কর্মিসভায় কোন্দল, ভোটের মুখে ভাবমূর্তি ফেরাতে উদ্যোগ তৃণমূলে

বহিষ্কৃত যুব নেতা, সাসপেন্ড চার

দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলিতে কর্মিসভার দিন মারপিটে অভিযুক্ত তৃণমূলের এক যুব নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার এবং চার জন অঞ্চল স্তরের তৃণমূল নেতা-কর্মীকে পাঁচ বছরের জন্য সাসপেন্ড করল তৃণমূল কংগ্রেস। মঙ্গলবার দুপুরে গঙ্গারামপুরে এক সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র ওই ঘোষণা করেন। বিপ্লববাবু বলেন, “দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের জায়গা নেই। দলের ভাবমূর্তি ও নেত্রীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে, এমন কার্যকলাপে জড়িতদের বরদাস্ত করা হবে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৪ ০১:১৮
Share:

দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলিতে কর্মিসভার দিন মারপিটে অভিযুক্ত তৃণমূলের এক যুব নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার এবং চার জন অঞ্চল স্তরের তৃণমূল নেতা-কর্মীকে পাঁচ বছরের জন্য সাসপেন্ড করল তৃণমূল কংগ্রেস। মঙ্গলবার দুপুরে গঙ্গারামপুরে এক সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র ওই ঘোষণা করেন।

Advertisement

বিপ্লববাবু বলেন, “দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের জায়গা নেই। দলের ভাবমূর্তি ও নেত্রীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে, এমন কার্যকলাপে জড়িতদের বরদাস্ত করা হবে না। যত বড় পদাধিকারীই হোন না কেন, এ সব করলে শাস্তি পেতেই হবে।” তৃণমূল সূত্রের খবর, জেলা সভাপতি এবং জেলার মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীর গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে কর্মিসভায় ঢোকা, মিছিল নিয়ে গোলমাল হয়। এ দিন দুই গোষ্ঠীর লোক জনকেই শাস্তি দেওয়া হয়েছে। ভোটের আগে জেলার দলের ভাবমূর্তি রক্ষা করার জন্য ওই নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে তৃণমূল ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হল বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত। বালুরঘাটের বিধায়ক পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী অবশ্য বলেছেন, “এই বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।”

গত ২৩শে মার্চ বিকেলে হিলিতে বালুরঘাট কেন্দ্র প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের সমর্থনে কর্মী-সভা শুরু হওয়ার পরে রাস্তায় দলের দুই গোষ্ঠীর কর্মীদের মধ্যে লাঠি, বাঁশ নিয়ে মারপিট হয়। রক্তাক্ত হন দুই কর্মী। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের রাজ্য স্তরে আলোড়নের সৃষ্টি হয়। ভোটের মুখে প্রার্থীর সামনে দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলায় অস্তস্তিতে পড়ে জেলা নেতৃত্ব তদন্তে নামেন। একমাস আগে বালুরঘাটে ব্লক কংগ্রেস নেতাকে গুলি করার ঘটনায় নাম জড়িয়ে যাওয়ায় তৃণমূলের ব্লক সাধারণ সম্পাদক তথা ভাটপাড়া অঞ্চলের প্রধান লগিন দাসকে দল থেকে পাঁচ বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল।

Advertisement

জেলা সভাপতি বিপ্লববাবু বলেন, “হিলির কর্মিসভার বাইরে মারপিটের ঘটনায় ৫ জন সরাসরি জড়িত ছিলেন। দলের যুব নেতা জয়ন্ত সরকারকে দল থেকে বহিষ্কার করা হল। বাকি ৪ জন বাচ্চু চৌহান, সুকুমার চৌহান, বিদ্যুত বিশ্বাস ও কাশেম মণ্ডলকে ৫ বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে।” যুব তৃণমূল জেলা সভাপতি সুনির্মলজ্যোতি বিশ্বাস জানান, এর আগে হিলি ব্লক যুব সভাপতি জয়ন্তবাবুকে দলবিরোধী কাজের অভিযোগে পদ থেকে সরিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল। সভার বাইরে মারপিটের ঘটনায় তিনি সরাসরি যুক্ত ছিলেন। দলীয় সূত্রের খবর, দুই কর্মী বাচ্চু ও সুকুমার চৌহান বিপ্লব মিত্রের অনুগামী এবং যুব নেতা জয়ন্তবাবু, কাশেম মণ্ডল ও বিদ্যুৎ বিশ্বাস পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীর গোষ্ঠীর লোক।

শাস্তিপ্রাপ্ত ৫ জনই অবশ্য জেলা নেতাদের নামে নালিশ করেন। জয়ন্ত সরকার বলেন, “একতরফা সিদ্ধান্ত। সভাপতি আমাদের কথা শোনেন না।” হিলি জামালপুর অঞ্চল প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি কাশেম মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া, “গায়ের জোরে ওই সিদ্ধান্ত হল।” অন্য দিকে, সাসপেন্ড হওয়া বাচ্চু ও সুকুমার চৌহানের বক্তব্য, “বিচার ঠিক হল না। হামলায় মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হল, অথচ শাস্তিও পেলাম।”

শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে জেলা সভাপতি কোনও আলোচনা করেননি বলে দলের অন্দরে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে জেলা সভাপতি বিপ্লববাবু বলেন, “রাজ্য নেতৃত্ব পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দেন। এ নিয়ে শঙ্করদার সঙ্গে কথা বলার কিছু নেই। নেতৃত্বে মতবিরোধ হতে পারে। আমরা টিম-হিসাবে কাজ করি। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও বিষয়ই নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন