বৃষ্টি নেই, মার খাচ্ছে চা পাতার উত্‌পাদন

প্রতিবছরই অক্টোবরে ডুয়ার্সে অন্তত চার থেকে পাঁচদিন ভারি বৃষ্টির দেখা মেলে। কিন্তু এবছর অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত বৃষ্টির দেখা নেই। ফলে আগামী মরসুমে নতুন পাতা নিয়ে আশঙ্কার মেঘ জমেছে ডুয়ার্সের চা বাগানগুলোতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালবাজার শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৫৮
Share:

প্রতিবছরই অক্টোবরে ডুয়ার্সে অন্তত চার থেকে পাঁচদিন ভারি বৃষ্টির দেখা মেলে। কিন্তু এবছর অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত বৃষ্টির দেখা নেই। ফলে আগামী মরসুমে নতুন পাতা নিয়ে আশঙ্কার মেঘ জমেছে ডুয়ার্সের চা বাগানগুলোতে।

Advertisement

শীতের আগে অক্টোবরে শেষ বর্ষার বৃষ্টির ওপর চা বাগানের ফলন এবং রোগপোকার প্রাদুর্ভাব ও নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই নির্ভর করে। রাজ্য থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে বর্ষা বিদায় নেওয়ার পরেও ডুয়ার্সে বিক্ষিপ্তভাবে অতিরিক্ত বৃষ্টি চা বাগানের পক্ষে লাভদায়ক হয়।

কিন্তু এবছর এখনও পর্যন্ত বর্ষা বিদায় না নিলেও অক্টোবরে বৃষ্টির দেখা মেলেনি ডুয়ার্সে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ডুয়ার্সে শেষ ভারি বৃষ্টি হয়েছিল ২৮ সেপ্টেম্বর। ডুয়ার্সের অধিকাংশ চা বাগানে বৃষ্টিও হয়েছিল সেদিন। কিন্তু এরপর থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত বৃষ্টির দেখা না মেলায় উদ্বেগে রয়েছেন বিভিন্ন বাগান কর্তৃপক্ষ। গত ১২ অক্টোবর মালবাজার লাগোয়া এলাকায় সন্ধ্যার পর সামান্য বৃষ্টি হলেও তা বিশেষ কাজে আসেনি বলেই চা বাগান সূত্রে জানা গেছে।

Advertisement

ডুয়ার্সের মালবাজার ব্লকের গুরজংঝোরা চা বাগানের ম্যানেজার অলোক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এভাবে চলতে থাকলে আগামী মরসুমে বাগানে নতুন পাতা মার খাবে। ইতিমধ্যেই বৃষ্টির অভাবে লুপার, ক্যাটারপিলার, ও হেলামাইটিসের মতো পোকা চা বাগানে দেখা যাচ্ছে। চা শ্রমিকদের পোকার আক্রমণের কথা জানিয়ে বাড়তি পরিচর্যার কথা জানালেও বৃষ্টি না হলে সমস্যা থেকেই যাচ্ছে।”

অক্টোবরে বৃষ্টি না হওয়ায় গরম যথেষ্টই রয়েছে। সে কারণে চলতি মাসে পাতা তোলার কাজও করা যাচ্ছে না বলে জানালেন মেটেলি ব্লকের সোনগাছি চা বাগানের ম্যানেজার রাধেশ্যাম খান্ডেলওয়াল। উল্লেখ্য ডুয়ার্সের চা বাগানগুলোতে নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে চা গাছের কলম কাটার কাজ শুরু করা হয়। ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে ডুয়ার্সের প্রায় সব চা বাগানেই গাছ ছেঁটে দেওয়ার কাজ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু শীত আসার আগে বেশ কয়েক দফায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি না হলে কলম কাঁটার কাজও ব্যাহত হওয়ার আশংকা থাকছে। আগেভাগেই পোকার উপদ্রব হওয়ায় কলম কাটার পরেও চা গাছ মারা যাবার আশঙ্কাও করছেন বিশেষজ্ঞরা। মেটেলিতে টাটা গোষ্ঠীর বাতাবাড়ি বাগানের ম্যানেজার সঞ্জয় সিংহ জানালেন, চা গাছের পক্ষে বৃষ্টি এসময়ে খুবই প্রয়োজন কিন্তু গত বছরের তুলনায় এবছর বৃষ্টির ঘাটতি থাকায় কাঁচা চা পাতার উত্‌পাদনও অনেকটাই কমে গিয়েছে। এদিকে ডুয়ার্সে অক্টোবরে ভারি বৃষ্টি হলে তাপমাত্রাও অনেকটাই নেমে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন