বর্ষার আগে উত্তরবঙ্গে নদী বাঁধ তৈরি এবং সংস্কারে প্রায় ৫২ কোটি টাকা বরাদ্দে একাধিক কাজের সূচনা হল বুধবার। চলতি বছরে বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গের তিন জেলার জন্য ৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সেচ দফতর। লোকসভা ভোটের বিধি নিষেধের গেরো আটকাতে ভোট ঘোষণার আগেই কাজগুলি শুরু করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সেচ দফতর। সেই মতো বুধবার সকাল সাড়ে দশটায় দিল্লিতে লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার প্রায় দু’ঘণ্টা আগে সকাল সাড়ে আটটায় সেচ দফতরের আধিকারিকরা প্রকল্পগুলির সূচনা করে দেন। পরে সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী শিলিগুড়ি পুরসভার নেতাজি পল্লী এলাকায় মহানন্দা নদীর পাড় বাঁধানোর কাজ পরিদর্শন করেন।
নেতাজি পল্লীতে মহানন্দার পাড় বাধাতে প্রায় দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সেচ দফতর। এর সঙ্গেই এ দিনই ফাঁসিদেওয়া ব্লকের পাঁচটি এলাকায় চেঙ্গা ও মহানন্দা নদীর পাড় বাঁধানোর কাজেরও সূচনা হয়েছে। আলিপুরদুয়ারের সিসামারি নদীতে বাঁধ নির্মাণ, কুমারগ্রামে রায়ডাক নদীতে বাঁধ সংস্কার কাজেরও সূচনা হয়েছে এ দিন। ফালাকাটা, মেটেলি শামুকতলাতেও তুড়তুড়ি, দলগাঁও নদী এবং কিলকট, ইনডং ঝোরায় বন্যা মোকাবিলার কাজেরও সূচনা করেছেন সেচ দফতরের আধিকারিকরা। সেচ দফতরের সব প্রকল্পগুলির উদ্বোধন করার কথা ছিল মন্ত্রীর। যদিও এ দিন সকালেই ভোট ঘোষণা হতে চলেছে শুনে বির্তক এড়াতে মন্ত্রীর নির্দেশে সকাল সাড়ে আটটাতেই আধিকারিকরা সব প্রকল্পের উদ্বোধন করে দেন। শিলিগুড়িতে কাজের পরিদর্শন সেরে সেচমন্ত্রী রাজীববাবু বলেন, “বর্ষার আগেই কাজগুলি শুরু হয়ে যাক এটাই চেয়েছিলাম। কে উদ্বোধন করলেন সেটা কথা নয়। সাধারণ বাসিন্দাদের স্বার্থেই সব প্রকল্পগুলি নেওয়া হয়েছিল, সে কারণেই ভোটের আচরণবিধিতে কাজ যাতে আটকে না যায় সে কারণেই প্রকল্পগুলি দ্রুত শুরু করা হল।”
বাঁধ সংস্কারের সঙ্গে জল সেচেরও বেশ কয়েকটি প্রকল্পের কাজের সূচনা হয়েছে এ দিন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “উত্তরবঙ্গে বন্যা আটকাতে এক গুচ্ছ প্রকল্প উদ্বোধন হয়েছে। এর আগে কখনও উত্তরবঙ্গের বন্যা ঠেকাতে এভাবে সুসহংত ভাবে প্রকল্প গ্রহন করা হয়নি।” শিলিগুড়ির নেতাজি পল্লীতে মহানন্দায় পাড় বাধাইয়ের কাজ দু’মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন সেচমন্ত্রী।
অন্য দিকে, নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় বুধবার তিস্তা ভাঙন প্রতিরোধের কাজ পরিদর্শনে ময়নাগুড়ির পদমতি এলাকায় অবশ্য যাননি সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরিবর্তে বুধবার সকালে রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায় অনুষ্ঠানস্থলে যান। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধের জন্য ১৭ কোটি টাকার কাজ হবে। প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে, এ দিন নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগে নারকেল ফাটিয়ে ওই কাজের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন বিধায়ক।