অনুমতি না নিয়ে স্কুল মাঠে প্যান্ডেল করে, তারস্বরে মাইক বাজিয়ে কর্মী সম্মেলন করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়ের বিরুদ্ধে। ফলে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হলেন ছাত্র ও শিক্ষকরা। বুধবার ঘটনাটি ঘটে জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের মিলনপল্লি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ঘটনার নিন্দা করেন জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা ধর্তিমোহন রায়ও। তিনি বলেন, “অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। খোঁজ নিয়ে জেনেছি, সম্মেলনের জন্য অনুমতি নেওয়া হয়নি।”
এদিন সকালে স্কুলে গিয়ে মাঠে বিরাট প্যান্ডেল, স্কুল জুড়ে তৃণমূলের পতাকা, মাইকে তারস্বরে গান বাজতে দেখে অবাক হয়ে যায় পড়ুয়ারা। স্কুল ভবনের গা ঘেঁসে বড় বড় উনুনে তখন চলছে আলু ফুলকপির ডালনা তৈরি। খগেশ্বরবাবুকে মাঠে দাঁড়িয়ে থেকে সম্মেলনের প্রস্তুতির কাজ তদারকি করতে দেখা যায়। ক্লাসঘরে না গিয়ে সেখানেই ভিড় জমায় কচিকাঁচারা।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় সাতশো কর্মী এ দিনের সম্মেলনে যোগ দেন। সকাল থেকে মাঠের চারদিকে চা ও পানের দোকান বসে মেলার চেহারা নেয় স্কুল চত্বর। প্রধান শিক্ষক মহম্মদ মফিজুল রহমানের দাবি সাড়ে দশটা নাগাদ স্কুলে পৌঁছে তিনিও অবাক হয়ে যান। তাঁর কথায়, “স্কুলে গিয়ে দেখি পঠন পাঠনের পরিস্থিতি নেই।” স্কুল প্রাঙ্গণে সম্মেলন করার জন্য তাঁর অনুমতি নেওয়া হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন, “এই বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।” পৌনে ১২টা পর্যন্ত স্কুলে থাকার পর তিনি স্কুল ছুটি দিয়ে নিজেও বাড়ি ফিরে যান। এক অভিভাবক বলেন, “এমন ঘটনা আগে দেখিনি। গায়ের জোরে যা খুশি চলবে। একজন বিধায়ক এটা করতে পারেন ভাবতে পারছি না।”
জলপাইগুড়ি জেলা সিপিএম সম্পাদক সলিল আচার্য বলেন, “এ ভাবে স্কুল ছুটি করে দলের কর্মী সম্মেলন করা যায় না। কেন এটা হল জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের কর্তাদের কাছে চিঠি লিখে জানতে চাওয়া হবে।” জেলা বিজেপি সভাপতি দীপেন প্রামাণিকের অভিযোগ, তৃণমূল বিধায়ক আগাম অনুমতি না নিয়ে সম্মেলন করলেন।” খগেশ্বরবাবু অবশ্য বলছেন, “এক সপ্তাহ আগে অনুমতি নিয়ে স্কুল প্রাঙ্গণে দলীয় সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।”