রায়গঞ্জ সুরেন্দ্রনাথ কলেজে জয়ের পর এসএফআই সমর্থকদের উচ্ছ্বাস।—নিজস্ব চিত্র।
সপ্তাহ খানেকের টানাপড়েনের পর অবশেষে সুরেন্দ্রনাথ কলেজের ছাত্র সংসদের বোর্ড গঠন করল এসএফআই। শুক্রবার মোটের উপর শান্তিতেই এই পর্ব শেষ হল।
এই নির্বাচনে কলেজ কর্তৃপক্ষ পক্ষপাতিত্ব করেছিল বলে অভিযোগ তোলে টিএমসিপি। সেই অভিযোগের তদন্তে কলেজে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলও পাঠিয়েছিল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। সেই কমিটি রিপোর্ট দেয়, নির্বাচনে কারচুপি হয়নি। তারপরেই ছাত্র সংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তা সত্ত্বেও বাধা দেওয়ার মনোভাব নিয়েই এগোচ্ছিলেন টিএমসিপি নেতৃত্ব। কিন্তু শেষ বেলায় তারা ছাত্র সংসদ গঠন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ নয় অভিযোগ তুলে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসেন। তারপরে বিনা ভোটাভুটিতে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে এসএফআই সংসদ গঠন করে।
বোর্ড গঠনের পর এ দিন এসএফআই সমর্থকরা কলেজের বাইরে উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক প্রাণেশ সরকারের দাবি, তৃণমূল এখন রাজ্যে নানা ঘটনায় কোণঠাসা। তারা এই কলেজ নির্বাচনেও যে কারচুপির ভুয়া অভিযোগ তুলেছিল, তা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তদন্তেই প্রমাণিত।” তবে টিএমসিপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি অজয় সরকার বলেন, “কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে সংগঠনের তরফে আদালতে মামলা করা হচ্ছে।” পাশাপাশি, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়ার তদন্ত করে রিপোর্ট প্রকাশের দাবিতে কয়েক দিনের মধ্যেই জেলা জুড়ে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপাল মিশ্র বলেন, “ভবিষ্যতে ফের এই নিয়ে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হলে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ দিন কলেজে যোগ দেন অধ্যক্ষ প্রবীর রায়। মঙ্গলবার থেকে কলেজে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তারপরেই প্রবীরবাবু অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে চলে গিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, “নির্বাচিত কিছু পড়ুয়া ছাত্র সংসদ গঠন বয়কট করলেও শেষ পর্যন্ত নির্বিঘ্নেই এই প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।” তাঁর দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ভাবে কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাত্র সংসদ নির্বাচন পরিচালনার কাজ শেষ করেছেন। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মধুমিতা রায়ের শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কলেজে অস্থিরতার পরে বৃহস্পতিবার অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি।