সিআরপিএফ-এ চাকরির পরীক্ষা দিতে মালদহ থেকে শিলিগুড়ি গিয়েছিল তিন যুবক। ফেরার পথে তারা চলন্ত ট্রেনের সংরক্ষিত কামরায় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। ছাত্রীটির দাবি, তখন তিনি রেলপুলিশ বা কোনও রেলকর্মীকে পাশে পাননি। তবে তিন যুবককে সে দিন সন্ধ্যাতেই রেলপুলিশ মালদহে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু জামিনযোগ্য ধারা দেওয়ায় সোমবার আদালতে জামিন পেয়ে যায় তিন জনই।
শিলিগুড়িতে একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়াশোনা করেন ওই তরুণী। দোলের ছুটিতে মালদহের ইংরেজবাজারের বাড়িতে ফেরার জন্য এনজেপি থেকে গুয়াহাটি-বেঙ্গালুরু এক্সপ্রেসের স্লিপার ক্লাসে উঠেছিলেন। ওই স্টেশন থেকেই একই ট্রেনের একই কামরায় ওঠে সেই তিন যুবকও। ডালখোলা পার হওয়ার পর থেকেই তারা ছাত্রীটিকে নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে বলে দাবি। মোবাইলে তাঁর ছবি তোলার চেষ্টা হয় বলেও অভিযোগ। ওই ছাত্রী বলেন, “কামরায় রেল পুলিশকে দেখিনি। টিকিট পরীক্ষককেও দেখতে পাইনি। ওরা যখন উত্ত্যক্ত করছিল, অসহায় লাগছিল। সুযোগ মতো উঠে বাড়িতে ফোন করে সব জানাই।” তিনি জানান, কামরার অন্য যাত্রীরাও তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি।
মেয়ের ফোন পেয়ে ওই ছাত্রীর মা মালদহ স্টেশনের জিআরপি থানায় যোগাযোগ করেন। ট্রেনটি সন্ধ্যায় মালদহ টাউন স্টেশনে ঢুকতেই জিআরপি ওই তিন যুবককে আটক করে। রাতেই ছাত্রীটি তিন জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন। ধৃতদের বাড়ি মালদহের রতুয়ার চাঁদমুনি গ্রামে। তাদের বিরুদ্ধে ৩৫৪ (এ) ধারায় মামলা রুজু হয়। সোমবার আদালতে জামিন পায় তারা। ঘটনাটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি কেউই।
কেন জামিনযোগ্য ধারা দেওয়া হল? জিআরপি-র মালদহ থানার ভারপ্রাপ্ত আইসি তন্ময় রায় বলেন, “ওই ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতেই মামলা হয়। ওই যুবকদের বিরুদ্ধে কুৎসিত অঙ্গভঙ্গি করার অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রী।” ওই কামরায় কেন রেল পুলিশ ছিল না, সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ট্রেনে নিরাপত্তা রক্ষীরা থাকেন। ওই কামরায় কেন টহল হয়নি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” মালদহের ডিআরএম রাজেশ আর্গল বলেন, “টিটিই সে সময় কোথায় ছিলেন, তা খোঁজ নিয়ে দেখছি। নিরাপত্তা রক্ষী ছিল না বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”