নির্বাচন কমিশনের অনুমতি না নিয়ে নববর্ষের শুভেচ্ছা কার্ড বিলি করায় রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের বামফ্রন্ট প্রার্থী সিপিএমের মহম্মদ সেলিমকে কারণ দর্শানোর চিঠি দিল নির্বাচন দফতর। সেই সঙ্গে নানা অভিযোগে নির্বাচনী বিধিভঙ্গে অভিযুক্ত হয়েছেন ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী পবিত্ররঞ্জন দাশমুন্সি, বিজেপি প্রার্থী নিমু ভৌমিক সহ ৯ জন প্রার্থী। উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক স্মিতা পাণ্ডে বলেন, “নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগে নয় জন প্রার্থীকে জেলা নির্বাচনী দফতরের তরফে নোটিস পাঠিয়ে ৩ দিনে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। নোটিসের জবাব হাতে পেলেই নির্বাচন কমিশনের আইন মতো ব্যবস্থা হবে।”
সিপিএম সূত্রেক খবর, রায়গঞ্জ কেন্দ্রের প্রার্থীর হয়ে সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা সোমবার থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাসিন্দাদের মধ্যে নববর্ষের শুভেচ্ছা কার্ড বিলির কাজ শুরু করেছেন। সোমবার এক ইংরেজি সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর পড়ে জেলা নির্বাচন দফতর বিষয়টি জানতে পারে। সেই কার্ড দফতরের কর্তাদের হাতে পৌঁছয়। চার পাতার কার্ডে রায়গঞ্জ-এর প্রার্থীর ছবি সহ তাঁর অস্থায়ী বাড়ি ও দফতরের ঠিকানা, ফোন ও ফ্যাক্স নম্বর, ১৪২১ সনের ক্যালেন্ডার ও বিশ্বকাপ ফুটবলের ক্রীড়া সূচি রয়েছে। কার্ডের তিন নম্বর পাতায় ‘স্বাগত ১৪২১ লেখা রয়েছে। তাতে লেখা হয়েছে, ‘বাংলা নতুন বছর আপনার ও আপনার পরিবারের সকলের ভাল কাটুক।’ মহম্মদ সেলিম।’ দলের পক্ষে ৭ হাজারেরও বেশি কার্ড ছাপিয়ে বিলির কাজ শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কমিশন সূত্রে খবর, কার্ডে রাজনৈতিক দলের নাম না থাকলেও প্রার্থীর নামে কার্ড ছাপানো হলে এমসিসি-র অনুমতি প্রয়োজন। তা না থাকাতেই এই ব্যবস্থা। সেলিম বলেন, “নির্বাচন কমিশনের নোটিস হাতে পেলে জবাব দেব। নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে কোনও অন্যায় করিনি।”
কার্ড হাতে পেয়েছেন রায়গঞ্জের মিলনপাড়ার বাসিন্দা তাপসকান্তি দাস ও দেবীনগরের তোতন সরকারের মতো অনেকে। তাপসকান্তিবাবু বলেন, “মহম্মদ সেলিমের নববর্ষের শুভেচ্ছা কার্ড পেয়ে খুব ভাল লেগেছে।”
প্রসাসনিক সূত্রের খবর, নির্বাচন কমিশনের অনুমতি না নিয়ে একটি দৈনিক সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়ার অভিযোগে নির্বাচন বিধিভঙ্গে অভিযুক্ত হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী পবিত্ররঞ্জনবাবু, বিজেপি প্রার্থী নিমুবাবু ও সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী সুদীপরঞ্জন সেন। এ দিনই ওই সংবাদপত্রে ভোট চেয়ে পবিত্রবাবুর ১০টি বিজ্ঞাপন, নিমুবাবু ও সুদীপবাবুর একটি করে বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়। পবিত্রবাবু ও নিমুবাবু নোটিস হাতে না পাওয়া পর্যন্ত মন্তব্য করবেন না বলে জানিয়েছেন। সুদীপরঞ্জনবাবু বলেন, “নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মেনেই দলের তরফে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়।”
নির্বাচনী আধিকারিককে প্রচার খরচের হিসেব না দেওয়ায় বিএসপি প্রার্থী স্বপনকুমার বিশ্বাস, জেডিপি প্রার্থী বাবলু সোরেন, আমরা বাঙালির প্রার্থী নন্দকিশোর সিংহ, আপ প্রার্থী পাশারুল আলম, এআইইউডিএফ-এর প্রার্থী হাসান জামিরুল ও নির্দল প্রার্থী সুব্রত অধিকারীর বিরুদ্ধেও নির্বাচনী বিধি ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে।