বুড়িকালীর পুজো, মেলায় মেতে উঠেছে মোবারকপুর

পুজো ও পুজোর পাশাপাশি মেলা শুরু হয়েছিল রাজার উদ্যোগে। এখন রাজা নেই। কিন্তু তিনশো বছরের প্রাচীন ওই পুজো ও মেলার কোনওটাই বন্ধ হয়নি। এখন পুজো হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে। নিয়ম মেনে পুজোর রাত পোহাতেই শতাব্দী প্রাচীন বুড়িকালী মায়ের মেলা শুরু হয়ে গেল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের মোবারকপুরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হরিশ্চন্দ্রপুর শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৫৪
Share:

বুড়িকালীদেবীর প্রতিমা। মোবারকপুরে বাপি মজুমদারের তোলা ছবি।

পুজো ও পুজোর পাশাপাশি মেলা শুরু হয়েছিল রাজার উদ্যোগে। এখন রাজা নেই। কিন্তু তিনশো বছরের প্রাচীন ওই পুজো ও মেলার কোনওটাই বন্ধ হয়নি। এখন পুজো হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে। নিয়ম মেনে পুজোর রাত পোহাতেই শতাব্দী প্রাচীন বুড়িকালী মায়ের মেলা শুরু হয়ে গেল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের মোবারকপুরে। মোবারকপুর কালীতলায় শুক্রবার সকাল থেকেই জমে উঠতে শুরু করেছে মেলা। এখানে দেবী, বুড়িকালী নামেই পরিচিত। এই প্রতিমার সঙ্গে মিল রয়েছে চাঁচলের বত্রিশকোলা ও রতুয়ার লস্করপুরের কালীর। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এই তিন কালী সম্পর্কে তিন বোন। মোবারকপুরের কালী বড় বোন। তাই এখানে তাঁর পরিচয় বুড়িমা হিসাবে। পুজোর পরদিন শুরু হয় মেলা। চলে টানা চারদিন। শুধু হরিশ্চন্দ্রপুর বা চাঁচল নয়, লাগোয়া বিহার থেকেও দর্শনার্থীরা হাজির হন এখানে। এলাকার যারা বাইরে কর্মরত বা ভিনরাজ্যে বসবাস করেন দুর্গাপুজোয় না হলেও কালীপুজোয় বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করেন তাঁরাও। এলাকার বাড়িগুলিও পুজোকে ঘিরে আত্মীয় স্বজনদের ভিড়ে গমগম করে। মেলায় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ হাজির হওয়ায় রাজ আমলের ওই পুজো ও মেলা আজও সম্প্রীতির মেলা হিসাবেই পরিচিত।

Advertisement

বুড়িকালীর পুজো হয় স্থায়ী বেদিতে। দেবী প্রতিমার উচ্চতা ১২ ফুট। এতদিন পুজো হত খোলা আকাশের নীচে। হিমের হাত থেকে বাঁচতে মাথার উপরে থাকত শুধু একটি চাঁদোয়া। কিন্তু এ বারই প্রথম মাথার উপর পাকা ছাদ তৈরি করা হয়েছে। তবে চারদিক খোলা। বাসিন্দারা জানান, বেদিকে ঘিরে বহু বছর আগে একবার মন্দির তৈরি করার পদক্ষেপ করা হয়েছিল। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। জনশ্রুতি, বুড়ি মা কালী নাকি স্বপ্নাদেশে জানিয়ে দেন যে খোলা আকাশের নীচে পুজো করতে হবে যাতে দূর থেকেও ভক্তেরা দেখতে পান। তারপর আর মন্দির তৈরির চেষ্টা করেননি বাসিন্দারা। তবে বছরদুয়েক আগে প্রতিমার বেদির উপর ছাদ নির্মাণ করা হয়। তবে খোলা রাখা হয় চারপাশ। তাও নাকি স্বপ্নাদেশেই।

পুরনো নিয়ম মেনে বেদির পাশেই তৈরি করা হয় প্রতিমা। পুজোর রাতে বলি দেওয়ার রীতিও রয়েছে আজও। বিসর্জনের আগে জোড়া পায়রা বলির রীতিও বজায় রয়েছে। রাত পোহালেই শুরু হয় মেলা। সারা রাত ধরে গানের আসরও চলে। পুজো কমিটির পক্ষে অরণ্য সাহা ও শিমুল মুখোপাধ্যায় বলেন, বিশ্বাসের বশে দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ প্রতিবছর বুড়ি মা কালীর পুজোয় সামিল হন।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন