নাম সুনীল বিন্দল। আরেকজনের নাম বজরঙ্গ অগ্রবাল। দু’জনেই এলাচের ব্যবসা করেন। দু’জনেরই শিলিগুড়িতে ফ্ল্যাট রয়েছে। তবে ব্যবসার সূত্রে নেপালে নিয়মিত যাতায়াত করেন। সেখানেও বাড়ি রয়েছে সুনীলের। দু’জনে গত রবিবার নেপালের ইটভাটা এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। নেপালে তো বটেই, শিলিগুড়ি থানাতেও ওই দুই ব্যবসায়ীর বাড়ির লোকজন অভিযোগ জানিয়েছেন। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, নেপাল পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
দার্জিলিং জেলা পুলিশও উদ্বিগ্ন। রামাশিসবাবু দার্জিলিং জেলা পুলিশের অধীন এলাকায় নিখোঁজ হয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁর বাবা রামাশিস প্রসাদ দাবি করেছেন, রবিবার ওষুধ ব্যবসায়ীদের ওই সংগঠনের পিকনিকের জন্য সঞ্জয়বাবু শিলিগুড়িতে যাবেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তার পর থেকে তিনি বাড়ি ফেরেননি। দার্জিলিং জেলা পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, “নকশালবাড়ির ওষুধ ব্যবসায়ী নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শিলিগুড়িতে তাঁদের পরিবারের তরফে যে অভিযোগ জানানো হয়েছে সে ব্যাপারে জানা নেই।”
সঞ্জয়বাবুর পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে, সোমবার বেলা ১০ টা ২০ মিনিট নাগাদ অচেনা একটি নম্বর থেকে ফোন আসে। বাড়িতে জানিয়েছিলেন, তিনি ঘন্টাখানেকের মধ্যেই ফিরবেন। কিন্তু ফেরেননি। এ দিন বিকেলেও ওই নম্বর থেকে অপরিচিত একজন জানান সঞ্জয়বাবু কিছুক্ষণের মধ্যেই বাড়ি ফিরবেন। ওই ফোন নম্বরটিও পুলিশকে জানানো হয়েছে। বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজয় গুপ্ত জানান, ১ ফেব্রুয়ারি তারা সরিয়া পার্কে পিকনিক করেছিলেন। সেখানে বেলা সওয়া দুটো নাগাদ তাঁর সঙ্গে সঞ্জয়বাবুর দেখা হয়। তিনি সঞ্জয়বাবুকে খাওয়াদাওয়া করে যেতে বলেন। এর পর আর তাঁর সঙ্গে দেখা হয়নি। বিজয়বাবু বলেন, “এর দু’দিন পর শুনি উনি বাড়ি ফেরেননি। এ দিন বিকেলে সঞ্জয়বাবুর স্ত্রী ফোন করে জানান তিনি বাড়ি ফিরছেন বলে ফোনে একজন জানিয়েছে। পরে যে ফেরেনি এ ব্যাপারে কিছুই বুঝতে পারছি না।” শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট সূত্রের খবর, কয়েকদিন শিলিগুড়িতে থাকার পর রবিবারই নেপালে ফিরেছিলেন সুনীলবাবু। নিজের গাড়ি নিয়ে সকালে বিরতা মোড়ে কাজকর্ম সেরে কাঁকড়ভিটা পৌঁছন বিকেল চারটা নাগাদ। সেখানে গাড়ি চালককে অপেক্ষা করতে বলে বজরঙ্গ নামে এক ব্যবসায়ীর মোটরবাইকে করে কোথাও যান। সুনীলবাবুর ভাই ইন্দ্রচাঁদবাবু বলেন, “সারা রাত গাড়ি নিয়ে চালক সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিল। ভোরে আমরা খবর পেয়ে কাঁকড়ভিটা থানায় অভিযোগ করি। কী ঘটেছে কিছুই বুঝতে পারছি না।” বজরঙ্গবাবুর মোটরবাইকটি ইটভাটা এলাকা থেকে পাওয়া গিয়েছে।