সভায় সূর্যকান্ত মিশ্র। নিজস্ব চিত্র।
দীর্ঘ বক্তব্য রাখতে তাঁর ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু তখনও সভাস্থলে এসে পৌঁছতে পারেননি দলের সাংসদ তথা শেষ বক্তা মহম্মদ সেলিম। দিল্লি থেকে তিনি শুক্রবাই রওনা হয়েছেন। বেলা চারটে নাগাদ জানা গেল ট্রেন দেরিতে চলায় পৌঁছতে বেশ কিছুক্ষণ লাগবে। কিসানগঞ্জ থেকে তিনি সরাসরি সভাস্থলে আসছেন। তাই শেষ বক্তা মহম্মদ সেলিম না আসা পর্যন্ত তাঁকেই অর্থাৎ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকাম্ত মিশ্রকে বক্তব্য চালিয়ে যেতে অনুরোধ করা হয়েছে। শনিবার নকশালবাড়ির আদিবাসী মাঠে শহিদ বীরসা মুণ্ডা মুক্ত মঞ্চে জনসভায় ওই অন্তত ৪৫ মিনিট বক্তৃতা করার পরেও পৌঁছননি মহম্মদ সেলিম পৌঁছয়নি। তার আসতে তখনও সময় লাগবে বলে খবর পৌঁছয়। তা জানিয়েই বক্তব্য ইতি টানেন সূর্যকান্তবাবু।
কেন না ইতিমধ্যেই সভাস্থল থেকে কর্মী-সমর্থকেরা উঠতে শুরু করেছেন। নেতা-মন্ত্রীদের দীর্ঘ বক্তব্য শুনতে যে বাসিন্দারা এখন পছন্দ করেন না তা বিলক্ষণ জানেন তিনি। তাই যতটা সময় ধরে বক্তব্য রেখেছেন তার পরও তাঁকে চালিয়ে যেতে হলে শেষ পর্যন্ত মাঠে কেউ থাকবেন না জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন বিরোধী দলনেতা।
এ দিন সভার দুই মূল বক্তা সূর্যকান্ত মিশ্র এবং মহম্মদ সেলিম। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য, জীবেশ সরকাররা বক্তৃতা করার পরেই মূল বক্তা সূর্যকান্ত মিশ্র বক্তব্য রাখতে ওঠেন। তখন সভাস্থলে প্রায় হাজার পাঁচেক লোক। বেলা পৌনে চারটের কিছু আগেই বক্তৃতা শুরু করেন সূর্যকান্তবাবু। কিছুক্ষণ পর তাঁকে জানানো হয় শেষ বক্তা সেলিম না পৌঁছন পর্যন্ত তিনি যেন বক্তব্য চালিয়ে যান। তা জানার পর সূর্যকান্তবাবু বলেন, “মহম্মদ সেলিম না-আসা পর্যন্ত আমাকে বক্তব্য চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে। তাই আমাকে বলে যেতে হবে। রাজ্যে তৃণমূল সরকার এবং কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের মধ্যে নীতিগত পার্থক্য নেই বলে দুই পক্ষের সমালোচনা করেন। রাজ্য এবং দেশে ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র, মেহনতি মানুষের জীবন জীবীকা বিপন্ন।”
কখনও রাজ্য এবং কখনও কেন্দ্রের সরকারকে দুষে তিনি প্রায় ৪৫ মিনিট বক্তব্য রাখেন। তার মধ্যেই বক্তব্য দীর্ঘ হচ্ছে দেখে সভা ছেড়ে লোকে উঠে যেতে শুরু করেছে। এর পরেই সম্মেলনও শুরু হবে। অথচ মহম্মদ সেলিম তখনও পৌঁছয়নি। সেলিমের আসতে দেরি হবে তা এর পর বক্তব্যরত সূর্যকান্তবাবুকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
বক্তব্য শেষ করতে হবে বুঝতে পেরে সূর্যকান্তবাবু বলেন, “মহম্মদ সেলিমের আসতে দেরি হবে বলে খবর পেলাম। উনি যখন এসে পৌঁছবেন সেই পর্যন্ত বক্তব্য দীর্ঘায়িত করলে যে লোকেরা এখন রয়েছেন তারা কেউই থাকবেন না। তাই বক্তব্য শেষ করছি।” এর পর কাছেই রাস্তার উল্টো দিকে নকশালবাড়ি বালিকা বিদ্যালয়ে সিপিএমের ২১ তম জেলা সম্মলনে যোগ দিতে যান তাঁরা। সম্মেলন শুরুর কিছুক্ষণ পরেই পৌঁঁছন মহম্মদ সেলিম পৌঁছন।