ষোলো ঘণ্টা অপেক্ষার পরে নাবালিকার ডাক্তারি পরীক্ষা

ধর্ষণের চেষ্টার মামলায় এক নাবালিকাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে গিয়েও অপেক্ষা করতে হল ১৬ ঘণ্টা। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। ইংরেজবাজার থানার পুলিশ শনিবার রাত ৮ টায় ওই নাবালিকাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৪ ০২:৩৮
Share:

ধর্ষণের চেষ্টার মামলায় এক নাবালিকাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে গিয়েও অপেক্ষা করতে হল ১৬ ঘণ্টা। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

ইংরেজবাজার থানার পুলিশ শনিবার রাত ৮ টায় ওই নাবালিকাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠায়। মেডিক্যাল পরীক্ষা করা দূরে কথা, সারা রাত ওই নাবালিকা ও তার পরিবারকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বসিয়ে রাখা হয় বলে অভিযোগ। শেষে রবিবার দুপুর ১২টা নাগাদ নাবালিকার মেডিক্যাল টেস্ট করা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, গোটা ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে হাসপাতাল চত্বর থেকেই। সেখানে এক আত্মীয়কে দেখতে গিয়েছিলেন মালদহের আদালতের সরকারি আইনজীবী তীর্থ দাস। সে সময়ে ওই নাবালিকার বাবা-মা’কে কাঁদতে দেখে তিনি এগিয়ে যান। তীর্থবাবু তখন হাসপাতালের সুপারকে টেলিফোন করে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু রবিবার ফের সকালে গিয়ে তেখেন, ওই নাবালিকাকে নিয়ে তার পরিবার তখনও বসে রয়েছে। তীর্থবাবু জানান, তিনি তখন বাধ্য হয়ে জেলার মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীকে ফোন করেন। তিনি বলেন, “মন্ত্রী আমার কথা শুনে হাসপাতালে ফোন করলে সকলে নড়েচড়ে বসে।”

হাসপাতাল সূত্রের খবর, মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৬ জন মহিলা চিকিৎসক আছেন। গত শনিবার যে চিকিৎসকের ডিউটি ছিল, তিনি ছুটিতে রয়েছেন। তাঁর পরিবর্তে যে মহিলা চিকিৎসককে ডিউটি দেওয়া হয়েছিল, তিনি না আসায় সমস্যা তৈরি হয় বলে মেডিক্যাল কলেজের কর্মীরা জানিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ ইংরেজবাজার থানার এলাকায় ১৯ বছরের এক যুবক প্রতিবেশী ৭ বছরের এক শিশুকে নিজের বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। নাবালিকার চিৎকারে আশেপাশের বাসিন্দারা ছুটে এসে আশিস শেখ নামে ওই যুবককে ধরে ফেলে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ইংরেজবাজার থানার আইসি দিলীপ কর্মকার জানান, অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পর রাত ৮টা নাগাদ নাবালিকাকে টেস্টের পর হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু রাতভর বসিয়ে রাখার পর এ দিন দুপুরে টেস্ট করানো হয়েছে।

Advertisement

মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুবাবুু বলেন, “এক নাবালিকাকে এ ভাবে ১৬ ঘন্টা বসিয়ে রাখার ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। পুলিশ কোন মহিলাকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য পাঠালে সঙ্গে সঙ্গে তার পরীক্ষা করাতে হবে। তা কেন করা হয়নি, তা খতিয়ে দেখতে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষকে তদন্ত করে দেখতে বলেছি।” তিনি জানান, রিপোর্টে যাঁদের গাফিলতি ধরা পড়বে, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাসপাতালের সুপার মহম্মদ আবদুর রসিদ জানান, কেন ওই নাবালিকার মেডিক্যাল পরীক্ষা করা যায়নি, তা তিনি কলেজের অধ্যক্ষকে জানাবেন। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “বর্তমানে আমি জেলার বাইরে আছি। মালদহে ফিরে তদন্ত করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন