মঙ্গলবার মালদহ সংশোধনাগারের একটি পরিত্যক্ত সেল থেকে এক বন্দির ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ভরদুপুরে এই ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন পড়ে যায় সংশোধনাগারে। জেলের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জেলা মানবাধিকার কমিশন। এই ঘটনায় কর্তব্যরত এক অফিসার এবং এক ওয়ার্ডেনকে শো-কজ করেছে জেল কর্তৃপক্ষ।
জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম সনাতন টুডু (৩৩)। তাঁর বাড়ি বামনগোলা থানার জোরগ্রামের সাদুলি পাড়ায়। একটি খুনের মামলায় অভিযুক্ত হয়ে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে মালদহ সংশোধনাগারে ছিল সে। জেলা সংশোধনাগারের সুপার দরজি ভুটিয়া বলেন, “জেলের একটি পরিত্যক্ত সেল থেকে এক বন্দির ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। জেল হাসপাতালের চিকিত্সকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেছেন। মৃতদেহটি ময়না তদন্তের জন্য মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুজনকে শো-কজ করা হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
জেল ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,গত ১১ ফেব্রুয়ারি বামনগোলা থানার সাদুলি পাড়ায় ঠাকুর মার্ডি নামে এক ব্যক্তিকে খুন করার অভিযোগ উঠে সনাতন টুডুর বিরুদ্ধে। ওই দিন তাঁরা দুজনে মিলে আদিবাসীদের পরব থেকে মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরছিলেন। রাস্তায় দুইজনের মধ্যে কথাকাটি শুরু হয়ে যায়। পরে হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়। সনাতনের মারে ঠাকুর মার্ডি লুটিয়ে পড়লে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় সে। পরে ঠাকুর মার্ডির মৃত্যু হয়। ঠাকুরের পরিবারের সদস্যেরা থানায় লিখিত অভিযোগ করলে ১৮ ফেব্রুয়ারি গাজলের গোবিন্দপুর থেকে সনাতনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জেল সূত্রে এও জানা গিয়েছে,এদিন দুপুর দেড়টা নাগাদ বাথরুমে যাওয়ার নাম করে সেল থেকে বের হন সনাতন। দীর্ঘক্ষণ পরেও সে সেলে না ফেরায়, জেল কর্তৃপক্ষ খোঁজ খবর শুরু করে। তখনই ছয় নম্বর সেলের পাশে একটি পরিত্যক্ত সেলের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় সনাতনকে দেখতে পান তাঁরা। পরনের ধুতি দিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে বলে সন্দেহ। ওই সেলটিতে মেরামতির কাজ চলছিল। তবে সপ্তাহখানেক ধরে সেই কাজ বন্ধ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
খুনের মামলায় অভিযুক্তকে কিভাবে কোনও নিরাপত্তারক্ষী ছাড়ায় বাথরুমে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হল কেন? সেই প্রশ্ন উঠেছে। জেল সূত্রে খবর, কর্তব্যরত অফিসার মাইনুল হক এবং ওয়াডেন কেশব চন্দ্র সাহাকে শো-কজ করেছে জেল কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়ে মালদহের পুলিশ সুপার প্রসুন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শুনেছি সংশোধনাগারে এক বন্দির ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআরের জেলা সম্পাদক জিষ্ণু রায়চৌধুরী বলেন, “বন্দির আত্মহত্যা নিয়ে রহস্য দানা বাঁধছে। বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।”
আন্দোলন। পুরো বেতন ও নিয়মিত পেনশনের দাবিতে আন্দোলনে নামল কংগ্রেস প্রভাবিত উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের ওয়ার্কার ইউনিয়ন। মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সংগঠনের সদস্যরা নিগমের রায়গঞ্জ ডিপোতে বিক্ষোভ দেখান। এরপর সংগঠনের তরফে নিগমের রায়গঞ্জের ডিভিশনাল ম্যানেজারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভও দেখানে হয়। পরে নিগম কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।