মিথ্যে রটিয়ে হেনস্থার চেষ্টা তরুণীকে, সন্দেহ পুলিশের

একযোগে শিলিগুড়ির একটি শিক্ষা প্রকল্পে কর্মরত এক তরুণী ও অ্যাকাউন্টস বিভাগের এক অফিসারকে জড়িয়ে অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে বলে সন্দেহ করছেন পুলিশের অনেকেই। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ওই অফিসার কাজে দক্ষতার সুবাদে প্রকল্পের কাজের বাইরেও সরকারি ও বেসরকারি নানা সংস্থাকে কর সংক্রান্ত পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করে থাকেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:২০
Share:

একযোগে শিলিগুড়ির একটি শিক্ষা প্রকল্পে কর্মরত এক তরুণী ও অ্যাকাউন্টস বিভাগের এক অফিসারকে জড়িয়ে অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে বলে সন্দেহ করছেন পুলিশের অনেকেই। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ওই অফিসার কাজে দক্ষতার সুবাদে প্রকল্পের কাজের বাইরেও সরকারি ও বেসরকারি নানা সংস্থাকে কর সংক্রান্ত পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করে থাকেন। শিক্ষা প্রকল্পে যুক্ত বাণিজ্যের স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ ওই তরুণীও কর সংক্রান্ত পরামর্শ দেওয়ায় সহায়তা করে থাকেন। পুলিশের একাংশের সন্দেহ, শিক্ষা প্রকল্পে শুধু নয়, বাইরেও ওই দুজনের গ্রহণযোগ্যতা বাড়তে থাকায় একযোগে দুজনকে খাটো করতে সাদামাটা একটি ছবি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে হোয়াটসঅ্যাপে ছড়ানো হয়।

Advertisement

তবে শিক্ষা প্রকল্পের কর্মীদের একাংশ অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁরা আলোচনায় বসে অভিযুক্তদের ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শ দিয়ে অফিসের অন্দরেই বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার পক্ষপাতি। সহকর্মীদের বিরুদ্ধে এফআইআর হওয়ায় শিক্ষা প্রকল্পের কর্মীরা অনেকে ক্ষোভ প্রকাশও করেছেন। ক্ষুব্ধ কর্মীদের কয়েকজনের দাবি, অভিযোগ প্রত্যাহার করে বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে ভুল স্বীকার করে মেটালে অফিসকর্মীদের মধ্যে রেষারেষি আর বাড়বে না।

পুলিশ জানায়, ওই ঘটনায় যাঁদের নাম জড়িয়েছে, সেই চার জনকেই জেরার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, অফিসে কর্মদক্ষতায় পাল্লা দিতে না পেরে ঈর্ষার কারণে সাধারণ একটা ছবিকে সুকৌশলে ব্যবহার করে দুজন সহকর্মীকে অপদস্থ করার ছক কষা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে শোনা গিয়েছে। ওই অফিসার জানান, তা ছাড়া ওই দু’জন বেড়াতে গিয়েছিলেন বলেও মিথ্যে রটনা করার চেষ্টা হয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে। কাজের সুবাদে এক অফিস থেকে অন্য অফিস যাওয়ার বিষয়টিকে বেড়ানো বলে রটানোর চেষ্টা হয়েছে বলেও অনুমান করছে পুলিশ।

Advertisement

অবশ্য শিলিগুড়ি থানার অফিসারদের কয়েকজন জানান, এ ধরনের মিথ্যে রটনার ফলে অনেক সময়ে পরিবার-পরিজনদের উপরেও ঝড় বয়ে যায়। তবে শিক্ষা প্রকল্পে কর্মরত ওই তরুণীকে পুলিশের তরফে দ্রুত তদন্ত সম্পূর্ণ করে ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে আশ্বস্ত করা হয়েছে। পুলিশের এক কর্তা জানান, এ ধরনের ঘটনা ঘটলে একজন তরুণীর মনের উপর দিয়েও কতটা ঝড় বয়ে যায় তা আঁচ করতে অসুবিধে হয় না। তিনি জানান, তাড়াতাড়ি মামলার কিনারা করা হবে।

শিক্ষা প্রকল্প সূত্রের খবর, দফতরের আধিকারিকরা অনেকেই ওই তরুণীকে অযথা হেনস্থার চেষ্টার নিন্দায় সরব হয়েছেন। প্রকল্পের অফিসার-কর্মীদের একাংশেরও সন্দেহ, ইদানীং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কড়াকড়ির কারণে গাড়ির বিল, বিদ্যুতের বিল কমিয়ে অর্ধেক করে দিয়েছেন। দিনভর অফিসে বসে ‘ফেসবুক’ সহ নানা সোশ্যাল সাইটে ‘আড্ডা’ দিতেই যাঁরা ব্যস্ত থাকেন, তাঁদেরও সতর্ক করা হয়েছে। ওই দফতরের একটি সূত্র অনুযায়ী, অ্যাকাউন্টস বিভাগের ওই অফিসারের উদ্যোগেই বাড়তি কড়াকড়ি করেছেন কর্তৃপক্ষ। ফলে, তাঁকে বেকায়দায় ফেলতে দফতরের অন্দরেই একাংশ অতি মাত্রায় সক্রিয় বলে অনুমান করছেন আধিকারিকদের অনেকেই।

পুলিশ ও শিক্ষা প্রকল্প সূত্রের খবর, শিলিগুড়ির জিটিএস মোড়ের ওই শিক্ষা প্রকল্পে তরুণীটি যোগ দেন বছর দেড়েক আগে। সম্ভ্রান্ত পরিবারের তরুণীটি অফিসের কাজের বাইরেও অ্যাকাউন্টস বিভাগের অফিসারের মতো আয়কর সংক্রান্ত পরামর্শদাতার কাজে নামেন। সেই মতো পারিবারিক সূত্রে খোলা একটি অফিসে গিয়ে নানা সরকারি-বেসরকারি সংস্থার আয়-ব্যয়, কর সংক্রান্ত ব্যাপারে পরামর্শ দেন ওই দুজন। শিক্ষা প্রকল্পের একাধিক কর্মী জানান, ওই তরুণীর আচার-আচরণ যথেষ্ট মার্জিত। তার পরেও তাঁকে খাটো করার চেষ্টা হওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক বলে মনে করেন তরুণীর সহকর্মীদের অনেকেই। তাই শিক্ষা প্রকল্পের কর্মীদের অনেকেরই দাবি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বৈঠক ডেকে উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে বিষয়টি মিটিয়ে দিতে উদ্যোগী হন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন