এ বছর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এমবিবিএস পাঠ্যক্রমে ভর্তির ক্ষেত্রে এমসিআই ১৫০ আসনের অনুমোদন দিলেও সেই পরিকাঠামো রয়েছে কি না তা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত কলেজ কর্তৃপক্ষ আগামী সোমবার কলেজ কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। শনিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার প্রতিনিধি দলের দুই দিনের পরিদর্শন শেষ হয়েছে।
কলেজেরই একটি সূত্র জানিয়েছে, একশো আসনের পরিকাঠামো যথাযথ রয়েছে কি না আপাতত তা খতিয়ে দেখতে এসেছিলেন এমসিআই এর দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল। পরিকাঠামো যথাযথ রয়েছে বলে প্রতিনিধি দলের কাছে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ তথ্য দিয়ে দাবি করেছেন। কিন্তু পুজোর পর ১৫০ আসনের পরিকাঠামো ব্যবস্থা নিয়ে ফের এমসিআই-এর পরিদর্শন হওয়ার কথা। মূল পরিকাঠামোর ঘাটতি থাকায় সমস্যা হবে তখনই। পরিস্থিতি কী ভাবে সামাল দেওয়া যায় মূলত তা নিয়েই সোমবার বৈঠক ডাকা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ সমীর ঘোষ রায় বলেন, “কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক ডাকা হয়েছে। বিষয়টি কলেজের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার।”
কলেজেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এমসিআই-এর পরিদর্শক দল আসার বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানতে পারেন। এর পরেই ছুটিতে থাকা কলেজের চিকিৎসক এবং অস্থায়ী ভাবে যাদের অন্যত্র বদলি করা হয়েছে তাঁদের কলেজে ফেরাতে তৎপর হন তাঁরা। প্রসূতি বিভাগের দু’জন চিকিৎসক, প্যাথলজির এক জন এবং অন্য বিভাগের অপর একজন চিকিৎসককে বিমানে কলকাতা থেকে তড়িঘড়ি শিলিগুড়িতে আসতে বলা হয়। একশো আসনের অনুমোদন পেতে এমসিআই-এর নিয়ম অনুসারে কলেজে অ্যাসোসিয়েট এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর অন্তত ১৩৮ জন দরকার। এমন চিকিৎসক ১৬২ জন রয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ প্রতিনিধিদের জানিয়েছেন। অধ্যাপক হিসাবে অন্তত ২২ জন থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রেও ২৭ জন রয়েছেন বলে দাবি করেছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
তবে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট অথবা পাঁচ বছরের বেশি গবেষণা করছেন এরকম সিনিয়ার এবং জুনিয়র আবাসিক চিকিৎসক ন্যুনতম ১০৪ জন থাকা দরকার। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রয়েছেন ১০১ জন। অর্থাৎ প্রয়োজনীয় সংখ্যার চেয়ে ২.৮৮ শতাংশ কম। অ্যানাটমি, কমিউনিটি মেডিসিন এবং মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে পর্যাপ্ত জায়গার অভাব রয়েছে। এক সময় যেখানে ডেন্টাল কলেজ ছিল সেই জায়গায় অ্যানাটমি, মাইক্রোবায়োলজি এবং কমিউনিটি মেডিসিনের অতিরিক্ত পরিকাঠামো দেখান হয়েছে। লাইব্রেরি, ল্যাবরেটরির মতো অন্যান্য পরিকাঠামো এবং সরঞ্জাম যথাযথ রয়েছে বলেও দাবি করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে দেড়শো আসনের অনুমোদনের ক্ষেত্রে এই পরিকাঠামো পর্যাপ্ত নয় বলেই মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। নানা ক্ষেত্রের ঘাটতি মেটাতে কী করণীয় সেই বিষয়টিই এখন গুরুত্বপূর্ণ।