রামঘাট দিয়েই সংগঠন শক্ত করতে চায় ফব

আসন্ন পুরভোটের কথা মাথায় রেখে রামঘাটকে সামনে রেখেই শিলিগুড়িতে সংগঠন মজবুত করার করার কাজে নামল বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক। সোমবার বিকেলে শিলিগুড়ির রামঘাটের নতুনপাড়া স্কুলে রাজ্য নেতৃত্বের উপস্থিতিতে জনসভা করে বাম শরিক। সেখানে ফরওয়ার্ড ব্লকে শতাধিক অনুগামীদের নিয়ে যোগ দিয়েছেন রামঘাট আন্দোলনের পরিচিত মুখ মহানন্দ মণ্ডল। শুধু তাই নয়, তাঁর স্ত্রী তথা এলাকার প্রাক্তন তৃণমূল নেত্রী বিজলি দেবীও মহিলাদের নিয়ে দলে যোগ দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৪৪
Share:

মহানন্দ মণ্ডলকে দলীয় পতাকা দিচ্ছেন পরেশ অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।

আসন্ন পুরভোটের কথা মাথায় রেখে রামঘাটকে সামনে রেখেই শিলিগুড়িতে সংগঠন মজবুত করার করার কাজে নামল বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক। সোমবার বিকেলে শিলিগুড়ির রামঘাটের নতুনপাড়া স্কুলে রাজ্য নেতৃত্বের উপস্থিতিতে জনসভা করে বাম শরিক। সেখানে ফরওয়ার্ড ব্লকে শতাধিক অনুগামীদের নিয়ে যোগ দিয়েছেন রামঘাট আন্দোলনের পরিচিত মুখ মহানন্দ মণ্ডল। শুধু তাই নয়, তাঁর স্ত্রী তথা এলাকার প্রাক্তন তৃণমূল নেত্রী বিজলি দেবীও মহিলাদের নিয়ে দলে যোগ দিয়েছেন।

Advertisement

সভায় বিভিন্ন নির্মাণ শ্রমিক, যুবক এবং গাড়ি চালকেরাও দলে যোগ দিয়েছেন বলে বাম নেতৃত্বের দাবি। সভায় মহানন্দবাবু জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু করবেন বলে জানান। উল্লেখ্য, শিলিগুড়ি শহরে ৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাড়াও ১৮, ২২, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ফরওয়ার্ড ব্লকের সংগঠন রয়েছে। এ ছাড়াও ৯ এবং ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে দীর্ঘদিন ধরে কাউন্সিলর থাকার সুবাদে সেখানেও দলের লোকজন রয়েছে। পুরভোটের আগে দলকে ওই ওয়ার্ডগুলি ছাড়াও শহরের অন্য ওয়ার্ডগুলিতে সংগঠন ছড়াতে চাইছে দল।

এ দিন উপস্থিত ছিলের দলের রাজ্য সভাপতি বরুণ মুখোপাধ্যায়, দলের বিধায়ক পরেশ অধিকারী। রাজ্য সভাপতি বরুণবাবু বলেন, “বামপন্থী আন্দোলনকে ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতৃত্বে জোরদার করার কাজ চলছে। এদিন মহানন্দ মণ্ডল আমাদের দলে যোগ দেওয়ায় সংগঠন আরও শক্তিশালী হল। এ বার বিভিন্ন ওয়ার্ডেও এই কাজ চলবে।”

Advertisement

শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ড প্রাক্তন কাউন্সিলর ফরওয়ার্ড ব্লকেরই অমরনাথ সিংহ। বৈদ্যুতিক চুল্লি বিরোধিতার আন্দোলনে নেমে তিনি গ্রেফতারও হয়েছিলেন। এলাকার নাগরিক মঞ্চের আহ্বায়ক মহানন্দবাবুও দুই দফায় গ্রেফতার হন। তাঁর স্ত্রী পরবর্তীতে তৃণমূল থেকে পদত্যাগও করেন। দলীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি বৈদ্যুতিক চুল্লি নিয়ে নাগরিক মঞ্চের আবেদন হাইকোর্ট খারিজ করে চুল্লি তৈরির নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি, তৃণমূলও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতে এলাকায় পার্টি অফিসও খুলেছে। এই অবস্থায় রাজনৈতিকভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্যই মহানন্দবাবুর বিরোধী বামপন্থী দলে যোগ দিয়েছেন। ওয়ার্ডটি এবার মহিলা হয়ে যাওয়ায় ভোটে আন্দোলনে জড়িত কাউকে প্রার্থী করার চিন্তাও শুরু করেছে বাম শরিক।

দলের জেলা সম্পাদক অনিরুদ্ধ বসু যদিও বলেছেন, “আমরা শুধু ভোটের রাজনীতি করি না। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় আন্দোলন করি। এ দিন বিরাট সভায় প্রমাণ হল ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষ আমাদের পাশে রয়েছে।” এলাকার বাসিন্দারাই জানিয়েছেন, মহানন্দবাবু স্থানীয় ক্লাবের সম্পাদক হওয়া ছাড়াও একসময় তৃণমূল করতেন। লোকসভা ভোটের আগে এলাকায় তৃণমূল প্রার্থী ভাইচুং ভুটিয়ার সভার অন্যতম উদ্যোক্তা তিনিই ছিলেন। তাঁর স্ত্রী বিজলীদেবী মহিলা শাখার দেখভাল করতেন। রামঘাটে মন্ত্রীর মারধরের অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের জেরে গ্রেফতারের পর তাঁদের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব তৈরি হয়। এ দিন মহানন্দবাবু বলেন, “পদ, ভোটের টিকিটের লোভে দলে আসিনি। ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্ব বরাবর পাশে থেকেছেন। তাই এ দলে আসলাম। মানুষ দেখেছে আমাদের উপর কী অত্যাচার হয়েছে। তাই এলাকার মানুষও দলে দলে এদিন আমার সঙ্গে এসেছেন।”

যদিও মহানন্দবাবু বা বিজলিদেবীর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক ছিল না বলে জানান তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, “দল তো দূরের কথা, ওঁদের ঠিকমতো চিনিই না। কংগ্রেস, সিপিএমের সঙ্গে ওঁরা ঘোরাঘুরি করছিলেন বলে শুনেছি। এবার শুনলাম ফরওয়ার্ড ব্লকের সঙ্গে রয়েছে। এতেই পরিস্কার হল, রামঘাটে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের কারা মদত দিয়েছিল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন