চৈত্র সেলের বিজ্ঞাপন আছে। ভিড় নেই। রায়গঞ্জে তরুণ দেবনাথের তোলা ছবি।
বাংলা নতুন বছর আসতে আর মাত্র আট দিন বাকি। কিন্তু ভোটের মুখে রায়গঞ্জ শহরের চৈত্র সেলের বাজার জমে না ওঠায় হতাশ ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রতিবছর পয়লা বৈশাখের দু’সপ্তাহ আগে থেকেই শহরের দোকানগুলিতে দিনভর ক্রেতাদের ভিড় লেগে থাকে। এবার তা ব্যতিক্রম। এ রকম চলতে থাকলে এ বছর ব্যবসায়ীরা চরম লোকসানের শিকার হবেন।
আগামী ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচন হবে। ব্যবসায়ীদের মতে, বর্তমানে উত্তর দিনাজপুরের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় দিনভর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রচার চলছে। সেই প্রচারে সংশ্লিষ্ট এলাকার বেশিরভাগ বাসিন্দাই সামিল হচ্ছেন। তাই প্রচারে ব্যস্ত থাকার কারণে বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের একটি বড় অংশ চৈত্র সেলের বাজারে কেনাকাটা করতে আসার ফুরসত পাচ্ছেন না।
রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ও পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অফ কমার্সের সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ী ও জয়ন্ত সোম বলেন, “অতীতে চৈত্র সেলের এতটা মন্দা বাজার ব্যবসায়ীরা দেখেছেন কি না তা মনে করতে পারছেন না। জেলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে বাসিন্দাদের একটি বড় অংশ নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত থাকায় এবার এই অবস্থা। মূলত পোশাক ও জুতোর ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়বেন।”
রায়গঞ্জের শিলিগুড়ি মোড়, সুপারমার্কেট, মোহনবাটি, লাইন বাজার, নিউ মার্কেট, দেবীনগর, কসবা সহ বিভিন্ন এলাকায় চৈত্র সেলের বাজার বসেছে। এমনকী শহরের বিভিন্ন এলাকার শতাধিক পোশাক ও জুতোর ব্যবসায়ী দোকানের সামনে নানা রঙের কাপড় দিয়ে প্যান্ডেল তৈরি করে পসরা সাজিয়েছেন। দামের ১০ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশ ছাড়ের ঘোষণাও হয়েছে। কিন্তু ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। বিশেষ করে রবিবারের সেলের বাজার কার্যত ফাঁকা ছিল।
রায়গঞ্জের নিউমার্কেট এলাকার পোশাক ব্যবসায়ী সুকুমার সাহা ও রঞ্জন ঘোষ বলেন, “গত প্রায় একসপ্তাহ ধরে চৈত্র সেলের বাজার শুরু হলেও ক্রেতাদের দেখা মিলছে না। রবিবারের বাজারেও যে ক্রেতার দেখা মিলবে না তা ভাবতে পারছি না।” একই কথা জানিয়েছেন মোহনবাটি ও লাইনবাজার এলাকার জুতোর ব্যবসায়ী মন্টু রায় ও সনাতন দাসও। ভোটের জন্যই বাজারের এহেন দশা তা জানাচ্ছেন রাজনৈতিক নেতারাও। এ প্রসঙ্গে জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ ও জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অমল আচার্য পৃথকভাবে জানান, বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে মিছিল, মিটিং, কর্মিসভা ও বাড়ি বাড়ি প্রচার চলছে। দলীয় কর্মী সমর্থকেরা সেই কাজেই ব্যস্ত থাকায় চৈত্র সেলের বাজার জমেনি। আর সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য বাপি ভৌমিক বলেন, “পয়লা বৈশাখের আগে ১৩ এপ্রিল আরেকটি রবিবার পড়েছে। আশা করছি, ওইদিন বাজার জমে উঠবে।”