পুরসভা থেকে শহরে টোটো (ব্যাটারিচালিত গাড়ি) চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল ২১০টি। অথচ দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট শহরে তার দ্বিগুণ টোটো চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
টোটোর দাপটে বালুরঘাটে যানজটের জেরে দুর্ভোগে পড়েছেন শহরবাসীও। শহরের ব্যস্ত রাস্তা বাসস্ট্যান্ড থেকে বিশ্বাসপাড়া হয়ে সাধনামোড় ও ডানলপ মোড় এলাকা গুলিতে টোটোর ভিড়ে রোজই নাকাল হচ্ছেন পথচারীরা। অন্য যান চলাচলেও সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি পুর-প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন অটোচালকেরাও। তাঁদের অভিযোগ, “কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও হেলদোল দেখা যাচ্ছে না। তাই দাপটেই চলছে টোটো।”
বাসিন্দাদের অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে টোটো ট্রাফিক আইন মেনে না চলায় দুর্ঘটনা বাড়ছে। কিছুদিন আগে শহরের রঘুনাথপুর এলাকায় পূর্ত দফতরের সদর রাস্তায় একটি যাত্রীবাহী টোটো পার্কিং করতে গেলে একটি পিকআপ ভ্যান ধাক্কা মারে। এক মহিলা গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তাছাড়া নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একাধিক ঘটনায় টোটো উল্টে যাত্রীরা জখম হয়েছেন। কোনও ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত টোটোর বিরুদ্ধে পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে ক্ষোভ বাসিন্দাদের।
পুরসভা সূত্রে খবর, কিছু ব্যবসায়ী থেকে অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মী একাধিক টোটো রিকশা কিনে একটি নিজে চালাচ্ছেন, বাকি টোটোগুলি ভাড়ায় খাটাচ্ছেন। ফলে টোটোকে ধরে বেকার যুবকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য পুরসভা অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে নমনীয়তা দেখালেও বাস্তবে ব্যবসাভিত্তিক প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। একাংশ টোটোর ক্ষেত্রে ওই অভিযোগ পুরসভার কাছেও পৌঁছেছে। প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, হাইকোর্টের আদেশে এতদিন পুরসভা বা পঞ্চায়েতের উপরই টোটোর অনুমতি দেওয়ার ভার ছিল। আইন সংশোধন করে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের পরিবহন দফতরের হাতেই টোটোর দায়িত্বভার তুলে দিয়েছে।
এমতাবস্থায়, বাসিন্দারা চাইছেন পুরসভা-প্রশাসন নিজেদের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে টোটো নিয়ন্ত্রণ করুক। তাঁদের আশা, অননুমোদিত ও অনিয়ন্ত্রিত টোটো চলাচলের উপরে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ লাগু হওয়ায় ব্যাপকহারে টোটো চলাচল বন্ধ হবে। বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারপার্সন চয়নিকা লাহা বলেন, “অননুমোদিত টোটোর বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসনকে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।” তবে বালুরঘাট থানার আইসি বিপুল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পুরসভা থেকে এ ধরনের কোনও নির্দেশ মেলেনি। পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”