নতুন জেলা হলেও জয়ন্তীর মহাকাল পাহাড়ে যাওয়ার পথের পরিবর্তন হয়নি। প্রতিবছর শিবরাত্রি উপলক্ষে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি নিজেরাই জয়ন্তীর নদীর চরে অস্থায়ী রাস্তা বানিয়ে নিলেও প্রশাসন কার্যত হাত গুটিয়ে বসে থাকে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ময়নাগুড়ির জল্পেশ মেলায় জেলাপরিষদ থেকে প্রতি বছর পরিকাঠামো গড়ে তোলা হলেও বঞ্চিত রয়ে গিয়েছিল কালচিনি ব্লকের দুর্গম মহাকাল পাহাড়। গত বছর আলিপুরদুয়ার নতুন জেলা হওয়ায়র পর জয়ন্তীর মহাকাল পাহাড়ে যাওয়ার জন্য পরিকাঠামো গড়ার দাবি তাই জোরাল হয়েছে। কালচিনির বিডিও চন্দ্রসেন খাতি স্বীকার করে নেন, “স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি নিজেদের উদ্যোগেই অস্থায়ী রাস্তা বানিয়ে নেন। তবে ব্লকের তরফে মহাকাল যাওয়ার রাস্তায় এই সময় শিবরাত্রি উপলক্ষ ১০০ দিনের কিছু কাজ হয়।”
মহাকাল পাহাড়ে যেতে জয়ন্তী নদীর বড় বড় পাথর পেরিয়ে পুর্ণ্যাথীদের সেখানে পৌঁছতে কষ্ট হয়। অনেক বয়স্ক পুণ্যার্থীই দুর্গম রাস্তার জন্য অর্ধেক পথ থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হন। প্রতি বছর জয়ন্তী নদীর জলোচ্ছাসে বড় বড় পাথর এসে অস্থায়ী রাস্তা নষ্ট করে দেয়। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি নিজেদের খরচে চলাচলের যোগ্য রাস্তা বানালেও প্রশাসন সাহায্য করলে পুণ্যার্থীদের পক্ষে মহাকাল পাহাড়ে যাওয়া অনেক সহজ হবে। বর্ষাকাল ছাড়া বছরের অন্য সময়েও পর্যটকেরা সেখানে যেতে পারবেন। তৃণমূলের আলিপুরদুয়ারের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “প্রশাসনের উচিত এগিয়ে এসে জয়ন্তী নদীর চরে অস্থায়ী ভাবে পরিকাঠামো গড়ে তোলা। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করব।”
তবে নতুন জেলা পরিষদের দৌলতে রাস্তার হাল ফিরবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন আলিপুরদুয়ার জেলার সভাধিপতি মোহন শর্মা। তিনি বলেন, “কালচিনি শিবশক্তি সেবা সমিতি গত ১১ বছর ধরে নিজেরাই অস্থায়ী ভাবে রাস্তা, জল, জেনারেটারের মাধ্যমে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করছে। আমিও সেই সমিতির সদস্য। আলিপুরদুয়ার জলপাইগুড়ি জেলার অধীনে থাকার সময় কোনও রকম সাহায্য আসেনি। ওই এলাকায় আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের তরফে উন্নয়ন করা হবে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে বনমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি। জয়ন্তী নদীটি বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের অধীন হওয়ায় সেখানে বন দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে কাজ করতে হবে।”
জয়ন্তী ট্যুরিস্ট গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শেখর ভট্টাচার্য বলেন, “বার বার মহাকাল পাহাড়ে যাওয়ার পথে জয়ন্তী নদীর উপরে শিবরাত্রির সময় সরকারি ভাবে অস্থায়ী পরিকাঠামো গড়ার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয়নি। প্রশাসন বিষয়টিতে নজর দিলে ভালো হয়।”