জন্মের হার হ্রাস পাওয়ায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কম এ বার, বলছে পর্যদ

কয়েক বছর ধরে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যায় ওঠাপড়া লক্ষ করা যাচ্ছে। আজ, মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক এবং মাদ্রাসা পরীক্ষা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৫০
Share:

পরীক্ষাকেন্দ্রে ছাত্রীরা।— ফাইল চিত্র।

কয়েক বছর ধরে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যায় ওঠাপড়া লক্ষ করা যাচ্ছে। আজ, মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক এবং মাদ্রাসা পরীক্ষা। তার আগে, সোমবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদ জানায়, গত বছরের তুলনায় এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৮ হাজার কম। তবে গত বছরের মতো এ বারেও পরীক্ষার্থিনীর সংখ্যা বেশি।

Advertisement

প্রথম দিন মাধ্যমিকে বাংলা-সহ সব প্রথম ভাষার পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। এ বছর মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ লক্ষ ৬৪ হাজার ৯৮০। গত বছর ছিল ১০ লক্ষ ৮৩ হাজার ৩৮৮। এর আগে, ২০১৭ সালে দেখা গিয়েছিল, ২০১৬-র তুলনায় প্রায় ৮২ হাজার কম পড়ুয়া পরীক্ষা দিচ্ছে। এ বছর আবার পরীক্ষার্থী কমে গেল কেন?

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে জানান, জন্মহার হ্রাস পাওয়ায় এবং মাধ্যমিকে অকৃতকার্য হওয়ার সংখ্যা কমার ফলে পরীক্ষার্থী কমছে। তিনি বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর ধরে জন্মহার কমছে। ‘নেগেটিভ বার্থ রেট’ চলছে বেশ কিছু দিন ধরে। ফলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির হারও কম। কয়েক বছর ধরে পাশের হারও বেশি। সব মিলিয়ে এ বছর পরীক্ষার্থী কমেছে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: মাধ্যমিকে নকল রুখতে পরীক্ষাকেন্দ্রের জানলায় বসানো হয়েছে জাল!

স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের বক্তব্য, ২০১১ সালের জনগণনায় দেখা গিয়েছিল, রাজ্যে ২০০১-এর তুলনায় জন্মহার কমেছে। তবে সেটা জন্মহারের ‘নেগেটিভিটি’ বা নিম্নমুখিতা বোঝায় না। কয়েক বছর ধরেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ছাত্রের তুলনায় ছাত্রীর সংখ্যা বেশি। এ বারের মাধ্যমিকেও তা-ই। এ বছর পরীক্ষার্থিনীর সংখ্যা ছাত্রের তুলনায় প্রায় এক লক্ষ বেশি। সেই হিসেবে পরীক্ষার্থিনী বৃদ্ধির হার ১৩ শতাংশের কিছু বেশি।

প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে বারবার অভিযোগ ওঠায় এ বার নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে। প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে একাধিক সরকারি কর্মী থাকবেন। গত বছরের তুলনায় প্রধান পরীক্ষকের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৫০০। কল্যাণময়বাবু জানান, পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষার্থী ছাড়া কারও হাতে প্রশ্নপত্র থাকবে না। পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র পৌঁছবে সকাল সাড়ে ১০টায়। ভেনু ইনচার্জ, ভেনু সুপারভাইজার ও অ্যাডিশনাল ভেনু সুপারভাইজার সিল করা প্রশ্নপত্র পরীক্ষার হলে নজরদারের কাছে পৌঁছে দেবেন। ১১টা ৪০ মিনিটে পরীক্ষার্থীদের সামনে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা হবে। প্রশ্নপত্র বিলি করা হবে ১১টা ৪৫ মিনিটে। ১১টা ৫০ মিনিটে দেওয়া হবে খাতা। ১২টায় পরীক্ষা শুরু। ‘‘প্রতিটি প্যাকেটে থাকবে ১০টি প্রশ্নপত্র। সব পরীক্ষার্থীকে দেওয়ার পরে ভেনু ইনচার্জ বাড়তি প্রশ্নপত্র সিল করে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিজের লকারে চাবি দিয়ে রাখবেন,’’ বলেন কল্যাণময়বাবু।

পর্ষদ-সভাপতি জানান, পরীক্ষার হলে অনেক দিন ধরেই শিক্ষক ও পরীক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ। এ বার এই নিয়ম কঠোরতর হচ্ছে। শিক্ষকদের মোবাইল সুইচ অফ করে প্রধান শিক্ষকের লকারে রাখতে হবে। লকারের চাবি থাকবে ভেনু ইনচার্জের হাতে। সভাপতি বলেন, ‘‘সব থেকে ভাল হয়, শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীরা যদি স্কুল ফোনটাই না-আনেন। ফোন নিয়ে কোনও শিক্ষক ধরা পড়লে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

পরীক্ষার্থীরা শুধু অ্যানালগ ঘড়িই ব্যবহার করতে পারবে। কল্যাণময়বাবু জানান, উত্তরপত্র রেখে লেখার জন্য বোর্ড ব্যবহার করলে সেটি স্বচ্ছ হতে হবে। অ্যাডমিট কার্ড হারালে অবিলম্বে থানায় জেনারেল ডায়েরি করতে হবে। মাধ্যমিক চলবে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

হাই মাদ্রাসা, আলিম, ফাজিল পরীক্ষাও শুরু হচ্ছে আজ। ‘‘১৭৫টি কেন্দ্রে ৭০ হাজার পড়ুয়া পরীক্ষা দেবে। পরীক্ষা চলবে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত,’’ বলেন মাদ্রাসা পর্ষদের সভাপতি আবু তাহের কামরুদ্দিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন