রায়গঞ্জ সুরেন্দ্রনাথ কলেজে নির্বাচন

সংসদ গঠনের দাবি, অবস্থানে এসএফআই

সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোট পেয়েও ছাত্র সংসদ গঠন করতে না পেরে রায়গঞ্জের সুরেন্দ্রনাথ কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে মোট ২০ জনকে গভীর রাত পর্যন্ত ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল এসএফআই। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এক শিক্ষিকা ও এক মহিলা শিক্ষাকর্মী। এই কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয় ২৮ জানুয়ারি। মোট ৪২টি আসনের মধ্যে ২৩টি আসনে জয়ী হয়ে ছাত্র সংসদ পুনর্দখল করে এসএফআই। টিএমসিপির দখলে যায় ১৯টি আসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৪৮
Share:

সুরেন্দ্রনাথ কলেজে বিক্ষোভ এসএফআইয়ের।—নিজস্ব চিত্র।

সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোট পেয়েও ছাত্র সংসদ গঠন করতে না পেরে রায়গঞ্জের সুরেন্দ্রনাথ কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে মোট ২০ জনকে গভীর রাত পর্যন্ত ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল এসএফআই। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এক শিক্ষিকা ও এক মহিলা শিক্ষাকর্মী।

Advertisement

এই কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয় ২৮ জানুয়ারি। মোট ৪২টি আসনের মধ্যে ২৩টি আসনে জয়ী হয়ে ছাত্র সংসদ পুনর্দখল করে এসএফআই। টিএমসিপির দখলে যায় ১৯টি আসন। এ দিন সেই ছাত্র সংসদ গঠনের দিন নির্ধারিত ছিল। কিন্তু তার আগেই টিএমসিপি গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে পক্ষপাতিত্ত্বের অভিযোগ দায়ের করে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ছাত্র সংসদের বোর্ড গঠনের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ এসএফআইয়ের নির্বাচিত সদস্যরা কলেজে গিয়ে স্থগিতাদেশের কথা জানতে পেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। কলেজের অধ্যক্ষ প্রবীর রায়ের ঘরের সামনে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন এসএফআইয়ের নির্বাচিত ২৩ সদস্য। প্রবীরবাবু এদিন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে চলে গিয়েছেন।

এই পরিস্থিতিতে বিকেল ৪টা নাগাদ কলেজ নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিচালনার কাজে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ওঠা পক্ষপাতিত্ত্বের অভিযোগের তদন্ত করতে কলেজে পৌঁছয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। এসএফআইয়ের বিক্ষোভের মুখে পড়ে তাঁরা জানিয়ে দেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা না বলে তাঁদের পক্ষে বোর্ড গঠনের দিন ঘোষণা করা সম্ভব নয়। বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত প্রতিনিধিদলকে কলেজে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখায় এসএফআই। পুলিশের হস্তক্ষেপে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ওই প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা অধ্যক্ষ প্রবীরবাবুর বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। সেই সময়ে কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন এসএফআই সদস্যেরা। তাঁদের দাবি ছিল, এ দিনই ছাত্র সংসদ গঠনের দিন ঘোষণা করতে হবে।

Advertisement

অধ্যক্ষ প্রবীরবাবু বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দল বাড়িতে এসে আমার সঙ্গে কথা বলে ছাত্র সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিচালনার সমস্ত রিপোর্ট নিয়েছেন। উপাচার্যের কাছে সেই রিপোর্ট জমা পড়ার পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্র সংসদের বোর্ড গঠনের দিন ঘোষণা করবেন।” তাঁর কথায়, “আশা করছি, বুধবারের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বোর্ড গঠনের দিন ঘোষণা করবেন।” এসএফআইয়ের নির্বাচিত সদস্যদের কলেজ থেকে অবস্থান বিক্ষোভ তুলে নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দলের প্রধান চঞ্চল চৌধুরী জানান, উপাচার্য তদন্ত রিপোর্ট খতিয়ে দেখে শীঘ্রই বোর্ড গঠনের দিন ঘোষণা করবেন।

এসএফআইয়ের উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক প্রাণেশ সরকারের অভিযোগ, “টিএমসিপির নির্দেশে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্তের নামে বোর্ড গঠন ভেস্তে দিতে চেষ্টা করছে। প্রতিবাদে আমাদের আন্দোলন চলবে।” আজ, বুধবার অবরোধের হুমকি দিয়েছে তাঁরা। টিএমসিপির জেলা সভাপতি অজয় সরকারের পাল্টা অভিযোগ, কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাত্র সংসদ নির্বাচনের গণনা প্রক্রিয়া চলাকালীন টিএমসিপি প্রার্থীদের গণনাকেন্দ্রের বাইরে বার করে এসএফআইকে বেআইনিভাবে ৬টি আসনে জয়ী করেছেন। অধ্যক্ষ প্রবীরবাবুর অবশ্য দাবি, সরকারি নিয়ম মেনে স্বচ্ছভাবেই ছাত্র সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন