রামগঞ্জ ফাঁড়িতে ভাঙচুর, আগুনের চিহ্ন। —নিজস্ব চিত্র।
রামগঞ্জে ফাঁড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় দলের কর্মীদের নাম জড়ানোয় অস্বস্তি শুরু হয়েছে দলের অন্দরেই।
ইসলামপুর থানার রামগঞ্জ এলাকাতে পুরোনো তৃণমূল কর্মী হিসেবেই পরিচিতি ইসলামপুরের ব্লক তৃণমূল সাধারন সম্পাদক ইদ্রিশ আলমের। তিনি পেশায় ঠিকাদার। বিভিন্ন এলাকাতে নলকূপ বসানোর কাজ করেন তিনি। এলাকায় তৃণমূলের সমাবেশ হলে বেশ প্রথম সারিতেই দেখা যায় তাঁকে। অনেক পুরোনো কর্মী হওয়ার কারণে এলাকায় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক পদেও রয়েছেন তিনি। তবে এক সময় কংগ্রেসের নেতা হিসেবেও পরিচিত ছিলেন ইদ্রিশ আলম।
এ দিকে লটারি বিক্রিকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোলের ঘটনার দলের নেতার নাম জড়ানোয় কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছে এলাকার তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তবে লটারির বিক্রেতাদের হয়ে এলাকাতে গন্ডগোল না করে তারা থানায় অভিযোগ করতে পারত বলে মনে করছেন এলাকার বাসিন্দারা। এমনকী তৃণমূলের অন্দরেও তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ইসলামপুর থানার রামগঞ্জ এলাকাতে চলছে দেদার লটারির ব্যবসা। এলাকার তৃণমূল নেতার ভাইঝির স্বামীর দোকান ভাড়া নিয়েছেন এক লটারি বিক্রেতা। এলাকার মাছ ব্যবসায়ীরা লোকজন নিয়ে সেই দোকানের উপর হামলা চালায় এবং পাশাপাশি সমস্ত লটারির দোকানে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। এর পরই এলাকার লটারি ব্যবসায়ীদের একাংশ ছুটে যায় তৃণমূল পার্টি অফিসে। তৃণমূল নেতা ইদ্রিশ আলমের উপস্থিতিতে তারপর রামগঞ্জ ফাঁড়িতে ভাঙচুর করা হয় বলে এলাকার বিরোধী দল গুলির অভিযোগ। সিপিএম এর দাবি তৃণমূলের মদতেই এলাকাতে রমরম করে চলছে লটারি ব্যবসা। সিপিএম-এর উত্তর দিনাজপুর জেলা কমিটির সদস্য বিকাশ দাস অভিযোগ করে বলেন, “লটারির দোকানগুলি থেকে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করে ইদ্রিশ আলম সহ তৃণমূল নেতারা। কাজেই এলাকাতে লটারি ব্যবসা তো মাথা চাড়া দেবেই।” কংগ্রেসের ইসলামপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান কানাইয়ালাল অগ্রবালও অভিযোগ করেন, “ইদ্রিশ আলমের নেতৃত্বে ফাঁড়িতে ভাঙচুর হয় বলে শুনেছি। এলাকার প্রশাসনকে আরও বেশি সক্রিয় হওয়া উচিত।”
অভিযুক্ত নেতা অবশ্য দাবি করেছেন “ওই ঘটনায় এলাকায় গন্ডগোলের খবর পেয়ে গিয়েছিলাম। পুলিশের সঙ্গে কথা বলছিলাম। তখন পুলিশ আমাকে তুলে নিয়ে আসে।” রাতভর থানায় বসিয়ে রাখার পর শুক্রবার সকালে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ পুলিশ কর্মীদের একাংশও। জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য বলেন, “দল কোনও বেআইনি কাজ বরদাস্ত করেনা ও মদতও দেয় না। পুলিশ ফাঁড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও পুলিশকর্মীদের উপর যারা সত্যিই হামলা চালিয়েছে, আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক পুলিশ।”