শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে জেলা জুড়ে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে পুলিশ সুপারের দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করল কোচবিহার জেলা বামফ্রন্ট। শনিবার বেলা ১১ টা থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত সাগরদিঘি চত্বর লাগোয়া পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে অবস্থান চলে। পরে জেলাশাসক এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ জানান বাম প্রতিনিধি দল। সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে এ দিনও। কোচবিহার কোতোয়ালি থানার টাকাগছে বিজেপির দুই সমর্থককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূলের কর্মীরাই হামলা চালিয়েছে বলে দলের তরফে অভিযোগ জানানো হয়েছে।
জেলার তুফানগঞ্জ, নাটাবাড়ি, শীতলখুচি, দিনহাটার মত কিছু এলাকায় শাসক দলের সন্ত্রাসের অভিযোগ বেশি বলে বামেদের তরফে দাবি করা হয়েছে। বামেদের দাবি, ইতিমধ্যে জেলায় শতাধিক বাম কর্মী সমর্থককে মারধর করা হয়েছে। অন্তত ১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়, ৫০টিরও বেশি বাড়ি ভাঙচুর হয়। অভিযোগের ব্যবস্থা না হলে ভবিষ্যতে পুলিশ সুপারের দফতরের সামনে অনশনে বসারও হুমকি দিয়েছে বামেরা।
জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় গোলমাল হচ্ছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। সেখানে টহলদারি বাড়াতে পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি।” জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বাম প্রতিনিধি দলকে অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
জেলা জুড়ে সন্ত্রাসের অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল বামেরা। বামেদের পোলিং এজেন্টরাই হামলার মূল নিশানা হচ্ছেন বলে অভিযোগ তাদের অভিযোগ। বাড়ি ঘর ভাঙচুরের পাশাপাশি এজেন্টদের দোকানে তালা ঝোলানো, কিছু এলাকায় আবার ফসল কাটতে না দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রশাসনকে এ বিষয়ে অভিযোগ জানানো হলেও, কোনও ফল মিলছে না বলে অভিযোগ করেছেন ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ। এবং সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তমসের আলির অভিযোগ, “ভোটের আগের রাত থেকে তৃণমূল জেলা জুড়ে লাগামহীন সন্ত্রাস চালাচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসন শুরুতে আমাদের অভিযোগ গুরুত্ব না দেওয়ায় সন্ত্রাসের ঘটনা বেড়েছে।” অন্যদিকে। বিজেপির জেলা সম্পাদক নিখিল দে’র অভিযোগ, “তৃণমূল সমথর্র্করা দলের দু’জন সমর্থককে মারধর করে তাদের কাছ থেকে সবমিলিয়ে বারশো টাকাও লুঠ করে। পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে।” এ দিন বামেদের ওই অবস্থান বিক্ষোভে কোচবিহার কেন্দ্রের ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী দীপক রায়, আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রের আরএসপি প্রার্থী মনোহর তিরকেও উপস্থিত ছিলেন।
তৃণমূল অবশ্য সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে। দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “ভোটের পর বুথ দখল, ছাপ্পার মত নানা অভিযোগ বামেদের তরফে তোলা হয়েছিল। নির্বাচন কমিশন সবকিছু খতিয়ে দেখে সেসব নস্যাৎ করে দিয়েছে। তাই এখন ওরা নতুন নাটক শুরু করছেন। জেলায় শান্তিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।”