নিহতের বাড়িতে বিধায়ক। তরুণ দেবনাথের তোলা ছবি।
দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত পঞ্চায়েত কর্মী প্রদীপ রায়ের (৩৫) পরিবারের লোকজনকে সিআইডি তদন্তের আবেদন করার পরামর্শ দিলেন রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত। মঙ্গলবার মোহিতবাবুর নেতৃত্বে উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দল রায়গঞ্জ থানার কমলাবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা নিহত প্রদীপবাবুর বাড়িতে যান। মোহিতবাবুর অভিযোগ, “পুলিশি নিষ্ক্রিয়তায় রায়গঞ্জে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের কারবার বেড়েছে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। দিনে দুপুরে দুষ্কৃতীদের গুলিতে প্রদীপবাবুকে খুন হয়ে গেলেন। খুনের ঘটনায় দুই অভিযুক্ত গ্রেফতার হলেও এখনও ছয় জন অধরা। প্রদীপবাবুর খুনের ঘটনার সঠিক তদন্ত ও সব দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের স্বার্থে সিআইডি তদন্ত হওয়া জরুরি। আমি প্রদীপবাবুর পরিবারের লোকজনকে সিআইডির সদর দফতরে আবেদনের পরামর্শ দিয়েছি।”
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডেভিড ইভান লেপচা জানান, নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, “পুলিশ সক্রিয় বলেই প্রদীপবাবুকে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি ছয় অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
প্রদীপবাবুকে খুনের ঘটনায় সমস্ত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি ও সরকারি কর্মীদের নিরাপত্তার দাবিতে এদিন রায়গঞ্জের বিডিও অফিসে বিক্ষোভ দেখায় কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সদস্যরা। সংগঠনের তরফে রায়গঞ্জের বিডিওর কাছে একটি স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রদীপবাবুকে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ধৃত প্রতিবেশি দুই ভাই চিন্ময় রায় ও চিত্ত রায়কে এদিন রায়গঞ্জের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে হাজির করায় পুলিশ। আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময়ে রায়গঞ্জ থানায় দাঁড়িয়ে ধৃতদের দাবি, “প্রদীপবাবুকে খুনের ঘটনায় আমাদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে। আমরা নির্দোষ।” সরকারি আইনজীবী নিলাদ্রী সরকার জানান, বিচারক সব্যসাচী চট্টরাজ জামিনের আবেদন নাকচ করে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
সোমবার দুপুরে স্কুটিতে চেপে বাড়ি থেকে অফিস যাওয়ার পথে বাড়ি থেকে চার কিলোমিটার দূরে খাদিমপুর এলাকায় দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন রায়গঞ্জের কমলাবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক প্রদীপবাবু। ওই ঘটনার পর প্রদীপবাবুর ভাই উত্তমবাবু প্রতিবেশী চার জন সহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ছয় জনের নামে রায়গঞ্জ থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, জমি নিয়ে প্রতিবেশিদের সঙ্গে বিবাদের জেরেই প্রদীপবাবুকে খুন করা হয়েছে বলে প্রদীপবাবুর পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে।