লণ্ঠনের আলোয় ভোট ৫০০ বুথে

লণ্ঠন আর হ্যাজাক কিনছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মীরা। কারণ, সেই আলোতেই ভোটের কাজ করতে হবে তাঁদের। কোচবিহার জেলার অন্তত শ’পাঁচেক বুথে এখনও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। সেই বুথগুলির জন্যই এমন প্রস্তুতি নিচ্ছেন কমিশনের কর্মী-আধিকারিকেরা। এর জন্য নির্দিষ্ট অর্থও বরাদ্দ করা হয়েছে।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৪ ০৫:২২
Share:

লণ্ঠন আর হ্যাজাক কিনছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মীরা। কারণ, সেই আলোতেই ভোটের কাজ করতে হবে তাঁদের। কোচবিহার জেলার অন্তত শ’পাঁচেক বুথে এখনও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। সেই বুথগুলির জন্যই এমন প্রস্তুতি নিচ্ছেন কমিশনের কর্মী-আধিকারিকেরা। এর জন্য নির্দিষ্ট অর্থও বরাদ্দ করা হয়েছে।

Advertisement

কমিশনের কর্মীরা জানাচ্ছেন, বিদ্যুতহীন ওই বুথগুলিতে ভোটের কাজে পুরোপুরি ভরসা রাখতে হচ্ছে হ্যাজাক বা লণ্ঠনের আলোর উপরেই। বাকি যে সব বুথে বিদ্যুৎ রয়েছে সেখানেও রাখা হচ্ছে বিকল্প ব্যবস্থা। সে ক্ষেত্রে ব্যাটারিচালিত চার্জারের আলো ব্যবহার করবে প্রশাসন। তবে কিছু জায়গায় অস্থায়ী ভাবে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে বিদ্যু বণ্টন সংস্থার সঙ্গে এক দফায় আলোচনা সেরেছেন কোচবিহারের জেলাশাসক মোহন গাঁধী। তিনি বলেন, “কিছু বুথে অস্থায়ী ভাবে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হবে সে ব্যাপারে আলোচনা এগিয়েছে। যে সব বুথে বিদ্যুৎ পৌঁছনো সম্ভব নয় সেখানে বিকল্প আলোর ব্যবস্থা করা হবে। সে ব্যাপারে আলাদা ভাবে টাকাও বরাদ্দ করা হয়েছে।”

কোচবিহার জেলায় রয়েছে ন’টি বিধানসভা কেন্দ্র। এর মধ্যে সাতটি, কোচবিহার উত্তর, কোচবিহার দক্ষিণ, নাটাবাড়ি, দিনহাটা, সিতাই, শীতলখুচি ও মাথাভাঙা নিয়ে তৈরি হয়েছে কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্র। তুফানগঞ্জ পড়েছে আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে। মেখলিগঞ্জ বিধানসভা এলাকা পড়েছে জলপাইগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে। জেলায় মোট বুথের সংখ্যা ২৪৬৭টি। এর মধ্যে প্রায় ৫০০টি বুথে এখনও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই বুথগুলির জন্য হ্যাজাক, লণ্ঠন, চার্জার কিনতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন।

Advertisement

কোচবিহারের সীমান্তবর্তী এলাকা গীতালদহ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দুটি বুথ, জারিধরলা ও দরিবসে এখনও পৌঁছয়নি বিদ্যুৎ। লণ্ঠনের আলোই সেখানকার মানুষের ভরসা। ওই দুটি বুথে যেতে পার হতে হয় বানিয়াদহ নদী। বাংলাদেশ লাগোয়া ওই গ্রাম দুটির বাসিন্দা খয়বর মিয়াঁ, আমিনুল হোসেনরা বলেন, “জন্মের পর থেকে আজ পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছাড়াই দিন কাটাচ্ছি। আমাদের ভোটকেন্দ্রেও একই অবস্থা। সন্ধে নাগলেই লণ্ঠনের আলোতে চলে ভোট নেওয়া। এ বারেও তাই হবে বলে শুনছি।” শীতলখুচির গোলেনাওহাটি পঞ্চায়েতের শিববাড়ি, কামারপাড়া, ঠাকুরপুর-সহ বহু জায়গায় বিদ্যুৎহীন বুথ রয়েছে।

প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, ভোটের আর মাত্র মাসখানেক বাকি। তাই আগে থেকেই সমস্ত জিনিস মজুত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “এখন তো প্রায় প্রত্যেকেই বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল। লণ্ঠন, হ্যাজাকের চাহিদাও আগের তুলনায় অনেক কম। তাই আগে থেকেই সব মজুত করা হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ীই ওই সব জিনিসপত্র কেনা হবে।” কোচবিহার ১ ব্লকের বিডিও স্বপন পাত্র বলেন, “কোনও বুথেই আলোর কোনও খামতি থাকবে না। বিকল্প ব্যবস্থাও রাখা হবে। সে ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। সেই নির্দেশ অনুসারে ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন