নতুন জেলা ঘোষণার চার মাস পরেও উন্নয়ন খাতে বিধায়ক তহবিলের টাকা খরচ করতে পারছেন না বিধায়করা। অভিযোগ, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার দু’টি পৃথক জেলা ঘোষণা হওয়ার পরে আলিপুরদুয়ারের পাঁচটি বিধানসভা এলাকার উন্নয়ন নিয়ে নতুন কোনও পরিকল্পনা জমা নিতে চাইছেন না জলপাইগুড়ির আধিকারিকেরা। অন্য দিকে, আলিপুরদুয়ারে সেই পরিকাঠামো তৈরি না হওয়ায় নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। জেলার বিধায়কদের দাবি, এই কারণেই থমকে রয়েছে উন্নয়নমূলক কাজ। কংগ্রেস বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায় জানিয়েছেন, সমস্যার সমাধানে রাজ্যের পরিকল্পনামন্ত্রীর দারস্থ হবেন তিনি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। জেলাশাসক অ্যালিয়াস ভেজ বলেন, “আলিপুরদুয়ারের জেলা পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিষয়ক দায়িত্ব এক আধিকারিককে দেওয়া হয়েছে। বিধায়কদের পরিকল্পনা জমা পড়লে তা নিয়ে কাজ করা হবে।”
দেবপ্রসাদবাবুর অভিযোগ, প্রায় চার মাস হতে চলল, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার পৃথক দু’টি জেলা হয়েছে। প্রতি আর্থিক বছরে বিধায়কেরা এলাকার উন্নয়নের জন্য ৬০ লক্ষ টাকা করে পান। তা দিয়ে রাস্তা, মুক্তমঞ্চ, কালর্ভাট-সহ নানা উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়। আলিপুরদুয়ার নতুন জেলা হওয়ার পরেও প্রায় চার মাস ধরে আমরা কোনও পরিকল্পনা জমা দিতে পারিনি। আগে আলিপুরদুয়ার মহকুমার বিধায়ক তহবিলের বিষয়টি দেখত জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। কিন্তু গত চার মাস ধরে জলপাইগুড়ি জেলার পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের আধিকারিকরা নতুন জেলার পরিকল্পনা জমা নিতে চাইছেন না। আলিপুরদুয়ার প্রশাসনের আধিকারিকদেরই সেই কাজ দেখতে হবে বলে জানিয়েছে জলপাইগুড়ির আধিকারিকেরা।
দেবপ্রসাদবাবু জানান, নতুন জেলা হওয়ায় সম্প্রতি এক আধিকারিককে জেলার পরিকল্পনা ও উন্নয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁর কাছে খোঁজ নিলেও বিষয়টি নিয়ে তিনি কিছুই জানাতে পারেননি। পাশাপাশি, ২০১৩-২০১৪ সালে আর্থিক বছরে উন্নয়ন তহবিলের একটি অংশ এখনও আসেনি। ২০১৪-২০১৫ সালের বরাদ্দও আসেনি। ফলে উন্নয়ন নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে শীঘ্র রাজ্যের পরিকল্পনা দফতরের মন্ত্রী রচপাল সিংহের সঙ্গে দেখা করে বিভ্রান্তি দূর করার কথা বলব। বিষয়টি মানতে চাননি জলপাইগুড়ির জেলা পরিকল্পনা ও উন্নয়ন আধিকারিক পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “২০১৪-২০১৫ আর্থিক বছরের টাকা ঢুকে গিয়েছে। আলিপুরদুয়ার পৃথক জেলা হওয়ার পর আলিপুরদুয়ার জেলা থেকেই কাজ হবে। তবে নতুন পরিকাঠামো হওয়ায় জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন প্রাথমিক ভাবে সাহায্য করবে।” মুখ খুলতে চাননি দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা পরিকল্পনা ও উন্নয়ন আধিকারিক শিশির লেপচা।