অসম থেকে আসা শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ সংগ্রহ করছেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। শুক্রবার শিলিগুড়িতে। —নিজস্ব চিত্র।
কুমারগ্রামের শিবিরগুলি থেকে শরণার্থীদের অসমে ফিরে যাওয়া অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার নতুন করে আরও ৫২ জন শরণার্থী অসমে ফিরে যান।
এই নিয়ে গত দু’দিনে ১৬৬ জন অসমে ফিরে গিয়েছেন বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। অসমে সেনা অভিযানের জেরে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হতেই কুমারগ্রামের নানা শিবিরে থাকা শরণার্থীরা ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। এ জন্য একটি শিবির তুলেও দিয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলা প্রসাশন। এ দিকে চ্যাংমারি শিবিরের অসমের বেতবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা শ্যামলী মুর্মু নামে এক শরণার্থী শুক্রবার এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এদিন সকালে তাঁকে কামাখ্যাগুড়ি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি সন্তানের জন্ম দেন। কুমারগ্রাম ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কৃষ্ণেন্দু ঠাকুর জানান, মা এবং সন্তান দু’জনেই সুস্থ আছেন।
শুক্রবার পর্যন্ত চারটি শিবিরে মোট শরণার্থীর সংখ্যা দাঁড়াল ১২১৫ জন। এর মধ্যে চ্যাংমারিতে ৪২০, মধ্য হলদিবাড়িতে ১২০, বালাপাড়ায় ৪৫৭ এবং পূর্ব শালবাড়ি শিবিরে ২১৮ জন শরণার্থী রয়েছেন। কুমারগ্রামের বিডিও শিলাদিত্য চক্রবর্তী জানান, শিবিরগুলির প্রত্যেক শরণার্থীর নাম ঠিকানা-সহ সমস্ত পরিচিতি খাতায় লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। যারা অসমে ফিরে যাচ্ছেন তাঁদের প্রত্যেকের কাছে বিস্তারিত জেনে নেওয়া হচ্ছে। অসম প্রশাসনের কাছে সেই রিপোর্টও পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
শরণার্থী শিবিরে রাজনৈতিক এবং জনপ্রতিনিধিদের পরিদর্শনে আসাও অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার আরএসপি ছাত্র সংগঠনের রাজ্য কমিটির সহ সম্পাদক অনির্বাণ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল এবং পশ্চিমবঙ্গ বড়ো সাহিত্য সভার সদস্যরা শিবিরগুলি পরিদর্শন করেন। তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী এ দিন কুমারগ্রামের চারটি শিবিরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে প্রতিদিন শিবিরগুলির পরিস্থিতি দেখতে কুমারগ্রামে যাচ্ছি। সরকারি ত্রাণের পাশাপাশি দলীয়ভাবে প্রতিদিন শিবিরগুলিতে ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে। রাজনীতি ভুলে মানবিক কারণে সেটা করছি। কিন্তু অনেকেই শিবির পরিদর্শনের নামে রাজনীতি করছেন। সেটা দুঃখজনক।” আজ, শনিবার বামফ্রন্টের এক পরিষদীয় দল, আদিবাসী অধিকার রাষ্ট্রীয় মঞ্চ এবং আদিবাসী বিকাশ পরিষদের রাজ্য সভাপতি বিরসা তিরকে কুমারগ্রামে শিবির পরিদর্শনে যাবেন।