ব্যবসায়ীর বাড়িতে চড়াও, গুলি

রাত পৌনে একটা। মোটরবাইকে চড়ে দুই যুবক হাজির একটি দোতলা বাড়ির সামনে। বাইক আরোহী এক জন কলিং বেল টেপার পর বেরিয়ে এলেন গৃহকর্ত্রী। তাঁকে তারা জিজ্ঞেস করল, গৃহকর্তা ও তাঁর বড় ছেলে বাড়িতে আছেন কি না। বিপদ আঁচ করে মাঝবয়সী ওই মহিলা মিথ্যে জানালেন, কেউই বাড়িতে নেই। তা শুনে আর কথা না বাড়িয়ে ওই দু’জন মোটরবাইকে উঠে পড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালি শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৪ ০০:৫৯
Share:

রাত পৌনে একটা। মোটরবাইকে চড়ে দুই যুবক হাজির একটি দোতলা বাড়ির সামনে। বাইক আরোহী এক জন কলিং বেল টেপার পর বেরিয়ে এলেন গৃহকর্ত্রী। তাঁকে তারা জিজ্ঞেস করল, গৃহকর্তা ও তাঁর বড় ছেলে বাড়িতে আছেন কি না। বিপদ আঁচ করে মাঝবয়সী ওই মহিলা মিথ্যে জানালেন, কেউই বাড়িতে নেই। তা শুনে আর কথা না বাড়িয়ে ওই দু’জন মোটরবাইকে উঠে পড়ে। কিন্তু যাওয়ার সময়ে পর পর দু’টি গুলি চালায় ওই দোতলা বাড়ি লক্ষ্য করে।

Advertisement

শব্দ শুনে ওই বাড়ি তো বটেই, আশপাশের বাড়ি থেকেও লোকজন বেরিয়ে পড়েন। দুই হামলাবাজ অবশ্য ততক্ষণে পালিয়েছে। শুক্রবার রাতে বালির সাঁপুইপাড়া-বসুকাটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পশ্চিম শান্তিনগরে ওই ঘটনার পর স্থানীয়েরা যেমন আতঙ্কিত, তেমনই উদ্বিগ্ন পুলিশ। দু’পক্ষেরই বক্তব্য, আরও বড় ঘটনা ঘটতে পারত। দুষ্কৃতীরা ওই যাঁদের খোঁজ করছিল, বাইরে এলে তাঁরা বিপদে পড়তে পারতেন। আবার দুষ্কৃতীরা বাড়িতে ঢুকেও পড়তে পারত। গৃহকর্ত্রীকে গুলি করলেও কিছু করার ছিল না।

পুলিশের সন্দেহ, দুষ্কৃতীরা ভয় দেখাতেই আসে। পুলিশের অনুমান, ওই ঘটনায় স্থানীয় এক দাগি তোলাবাজের হাত রয়েছে। কারণ, দুষ্কৃতীরা চলে যাওয়ার সময়ে সেই ‘বুকুনি’-র নামই করে। পুলিশের বক্তব্য, বাড়ির মালিক, ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসায়ী নাড়ুগোপাল ঘোষের কাছে চাহিদা মতো তোলা না পেয়ে তাঁকে ভয় দেখাতেই গুলি চালানো হয়। একটি গুলিতে বারান্দার আলো ভাঙে, অন্যটি লাগে বাড়ির পাঁচিলে।

Advertisement

ব্যবসায়ীর বড় ছেলে মনোজ ঘোষ শনিবার জানান, গত বছর মে মাসে তাঁর বাবার মোবাইলে আসা একটি ফোনে বুকুনির নাম করে ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হয়। থানায় অভিযোগ জানালে পুলিশ দেখে, বুকুনি তখন জেলে। একটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাড়ে তিন বছর জেল খেটে কিছু দিন আগে সে বেরিয়েছে। পুলিশ জানায়, দিন চারেক আগে তাকে নিশ্চিন্দা থানা এলাকায় দেখা যায়। এই ঘটনার পরে বুকুনির খোঁজে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। এক পুলিশকর্তা বলেন, “জেল থেকে বেরিয়ে বুকুনি হাওড়া ছেড়ে হুগলিতে নতুন ডেরা তৈরি করেছে।”

তবে বুকুনির কাছে ওই ব্যবসায়ী যে বিপদ আঁচ করেছিলেন, সেই ইঙ্গিত তাঁর বক্তব্যে মিলেছে। কারণ, নাড়ুগোপালবাবু জানান, রাতে কলিং বেলের শব্দে ভয় পেয়েই নিজে না বেরিয়ে স্ত্রীকে দরজা খুলতে বলি। ব্যবসায়ী ও তাঁর বড় ছেলে বাড়িতে নেই শুনে বাইকে উঠে পড়ে তারা ওই মহিলার উদ্দেশে বলে, “নাড়ুকে বলে দিও, বুকুনি এসেছিল।” মহিলা দরজা বন্ধ করতেই পর পর গুলি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন