প্যাকেট ছড়িয়ে, সাউন্ড বক্স বাজিয়ে চলে পিকনিক।
বাইরে বক্স বাজানো নিষেধ বলে ছবি-সহ হোর্ডিং টাঙানো রয়েছে। অথচ পিকনিক স্পটের ভেতরে ঠিক অন্য চিত্র। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল লাগোয়া বিভিন্ন পিকনিক স্পটগুলিতে কার্যত অনিয়মিই নিয়ম হয়ে উঠেছে। বনকর্মীদের নজরদারি না থাকায় জঙ্গলের ভিতরে অবাধে চলছে মদ্যপান, আবর্জনা ফেলা থেকে বিকট আওয়াজে মাইক বাজিয়ে পিকনিক। বনকর্মীদের নজরদারি না থাকায় পিকনিক স্পটের দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিও বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে নারাজ।
উত্তর পোরো থেকে দক্ষিণ পোরো, সিকিয়া ঝোরা সর্বত্রই একই চিত্র। ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের কাছেই বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল লাগোয়া এই পিকনিক স্পটগুলিতে নিয়মিত আসে হাতি, বিভিন্ন হরিণ। পিকনিক করতে আসা বিভিন্ন দলগুলির ফেলে যাওয়ার আবর্জনা জঙ্গল থেকে সংগ্রহ করে তা অন্যত্র ফেলা হয় বলে দাবি করেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। বাস্তবে দেখা গেল নদী ও জঙ্গলে থার্মোকলের থালা প্লাস্টিক ও মদের বোতল পড়ে রয়েছে। রাজ্যের মুখ্য বনপাল বন্যপ্রাণ প্রদীপ শুক্লা বলেন, ‘‘জঙ্গলে মাইক বাজানো যায় না। খোজঁ নেব।’’
এ নিয়ে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা উজ্জ্বল ঘোষকে বার বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি।
হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র অনিমেষ বসু জানান, যেখানে জঙ্গলে সাউন্ড বক্স বাজানোয় নিষধ রয়েছে, সেখানে নিয়ম মেনে চলা উচিত। বিষয়টির উপর বনদফতরের নজরাদরি দরকার।
আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের চেয়ারম্যান অমল দত্ত বলেন, “বনভোজনের নামে যে ভাবে জঙ্গলের শান্ত পরিবেশে সাউন্ডবক্স বাজানো হচ্ছে তাতে শব্দ দূষণ হচ্ছে। কী ভাবে এই সব এলাকায় পিকনিকের দলগুলি সাউন্ড সিস্টেম নিয়ে ঢুকছে? এ বিষয়ে বনাধিকারিকেরা দায় এড়াতে
পারেন না।’’
রবিবার উত্তর পোরো পিকনিক স্পটে গিয়ে দেখা গেল নদীতে থার্মোকলের থালা পড়ে, চার দিকে খাবারের প্যাকেট ছড়িয়ে রয়েছে। বড় বড় বক্স লাগিয়ে উচ্চস্বরে চলছে নাচ-গান। নাম প্রাকাশে অনিচ্ছুক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর এক সদস্য জানান, সন্ধে নামলেই হাতি আসে। আমার আওয়াজ কমাতে বললেও কেউ শোনেন না। সিকিয়া ঝোরা পিকনিক স্পটের মহিলারা বলেন, ‘‘মাইক বাজানোয় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে কেউ মানেন না। মানা করলে কেউ এখানে পিকনিক করতে আসবেন না। তাই আমরাও বেশি জোর দিই না।’’